ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

ভাল ঘুমের জন্য কি খাবেন?

প্রকাশিত : ১৬:৪৩, ৩ জানুয়ারি ২০১৯ | আপডেট: ১৭:৫৭, ৩ জানুয়ারি ২০১৯

Ekushey Television Ltd.

সুন্দর মন ও সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতের জন্য রাতে ভালো ঘুম হওয়া খুবই জরুরি। যদিও আমাদের দেশের তরুণ-তরুণীরা অতিমাত্রায় ইন্টারনেটে আশক্তি হওয়ার কারণে রাতে ঠিকমতো ঘুম হয় না। যার প্রভাব পড়ে কর্মব্যস্ত দিনে।

আমি আমার অনেক রোগীদের মধ্যে একটি সাধারণ সমস্যা পাই, আর সেটি হলো "ঘুম কম হওয়া বা একেবারেই ঘুম না হওয়া।

ঘুম আমাদের সুস্বাস্থ্যের জন্য অতি প্রয়োজনীয় একটি বিষয়। সাধারণত ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ভাল ঘুম সুস্বাস্থ্যের জন্য অত্যাবশ্যক এবং কম বেশি আমরা সবাই জানি ঘুম কম হলে আমাদের নানাবিধ শারীরিক সমস্যা হয়, যেমনঃ গ্যাস্ট্রিক,হজমের সমস্যা, অবসন্নতা, বমি বমি ভাব, ত্বকের রুক্ষভাব, কম বয়সীদের ব্রনের সমস্যা, চুল পরা সহ নানাবিধ সমস্যা দেখা যায়।

মূলতঃ ঘুমন্ত অবস্থায় শরীরের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন বিপাক জনিত কাজ ব্যাহত হয় অর্থাৎ বি এম আর কমে যায় এবং হরমোনের ইমব্যালেন্স হয়, যার কারণে অন্যান্য শারীরিক অসুস্থতার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। তাই ঘুম না হওয়ার বা কম হওয়ার বিষয়টি কে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে।

এখন আসি খাবারের সাথে ঘুমের সম্পর্ক নিয়ে কিছু বলি। অনেকেই ঘুমের সমস্যায় বিভিন্ন ওষুধের উপর নির্ভর করে শারীরিক জটিলতা অনেক বাড়িয়ে ফেলেন। এক পর্যায়ে দেহে ঘুমের ওষুধের কার্যকারিতাও কিন্তু কমে যায়। তাই আমরা যদি সেসব খাবারকে বেছে নেই, যেগুলো ঘুমকে ত্বরান্বিত করে এবং শরীরে গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান এর যোগান দেয়, তাহলে ওষুধের উপর নির্ভরশীলতা অনেকাংশেই কমানো সম্ভব হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা সাম্প্রতিক এক গবেষনায় ঘুমের সাথে সম্পর্কিত কিছু পুষ্টি উপাদান এর কথা উল্লেখ করেছেন। এগুলো হলো কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম ইত্যাদি পুষ্টি উপাদান সমূহ এবং ট্রিপটোফ্যান নামক হরমোন যেগুলোর ঘুম নিয়ন্ত্রণ এর সাথে গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আছে।

এক্ষেত্রে শারীরিক অন্য কোন সমস্যা বা কোন অসুস্থতা না থাকলে এইসব পুষ্টি উপাদান বহুল খাবার গ্রহণ করে ঘুম কম হওয়ার সমস্যা থেকে অনেকটা পরিত্রান পাওয়া যায়। যেমনঃ কাঠবাদাম এবং মিষ্টি কুমড়ার বীচি, এক্ষেত্রে ম্যাগনেশিয়াম এর খুব ভাল উৎস এবং একাধারে ক্যালসিয়াম এর শোষনকেও ত্বরান্বিত করে। এছাড়াও ঘুমের আগে টক দই বা গরম দুধ হতে পারে ক্যালসিয়াম এর খুব ভাল উৎস যা জেগে থাকা এবং ঘুমের সিস্টেমকে নিয়ন্ত্রণ করার উপাদান মেলাটোনিনকে উৎপন্ন করে। পটাশিয়াম আমাদের মস্তিষ্কের রিল্যাক্সিং বা আরাম এর জন্য খুব ই কার্যকরী। তাই আলু অথবা একটি কলা হতে পারে পটাশিয়াম এবং কার্বোহাইড্রেট এর জন্য উৎকৃষ্ট উৎস । মধু থেকে প্রাপ্ত ট্রিপটোফ্যান হরমোনও আমাদের ঘুম আসার জন্য সহায়তা করে। আর প্রোটিন এর সহজ উৎস হতে পারে একটি সেদ্ধ ডিম। তাই দৈনন্দিন খাদ্য তালিকা বা ডায়েট চার্ট এ আমরা যদি এসব খাবার অন্তর্ভুক্ত করি তাহলে ঘুম কম হওয়া বা না হওয়ার সমস্যা থেকে অনেকটাই মুক্তি পেতে পারি।

এক্ষেত্রে একটি কথা না বললেই নয়। শুধু খাবার ছাড়াও কিছু দৈনন্দিন নিয়ম কানুন যেমনঃ প্রতিদিন সময়মত ঘুমাতে যাওয়ার অভ্যাস করা, চিন্তামুক্ত থাকা ও মানসিক সুস্থতা বজায় রাখা, পরিস্কার বিছানা বালিশ ব্যবহার করা, নিজে যতটা সম্ভব ফ্রেশ হয়ে ঘুমাতে যাওয়া, রাত জেগে কোন কিছু না করা বিশেষ করে ইলেকট্রনিক ডিভাইসের ব্যবহার না করা ইত্যাদিও ভাল ঘুমের জন্য জরুরী বিষয়।

লেখকঃ সোনিয়া শরমিন খান

নিউট্রিশনিস্ট ও ক্লিনিক্যাল ডায়েটিশিয়ান

সিটি হেলথ সার্ভিসেস লিমিটেড।

 

টিআর/

 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি