ঢাকা, বুধবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

ব্যাকটেরিয়া যেভাবে মানুষের মেজাজ নিয়ন্ত্রণ করে

প্রকাশিত : ১৩:২১, ২৫ এপ্রিল ২০১৯

Ekushey Television Ltd.

আমরা মানুষ হয়েছি আমাদের মন, আমাদের চিন্তা করার শক্তি আর আবেগের জন্যেই। কিন্তু ইদানীং একটি নতুন এবং আলোচিত ধারণা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে, যেখানে দাবি করা হচ্ছে যে মানুষের শরীরের অভ্যন্তরে যে সব ব্যাকটেরিয়া বা অণুজীবগুলোর বাস, বিশেষ করে অন্ত্রে-মস্তিষ্ককে পরিচালনায় সে সবের এক ধরনের অদৃশ্য হাত রয়েছে।

বিজ্ঞান এখনও জানার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে যে, কিভাবে আমাদের ভেতরে এতসব কোটি কোটি অণুজীব বাস করছে এবং সেই সঙ্গে কিভাবে তারা শারীরিক অবস্থাকে প্রভাবিত করে।

তবে হতাশা, অটিজম এবং মস্তিষ্কের কোষ নিউরনকে বিকল করে দেয় এমন সব রোগের জন্যে এ ধরনের জীবাণুর এক ধরনের যোগসূত্র কিন্তু মেলে।

গবেষকেরা মনে করছেন, যে তারা এমন কিছু ব্যাকটেরিয়া সম্পর্কে জেনেছেন যেগুলো মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্যে ব্যবহার করা যেতে পারে। এগুলোকে তারা বলছেন, ‘মুড মাইক্রোবস’ বা ‘সাইকোবায়োটিকস’।

জাপানের কিয়ুশু বিশ্ববিদ্যালয়ে একদল ইঁদুরের ওপর গবেষণা চালানো হয়। যে ইঁদুরগুলো কখনোই কোনও ধরনের জীবাণুর সংস্পর্শে আসেনি সেগুলো সাধারণ ইঁদুরের চাইতে বেশি পরিমাণ স্ট্রেস হরমোন নিঃসরণ করে যখন তারা কোনও সমস্যায় পরে। এটিকে চিন্তার ক্ষেত্রে অণুজীবের অস্তিত্ব বা প্রভাবের বড় একটি ইঙ্গিত বলে ধরে নেওয়া হয়।

কিভাবে অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া আমাদের মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলে?

বলা হয় যে একটি উপায় হলো আমাদের ভেগাস স্নায়ু। যা তথ্য বহনকারী একটি সুপার হাইওয়ের মতো কাজ করে, যোগসূত্র ঘটায় অন্ত্রের সঙ্গে মস্তিষ্কের।

ব্যাকটেরিয়া হজমের সময়ে আঁশ জাতীয় খাদ্যকে ভেঙ্গে তার এক ধরনের রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটায়। শর্ট চেইন ফ্যাটি এসিড উৎপাদিত হয়, যা কিনা শরীরের চিন্তাভাবনার ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে।

অভ্যন্তরে বাস করা সব ধরনের অণুজীবকে বলা হয়ে থাকে ‘মাইক্রোবায়োম’। গবেষকরা অন্ত্রের ‘মাইক্রোবায়োম’-এর সঙ্গে পারকিনসন্স রোগীর মস্তিষ্কের এক ধরনের যোগসূত্র দেখেছেন।

যদিও পারকিনসন্স স্পষ্টভাবেই এক ধরনের স্নায়বিক বৈকল্য। যার কারণে মস্তিষ্কের কোষগুলো নষ্ট হয়ে যায়, ফলে পেশীগুলোর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে।

কিন্তু ক্যালটেকের মেডিকেল মাইক্রো বায়োলজিস্ট প্রফেসর সার্কিস ম্যাজমানিয়ান দেখিয়েছেন যে, এখানে অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়াও একভাবে জড়িত।

তিনি তার গবেষণায় ‘মাইক্রোবায়োম’-এর খুব সুনির্দিষ্ট পার্থক্য পেয়েছেন পারকিনসন্স রোগী এবং সুস্থ ব্যক্তির মাঝে।

আর এ ধরনের গবেষণাই ইঙ্গিত দিচ্ছে অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া কিংবা ‘মাইক্রোবায়োম’-এর পরিবর্তন ঘটিয়ে স্নায়বিক বা মস্তিষ্কের রোগের চিকিৎসায়।

ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার ড. ক্রিস্টিন টিলিশ মনে করেন এ সম্ভাবনা নিয়ে আরও অনেক বেশি গবেষণার প্রয়োজন।

যাতে করে অণুজীবের নিয়ন্ত্রণ ঘটিয়ে সত্যিই মানসিক স্বাস্থ্যেরও এক ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন আনা যায়।

সূত্র: বিবিসি

একে//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি