ঢাকা, শুক্রবার   ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ভালবাসার টানে সাইকেলে চড়ে ৬০০ কিমি ভ্রমণ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৪:০৯, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ | আপডেট: ১৬:০৪, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

শুরুতে দেখা! এরপর প্রেম! গভীর প্রণয় একসময় গড়ায় বিয়েতে। ভালবাসার সুমধুর সংসারে কেবল সুখ আর সুখ! তবে সেই ভালবাসা বেশিদিন টেকেনি। একদিন হঠাৎ উদাও হয়ে যান স্ত্রী অনিতা। এরপরই স্ত্রীর প্রেমে দিশেহারা মনোহর নায়েক শেষ সম্বল সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়েন স্ত্রীর খোঁজে। ২৪দিন পর ৬০০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে অবশেষে পান স্ত্রীর খোঁজ। দেখা হয় দুজনের। আবারও প্রেমাতুর মিলনে বিভোর হয়ে ওঠে তাদের সংসার।

না পাঠক, এটা কোন সিনেমার গল্প নয়। নয় কোন উপন্যাস বা ছোট গল্পের চুম্বক অংশ। এটি একটি বাস্তব ঘটনা। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যে। মনোহর নায়েক পেশায় একজন দিনমজুর। ওডিশাতে দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালায় সে। একসময় অনিতার সঙ্গে দেখা হয় মনোহরের। এরপর শুরু হয় প্রেম। প্রেমের শেষ পরিণতি গড়ায় বিয়েতে। এভাবে সুখে-শান্তিতে কাটছিলো তাদের সংসার। তবে একদিন হারিয়ে যায় অনিতা। বাবার বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে পুরোপুরি লাপাত্তা হয়ে যান অনিতা।

অবশেষে বিশ্ব ভালোবাসা দিবসের মাত্র এক সপ্তাহ আগে স্ত্রী অনিতাকে খোঁজে পান মনোহর। এতে তাঁর সংসারে যেন জ্যোৎস্নার আলো ঠিকরে পড়ছে। জানা যায়, গত ১২ জানুয়ারি পূজা উপলক্ষ্যে অনিতা বাবার বাড়িতে বেড়াতে যান। দুদিন পাড় হলেও অনিতা ফিরে না আসায় শ্বশুর বাড়িতে খোঁজ লাগান মনোহর। শ্বশুর বাড়িতে যাওয়ার পর শুনতে পান সে আসেনি।

এরপর ২৪ জানুয়ারি থেকে ভাঙ্গা সাইকেল মেরামত করে স্ত্রীর খোঁজে মাঠে বেরিয়ে পড়েন মনোহর। দিন যায় কিন্তু কোন ভাবেই স্ত্রীর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। এমনি করে ২৪টি দিন পাড় করে মনোহর। বালিগোডা গ্রাম থেকে দিনে ২৫ কিলোমিটার করে পাড়ি দিয়েছেন মনোহর। ক্লান্ত-শ্রান্ত-পরিশ্রান্ত মনোহর খোঁজে পাচ্ছিলেন না নিজ স্ত্রীকে, ভালোবাসার মানুষকে। তবু হাল ছাড়েননি ৪২ বছর বয়সী ওই তরুণ। হাঁড়ভাঙ্গা খাটুনিতে এমনিতে শরীরে তারুণ্যে ভাটা পড়েছে। তবে মনোবলে এতটুকুও ছিঁড় ধরতে দেননি ভালবাসার উৎকৃষ্ট উদাহরণ তৈরি করা মনোহর। অবশেষে গত ৭ ফেব্রুয়ারি স্ত্রী অনিতাকে খোঁজে পান মনোহর। তাঁদের পুনর্মিলনীর এই দৃশ্য যেন হার মানিয়ে যায় পৃথিবীর সব আবেগকে, সব ভালবাসাকে।

মনোহর বলেন, অনিতা ফিরে না আসায় মুসাবানি ও দুমারিয়া থানায় আমি মামলা দায়ের করি। কিন্তু কোন ভাবেই স্ত্রীর খোঁজ পাচ্ছিলাম না। তাঁরা আমাকে স্ত্রীর কোন খোঁজ দিতে পারছিলেন না। শুধু তাই নয়, স্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েও স্ত্রীর সন্ধ্যান না মেলায় খুব হতাশ হয়ে পড়ি। অবশেষ সিদ্ধান্ত নিই, আমার ভালবাসার মানুষকে খোঁজে পেতে আমাকেই লড়তে হবে। এরপর পুরোনো সাইকেলটা একদিনেই মেরামত করে, ওই দিনই বেরিয়ে পড়ি অনিতার সন্ধ্যানে। অবশেষে খোঁজ পাই আমার ভালোবাসার মানুষকে। এসময় স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন মনোহর। তবে স্বামীর ভালোবাসায় বিমোহিত অনিতা বাকরূদ্ধ হয়ে পড়েন।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
এমজে/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি