ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলে ব্যাপক সম্ভাবনা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২৩:২৮, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ | আপডেট: ১৯:০২, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

দেশীয় উন্নত জাতের ছাগলের মধ্যে ব্ল্যাক বেঙ্গল একটি। আন্তর্জাতিক বাজারে এই ছাগল ‘কুষ্টিয়া গ্রেড’ নামেও পরিচিত। তবে বাংলাদেশ ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গ, বিহার এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের উড়িষ্যা অঞ্চলে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল দেখা যায়।

ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের মাংস যেমন সুস্বাদু তেমনি এর চামড়া আন্তর্জাতিকভাবে উন্নতমানের বলে স্বীকৃত। বাংলাদেশের আবহাওয়ায় ব্ল্যাকবেঙ্গল ছাগল উৎপাদন উপযোগী। এ ছাগলের বাচ্চা উৎপাদন ক্ষমতাও অধিক।

সার্বিক বিচারে এসব গুণাবলী থাকা সত্ত্বেও ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের বাণিজ্যিক উৎপাদন এদেশে এখনো প্রসার লাভ করেনি। তবে জয়পুহাটের জাকস ফাউন্ডেশন পল্লী কর্ম সহায়ক ফাইন্ডেশনের (পিকেএসএফ) সহায়তায় সংস্থা পর্যায়ে স্থাপন করেছে ব্ল্যাকবেঙ্গল ছাগলের খামার। জকস ফাউন্ডেশন তাদের এ খামার থেকে ব্ল্যাকবেঙ্গল ছাগল পালনে আগ্রহী খামারীদের ছাগল সরবরাহ করে থাকে। এছাড়াও সংস্থা পর্যায়ে ছাগল পালনে প্রশিক্ষণ, কারিগরি ও ব্যবসা উন্নয়ন সহায়তা, প্রজনন সেবা, ভ্যাকসিন ও চিকিৎসা সহায়তা প্রদান করে থাকে।

জাকস ফাউন্ডেশনের খামারে ছাগল সংখ্যা দু’শত বারটি আর সদস্য পর্যায়ে ছাগল রয়েছে ১৯ হাজার৮০০ টি।

এ প্রকল্প সম্পর্কে জানতে চাইলে জাকস ফাউন্ডেশন এর নির্বাহী পরিচালক মো. নূরুল আমিন ইটিভি অনলাইনকে বলেন, বাংলাদেশের আবহাওয়া ব্ল্যাকবেঙ্গল ছাগল পালনে উপযোগী। এ ছাগল পালনকে আরোও বেশি উৎসাহিত করার লক্ষ্যে আমরা খামারীদেরকে সহনীয় মাত্রায় ঋণ সুবিধা দিয়ে থাকি।

তিনি আরোও বলেন, বাংলাদেশে বেকার সমস্যা ও দারিদ্র্য হ্রাসে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল পালন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার সাথে তাল মিলিয়ে দেশে পোল্ট্রি এবং মৎস্য উৎপাদন দ্রুত বাড়লেও প্রযুক্তিগত জ্ঞানের অভাবে পশুসম্পদ বিশেষ করে ছাগলের উৎপাদন আশানুরূপ বাড়েনি। তাই আমরা মনে করি সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সবাই যদি এগিয়ে আসে তাহলে এ ক্ষেত্র থেকে আশানুরূপ ফল অর্জন সম্ভব। 

জাকস ফাউন্ডেশনের পশু চিকিৎসায় টেকনিক্যাল সহকারী মো. মুশফিকুর রহমান  বলেন, ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল পরিষ্কার, শুষ্ক, দুর্গন্ধমুক্ত, উষ্ণ, পর্যাপ্ত আলো ও বায়ু চলাচলকারী পরিবেশ পছন্দ করে। অন্যদিকে  গোবরযুক্ত, স্যাঁত স্যাঁতে, বদ্ধ ও অন্ধকার পরিবেশে ছাগলের রোগবালাই বেড়ে যায়। রোগবালাইয়ের মধ্যে নিউমোনিয়া, একথাইমা, চর্মরোগ, ডায়রিয়া ইত্যাদি উল্লেখ্যযোগ্য। আর এসব রোগের কারণে ছাগলের ওজন বৃদ্ধির হার, দুধের পরিমাণ এবং প্রজনন দক্ষতা কমে যায়।

ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের ওজন, খাবার এবং প্রজনন ক্ষমতা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি  বলেন, একটি পূর্ণ বয়স্ক ব্ল্যাক বেঙ্গল পুরুষ ছাগলের ওজন হয় ২৫ থেকে ৩০ কেজি আর মাদী ছাগলের ২০ থেকে ২৫ কেজি। পূর্ণবয়স্ক ছাগলের উচ্চতা ৫০ সেমি হয়ে থাকে। এই ছাগলের প্রজনন ক্ষমতা বেশি হওয়ায় মাদী ছাগল বছরে দুই বার গর্ভধারণ করতে পারে এবং প্রতিবারে ২ থেকে ৪টি বাচ্চা পর্যন্ত প্রসব করতে পারে।

পল্লীকর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এর উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (প্রশাসন) ড. মো. জসীম উদ্দিন বলেন, দারিদ্র বিমোচন ও আর্থ সামাজিক উন্নয়নে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল পালন একটি সম্ভাবনাময় ও লাভজনক খাত। এই খাত সঠিকভাবে পালন ও সংরক্ষণ না করার কারণে জাতটি ধীরে ধীরে তার বিশেষত্ব হারাচ্ছে। তাই এ জাতের ছাগল পালনের মাধ্যমে জাতটির নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ একে ধরে রাখতে হবে। ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল পালন এবং উৎপাদনের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে এবং আমিষের ঘাটতি পূরণ হবে।

এমএইচ/টিকে


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি