মনপুরার কাজীরচরে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে পুলিশসহ আহত ২০
প্রকাশিত : ০৯:১৭, ১৩ জুলাই ২০২৩
ভোলার মনপুরার বিচ্ছিন্ন কাজীরচরে চাষাবাদ করতে গেলে স্বপন ডাকাতের নের্তৃত্বে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জ্বিত লাঠিয়াল বাহিনী বন্দোবস্তীর জমির কৃষকদের উপর হামলা চালিয়েছে। হামলায় ৭ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২০ জন গুরুতর আহত হয়েছে।
বুধবার বিকাল ৫টায় আহত পুলিশ সদস্য ও কৃষকদের উদ্ধার করে মনপুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
আহতদের মধ্যে গুরুতর পুলিশের এসআই সাগরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভোলায় ও কৃষক মোঃ বাহারকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ১২ রাউন্ড ফাঁকা শর্টগানের গুলি ছোড়ে বলে জানায় মনপুরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ জহিরুল ইসলাম।
আহত কৃষকরা অভিযোগ, স্বপন ডাকাতের নেতৃত্বে মনপুরা বিচ্ছিন্ন চরকলাতলী ও নোয়াখালীর হাতিয়ার লাঠিয়াল বাহিনী হামলায় অংশ নেয়। এছাড়াও মনপুরা উপজেলার ১নং মনপুরা ইউনিয়নের সাবেক এক জনপ্রতিনিধির ইন্ধনে এই হামলা হয় বলে অভিযোগ আহত কৃষকদের।
লাঠিয়াল বাহিনীর হামলায় আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন মনপুরা থানার ওসি তদন্ত শংকর তালুকদার, এসআই লুৎফুর, এসআই সাগর, কনস্টেবল জাহাঙ্গীর, কনস্টেবল শাহীন, কনস্টেবল নাইম ও কনস্টেবল সাইদুল।
অপরদিকে আহত কৃষকরা হলেন মোঃ বাহার, মোঃ ফরিদ, জাবেদ ফরাজী, নুর ইসলাম ফরাজী, ছোট মনির ফরাজী, খোকন মেলেটারী, রাসেল ফরাজী, নুরনবী ফরাজী, মতিন ফরাজী, কাসেম, নাসির, মাইনুদ্দিন ও আলাউদ্দিন। এদের সবার বাড়ি উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে।
আহত কৃষক জাবেদ ফরাজী, ফরিদ ও বাহারসহ অন্যরা জানান, বিচ্ছিন্ন কাজীর চরে চাষাবাদ করতে গেলে জমির একর প্রতি ৬ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে স্বপন ডাকাত। না দিলে চরে চাষাবাদ করতে দিবেনা বলে হুমকী দেয় সে। তখন কাজীরচরে কৃষকদের পক্ষে মাইনুদ্দিন লিখিতভাবে ভোলা জেলা পুলিশ সুপারকে অভিযোগ করেন।
পরে পুলিশ সুপারের নির্দেশে বুধবার সকালে মনপুরা থানার পুলিশসহ কৃষকরা কাজীরচরে চাষাবাদ করতে গেলে স্বপন ডাকাতের নেতৃত্বে চরকলাতলী ও হাতিয়ার লাঠিয়াল বাহিনী কৃষক ও পুলিশের উপর হামলায় চালানো হয়। এতে ২০ জন আহত হয়।
এ ব্যাপারে মনপুরা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আমানত উল্লা আলমগীর জানান, সাবেক চেয়ারম্যান আলাউদ্দিনের প্রত্যক্ষ মদদে স্বপন ডাকাতের নেতৃত্বে লাঠিয়াল বাহিনী বন্দোবস্তীর জমির কৃষকসহ পুলিশের উপর হামলা চালায়। ওই চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে স্বপন ডাকাত কাজীরচরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে। স্বপনের ভয়ে কৃষকরা চরে চাষাবাদ করতে পারছেনা।
অভিযোগ অস্বীকার করে সাবেক চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন হাওলাদার জানান, এই ঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত নই। আমাকে রাজনৈতিকভাবে কোনঠাসা করার জন্য প্রতিপক্ষ তার লোকজন দিয়ে মিথ্যা রটাচ্ছে। তিনি পাল্টা অভিযোগ করে জানান, স্বপন ডাকাত সরকারি আবাসনে থাকে। বর্তমান চেয়ারম্যান স্বপন ডাকাতকে আবাসনের ঘর দিয়েছেন। বরং স্বপন ডাকাত আলমগীর চেয়ারম্যানের লোক।
এ ব্যাপারে মনপুরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ জহিরুল ইসলাম জানান, কাজীরচরে কৃষকদের চরে চাষাবাদ করতে দিচ্ছেনা স্বপন ডাকাত এই রকম একটি লিখিত অভিযোগ ভোলা জেলা পুলিশ সুপারের কাছে করেন কৃষক মাইনুদ্দিন। পরে পুলিশ সুপারের নির্দেশে পুলিশ কৃষকদের নিয়ে ঘটনার তদন্ত করতে বুধবার কাজীরচরে যায়। পরে একপর্যায়ে কাজীরচরে জোরপূর্বক দখলদাররা পুলিশসহ কৃষকদের উপর হামলা চালায়।
ওসি আরও জানান, এতে ওসি (তদন্ত)সহ পুলিশের কয়েকজন সদস্য ও কয়েকজন কৃষক আহত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ১২ রাউন্ড শর্টগানের ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে। আহত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও পুলিশ এ্যাসল্ট মামলা প্রক্রিয়াধীন।
এএইচ
আরও পড়ুন