ব্যাংক ঋণ না নিয়ে পুঁজিবাজার থেকে নেওয়া উচিৎ: পরিকল্পনামন্ত্রী
প্রকাশিত : ১৯:৫৫, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ‘শিল্পকারখানার জন্য ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়াকে আমি নিরুৎসাহিত করি। চীনে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে শিল্পকারখানা করার নজির কম। অর্থায়নের উৎস হিসেবে পুঁজিবাজার আদর্শ বিকল্প হতে পারে।’
বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে একথা বলেন তিনি।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘এখানে যে অনিয়মগুলো হচ্ছে সেগুলো বন্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকের শক্তিশালী ভূমিকা নেওয়া উচিত। তবে খেলাপি ঋণের পরিমাণ এখনো সহনীয় পর্যায়ে আছে। ফলে অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না।’
তিনি বলেন, ‘যারা দেশ থেকে টাকা পাচার করে বিদেশে ব্যবসা করেন, তারা যখন বুঝবেন দেশে ব্যবসা করাই লাভজনক, তখন আর বিদেশে পাচার করবেন না।’
শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় কিছু সমস্যা রয়েছে। এ শিক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ অর্জন করা সম্ভব নয়। এজন্য শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে।’
তিনি বলেন, চাহিদা ও প্রয়োজন মেনে জ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর এবং হাতে-কলমে শিক্ষা ব্যবস্থার প্রবর্তন করতে হবে। বর্তমানের প্রয়োজনের সঙ্গে আগামীর প্রয়োজন মাথায় থেকে শিক্ষা ব্যবস্থাকে সাজাতে হবে।
২০১৭ সালে দেশে সর্বোচ্চ কর্মসংস্থান হয়েছে দাবি করে মুস্তফা কামাল বলেন, ‘গত বছর দেশে ৩৭ লাখ কর্মসংস্থান হয়েছে। আমি তথ্য-প্রমাণ ছাড়া কথা বলি না। তথ্য অনুযায়ী এর মধ্যে দেশে কর্মসংস্থান হয়েছে ১৩ লাখ, আনপেইড থেকে পেইড (বিনা বেতন থেকে বেতনভুক্ত) হয়েছে ১৪ লাখ এবং বিদেশে ১০ লাখ ৩০ হাজার বিদেশে কর্মসংস্থান হয়েছে।’
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে অনেকে বলেন, আয় বৈষম্য বেশি, অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি হচ্ছে না। কিন্তু ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরামের মতে, বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘অনেক সময় বিদেশিরাও আমাদের হেয় করতো। সম্প্রতি বিশ্ব ব্যাংক আমাদের মধ্যম আয়ের দেশ ঘোষণা করেছে। এর আগে কোনো দেশই উন্নয়নের তিন সূচকের শতভাগ পূরণ করে মধ্য আয়ের দেশ হতে পারে নি, কিন্তু আমরা পেরেছি।’
মন্ত্রী জানান, মধ্য আয়ের দেশ হওয়ার জন্য জিএনআই সূচকে দরকার একহাজার ২৩০ পয়েন্ট, সেখানে বাংলাদেশের আছে একহাজার ২৭৩ পয়েন্ট। মানব উন্নয়ন সূচকে দরকার ৬৬ পয়েন্ট, সেখানে আছে ৭২ পয়েন্ট; এবং অর্থনৈতিক ঝুঁকির সূচকে ৩২ পয়েন্টের নিচে থাকতে হয়, যেখানে বাংলাদেশের আছে ২৪ দশমিক ৮ পয়েন্ট।
এসময় রাজস্ব আহরণ বাড়ানোর জন্য কর আদায়ের হার কমিয়ে করের আওতা বাড়ানোর ওপর জোর দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা সচিব জিয়াউল ইসলাম, আইএমইডির সচিব মফিজুল ইসলাম, ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য জুয়েনা আজিজ, বিআইডিএসের মহাপরিচালক কে এস মুর্শিদ এবং বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক আমির হোসেন।
এসি/
আরও পড়ুন