ভারী বর্ষণে রাঙ্গামাটিতে পাহাড় ধস, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
প্রকাশিত : ১৬:৫৯, ৮ আগস্ট ২০২৩
গত কয়েকদিনের অব্যাহত ভারী বর্ষণে জেলার বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসে ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত ও সড়কে স্বাভাবিক যান চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। আজ সকালে শহরের সিভিল সার্জন এলাকা, ভেদভেদীসহ কয়েকটি এলাকায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া জেলার বিভিন্ন উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে।
অব্যাহত বৃষ্টিপাতের ফরে জেলার বাঘাইছড়ি, জুরাছড়ি, রাজস্থলী, বিলাইছড়ি ও বরকল উপজেলায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি হয়েছে হাজারো মানুষ। রাস্তাঘাট ঘরবাড়ি ডুবে গিয়ে যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়ছে সাধারন মানুষ।
এদিকে কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে আজ মঙ্গলবার রাঙ্গামাটি শহর ও বিভিন্ন উপজেলায় ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে।
সকাল ১০টায় রাঙ্গামাটি শহরের সিভিল সার্জন বাংলোর এলাকায় বড়ো একটি পাহাড় ৪টি বাড়ি ধ্সে পড়ে। এতে বাড়ির সদস্যরা ঘরে আটকা পড়ে। পরে পুলিশের ২টি রেসকিউ টিম ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনা স্থলে গিয়ে আটকা পড়া লোকজনকে উদ্ধার করে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যায়। এ ছাড়া এই এলাকায় ঝুঁকিতে থাকা আরো ৬টি পরিবারকে আশ্রয় কেন্দ্রে পাঠানো হয়।
এ বিষয়ে রাঙ্গামাটি কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আরিফুল আমিন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে জানান, আজ সকালে জেলার সিভিল সার্জন অফিসের পিছনে ৪টি বসত বাড়ির উপর পাহাড় ধসে পড়ে। ঘটনার খবর পেয়ে আমরা জেলা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম বাড়ির লোকদের উদ্ধার করে আশ্রয় কেন্দ্র নিয়ে আসি।
বাঘাইছড়ি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা রোমানা আক্তার বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে জানান, বিগত কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে বাঘাইছড়ি উপজেলার বেশ কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া উপজেলার বিভিন্ন সড়কের বেশ কয়েকটি স্থানে রাস্তার উপর মাটি ধসে পড়ে এবং গাছ উপড়ে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। তবে প্রশাসনের তদারকিতে দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব মাটি ও গাছ সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হচ্ছে এবং উপজেলায় জরুরি ভিত্তিতে আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সেখানে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রিতদের শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
বাঘাইছড়ি ছাড়াও জেলার জুরাছড়ি,বিলাইছড়ি, রাজস্থলী ও বরকল উপজেলায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়াসহ কিছু-কিছু এলাকায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে।
এ বিষয়ে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে জানান, ভারী বৃষ্টিপাতের কারনে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে এবং কিছু-কিছু স্থানে পাহাড় ধস হয়েছে। ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল উপজেলা প্রশাসনকে ঝুকি মোকাবেলায় কাজ করার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। পাহাড় ধস ও বন্যা কবলিত এলাকার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
তিনি বাসসকে জানান, পাহাড়ী ঢলের কারণে সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবেলায় ফায়ার সার্ভিস, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ জেলা স্বাস্থ্য বিভাগকে সার্বক্ষনিক প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে এবং বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্র নিয়ে যেতে কাজ করছে উপজেলা প্রশাসন।
রাঙ্গামাটি জেলা শহর ও উপজেলায় ১৮২ টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং আশ্রিত মানুষদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
কেআই//
আরও পড়ুন