ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪

ভিটেমাটি ছাড়া মানুষকে আশ্রয় দেয় বন্ধু রাষ্ট্র ভারত (ভিডিও)

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:৩৮, ১১ ডিসেম্বর ২০২০

পাকিস্তানি বাহিনীর বর্বরতার বিরুদ্ধে বাঙালি যখন রুখে দাঁড়ায়, তখন বন্ধু হয়ে হাত বাড়িয়ে দেয় ভারত। ভিটেমাটি ছাড়া মানুষকে আশ্রয় দেয় বন্ধু রাষ্ট্রটি। আবার বিজয় যখন দ্বারপ্রান্তে তখন দুই দেশের বাহিনী মিলেই হলো মিত্রবাহিনী। বিজয়ে মিত্রবাহিনীই রেখেছে বড় ভূমিকা। গবেষকরা বলছেন, কারো অবদানকেই ঈর্ষা করার সুযোগ নেই। দেরিতে হলেও বিদেশি বন্ধুদের স্বীকৃতি জানানোয় খুশি হলেও এখনো সবাই সম্মাননা না পাওয়ায় আছে আক্ষেপ।

পাকিস্তানিদের বর্বরতা, নির্বিচারে গণহত্যা- ২৫ মার্চ কাল রাত। জাতির পিতার স্বাধীনতা ঘোষণা, বাঙালি ঝাপিয়ে পড়ে মুক্তিযুদ্ধে। বন্ধু হয়ে পাশে দাঁড়ায় ভারত। লাখ লাখ সহায়-সম্বলহীন মানুষকে আশ্রয় দেয় দেশটি। ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বে ভারত সরকার শরণার্থী বাঙালিদের খাইরে-পরিয়ে বাঁচিয়ে রাখে। 

সীমান্তের ওপারে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ, অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ করে বন্ধু দেশটি। 

মার্চ থেকে ডিসেম্বর, দেশের ভেতরে চলে গেরিলা যুদ্ধ। সময় গড়ানোর সাথে সাথে আক্রমণের ধার বাড়ে মুক্তিযোদ্ধাদের। বর্ষায় যখন নদ-নদী টইটম্বুর তখন পাকিস্তানিদের নাস্তানাবুদ করে ছাড়ে মুক্তিবাহিনী। এই সময়ের মধ্যে বাঙালির পক্ষে বিশ্ব জনমত গড়ে উঠে। 

যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলো ভারতীয় সেনাবাহিনী। ৩ ডিসেম্বর আমৃতসর, পাঠানকোট, শ্রীনগরসহ ভারতের ১১টি বিমানঘাঁটিতে বিমান হামলা চালায় পাকিস্তান। পাল্টা সেনা অভিযানের ঘোষণা দেন ইন্দিরা গান্ধী। 

ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডার লে. জে. জগজিৎ সিং আরোরার অধিনায়কত্বে ঘোষিত হয় বাংলাদেশের-ভারত যৌথ সামরিক কমান্ড। একই সঙ্গে চলে সামরিক অভিযান। একের পর এক শহর দখল করে ঢাকার দিকে এগিয়ে যায় মিত্র বাহিনী। 

বিজয়ের ঠিক আগের দুই সপ্তাহ ধরে চলে তীব্র যুদ্ধ। লক্ষ্য ঠিক করা হলো ১৩ই ডিসেম্বর ঢাকাকে যৌথ কমান্ডের নিয়ন্ত্রণে নেয়া।

মুক্তিযোদ্ধা এবং ওয়ার ক্রাইম ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ডা. এম এ হাসান বলেন, মিত্রবাহিনীর যে অবদান সেটা কিন্তু শুরু থেকেই। ১ অথবা ২ এপ্রিল মিত্রবাহিনীর সঙ্গে আমাদের দেখা হয়। যৌথ কর্মকাণ্ড ছিল, এখানে কোন ঈর্ষার স্থান নাই। আমরা যারা বাঙালি ছিলাম, বিজয়ের পতাকাটা প্রথম আমরাই নিয়ে এসেছিলাম। 

হানাদারদের আশা শেষ হয়ে যায় ১৫ ডিসেম্বর। ১৬ ডিসেম্বর ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে পাকিস্তানি সেনাদের আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে জন্ম হয় স্বাধীন বাংলাদেশের। বিজয় মিছিলে জয় বাংলা স্লোগান।

মুক্তিযুদ্ধে ১২ শ’ ভারতীয় সৈন্য প্রাণ হারায়। এতোদিন পরও অনেকেই স্বীকৃতি পাননি, তাই আক্ষেপ আছে এই মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের গবেষকের। 

ডা. এম এ হাসান আরও বলেন, আমরা কৃতজ্ঞ। আমরা যে অকৃতজ্ঞ জাতি নয় এটার প্রমাণ করার প্রয়োজন ছিল। আর এটাকে যথাসময়ে করা সম্ভব হয়নি, বিলম্ব হলেও কিছু করা হয়েছে। ৭১-এ যারা প্রাণ দিয়েছে সেই পরিবারগুলোকে একান্ত আপন করে নেওয়া প্রয়োজন। আমি তো মনে করি বিভিন্ন জায়গায় তাদের জীবন কাহিনী থাকা উচিত, তারা যুদ্ধ করেছে সেই ইতিহাসটা থাকা উচিত।

বাঙালির বিজয়ের ইতিহাসে মিত্র বাহিনীর অবদান চির অম্লান হয়ে থাকবে।
ভিডিও :


এএইচ/এসএ/
 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি