ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১০ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

ভাইবোনদের শিক্ষিত করতে চান আল আমিন

প্রকাশিত : ১৯:৪৯, ৮ জানুয়ারি ২০১৮ | আপডেট: ২০:১৬, ৮ জানুয়ারি ২০১৮

Ekushey Television Ltd.

জন্মগতভাবেই দুটি পায়ে ত্রুটি রিকশাচালক আল-আমীনের। তবুও থেমে নেই তার জীবনযুদ্ধ। নিজে পড়ালেখা না করতে পারলেও স্বপ্ন দেখেন ভাই-বোনদের শিক্ষিত করে তুলবেন।

পাবনা জেলার দিনমজুর বাবার বড় ছেলে আল আমীন। মা মানুষের বাড়িতে কাজ করে সংসারে সহযোগিতা করেন। তার ছোট রয়েছে আরও এক ভাই ও বোন।

অভাবের সংসারে যেখানে দুবেলা পেটপুরে খেতে পারলে খুশি সেখানে পায়ের চিকিৎসার কথা ভাবতেও পারেনি তার বাবা-মা। ফলে পায়ে ত্রুটি নিয়েই বেড়ে ওঠেন তিনি। পা কাজে লাগাতে পারেন না অন্য আর সাধারণের মতো। 

মা স্বপ্ন দেখতেন, ছেলে বড় হয়ে মাওলানা হবে। তাই ভর্তি করালেন মাদ্রাসার হেফয্ বিভাগে। দশ পারা কোরআন মুখস্থ হওয়ার পর বাবা অসুস্থ্য হয়ে পড়লেন। মায়ের শরীরও আগের মত ভাল নয়। ফলে লেখাপড়ার পর্ব শেষ করতে হয় আল আমীনকে।

জীবিকার সন্ধানে ছুটে আসেন ঢাকা শহরে। প্রথম কিছুদিন ভাড়া রিক্সা চালিয়েছিলেন আল আমীন। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই বুঝলেন ভাড়া রিকশায় জীবনে স্বচ্ছলতা আসবে না।

এরপর গ্রামের সমবায় সমিতি থেকে টাকা ঋণ নিয়ে মা পাঠায় তার কাছে। আল আমীন ৬২ হাজার টাকা করচ করে মিস্ত্রি দিয়ে রিক্সা বানায়।

কারওয়ান বাজার মোড়ে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় রিক্সাচালক আল আমীনের। তিনি জানান, এখন অনেকটাই স্বাবলম্বী। দৈনিক হাজার-বারশ টাকা আয় হয়। এর থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা বাসা ভাড়া আর খাওয়া বাবদ মাসে খরচ মাত্র ছ`শ টাকা। মাস শেষে তিনি ২৫-৩০ হাজার টাকা বাড়িতে পাঠান।

উচ্ছল এ তরুণ কথা বলতে বলতে হঠাৎ গম্ভীর হয়ে যায়। বলে, পড়ালেখাটা করতে পারলে ভাল লাগত। বুক ফুলিয়ে চলতে পারতাম। এখন মানুষ অবহেলা করে। পা নেই বলে অনেকে রিক্সায় উঠতে চায় না। মনে করি যদি রিক্সা চালাতে না পারি! বা যদি কোন অঘটন ঘটে।

আল আমীন স্বপ্ন দেখে রিক্সা চালিয়ে যেভাবে অভাব দূর করেছেন, তেমনি ভাই বোনদের পড়াশুনা শেখাবেন। মানুষ হিসেবে বাঁচার এক অদম্য স্বপ্ন তার।


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি