ভাইরাস জ্বর হলে কী করবেন
প্রকাশিত : ১৮:৩৯, ২৬ আগস্ট ২০১৮ | আপডেট: ১০:০৩, ৩০ আগস্ট ২০১৮
বর্তমান সময়টাই যেন জ্বর-জারির। একই পরিবারে একাধিক ব্যাক্তির মধ্যেও জ্বর দেখা যাচ্ছে। চিকুনগুনিয়া ও ডেঙ্গুর প্রকোপ কমলেও ভাইরাস জ্বর থেকে রেহাই নেই মানুষজনের। এই জ্বর হঠাৎ করেই এবং খুব সহজে একজন থেকে অন্যজনে ছড়ায়। পরিবারের একজনের হলে বাকিদেরও আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
লক্ষণ
ভাইরাস জ্বর হলে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে গিয়ে ১০২ থেকে ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত হতে পারে। সারা শরীর কামড়াতে থাকে। বমি হয়, সেইসঙ্গে সর্দি ও হাঁচি থাকে। চোখ লাল হয়ে যায়। এসব উপসর্গ থাকলে মোটামুটি ধরে নেওয়া যেতে পারে রোগীর ভাইরাল ফিভার হয়েছে।
কী করবেন
ভাইরাস জ্বরে শরীরের তাপমাত্রা বেশি থাকলে রোগীর সারা শরীর স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানিতে ভেজানো তোয়ালে চিপে, তা দিয়ে মুছে দিতে হবে। এভাবে কয়েকবার করলে শরীরের তাপমাত্রা কম আসবে। মাথায় পানি দেওয়া যেতে পারে। গায়ে কোনো বাড়তি কাঁথা দেওয়ার দরকার নেই।
জ্বর না কমলে সামান্য কিছু খেয়ে নিয়ে একটি প্যারাসিটামল ট্যাবলেট/ সিরাপ দেওয়া যেতে পারে। তবে তা অবশ্যই খাওয়ার পর খাওয়ানো উচিত।
জ্বর খুব বেশি হলে, ১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইটের ওপরে হলে বড়দের ডাইক্লোফেন/ ক্লোফেনাক সাপোজিটরি একটি এবং শিশুদের এপিএ সাপোজিটরি ১২৫ অথবা ২৫০ মিগ্রা বয়স অনুযায়ী একটি পায়খানার রাস্তায় দেওয়া যেতে পারে।
সর্দির জন্য অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ট্যাবলেট বা সিরাপ যথাযথভাবে দিতে হবে। অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ট্যাবলেটের মধ্যে রয়েছে এক্সিপিলিন/ হিস্টাসিন/ হিস্টালেক্স/ অ্যান্টিসটা ইত্যাদি।
এগুলোর একটি করে ট্যাবলেট দিনে তিনবার দেওয়া যেতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে একই নামের সিরাপ এক চা চামচ করে দিনে তিনবার সেবন করানো যেতে পারে। খুব বেশি বমি হলে এর জন্য তাৎক্ষণিকভাবে মোটিলন/ এভোমিন একটি এবং বমি বন্ধ না হলে একটি করে দিনে তিনবার খাওয়ানো যেতে পারে।
এছাড়া প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ পানীয় ও ফল, যেমন : কমলালেবু, আমলকী, আনারস ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে। প্রচুর পানি পান করতে হবে। দিনে দুই থেকে তিন কাপ কমলালেবুর রস খেলে ভালো। পরিবর্তে ভিটামিন সি ট্যাবলেট একটা করে দিনে চার থেকে পাঁচবার খেতে পারেন। সব ধরনের স্বাভাবিক খাবারই তখন খাওয়া যাবে।
দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে এই জ্বর এমনিতেই সেরে যায়।
কী করবেন না
ভাইরাস জ্বর হলে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খাওয়ার দরকার নেই। তিন থেকে চার দিনের মধ্যে জ্বর ভালো না হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এ সময়ে খাবার-দাবার বন্ধ করা চলবে না। বদ্ধ ঘরে থাকবেন না। এই জ্বর ছোয়াচে বলে অন্যদের সামনে হাঁচি-কাশি দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।
লেখক : অধ্যাপক, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।
/ এআর /