বাকৃবিতে রাতভর নির্যাতন
মন্ত্রণালয়ের চিঠির দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেয়নি প্রশাসন
প্রকাশিত : ১৮:১৫, ১৪ নভেম্বর ২০১৯
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শহীদ জামাল হোসেন হল ছাত্রলীগের সভাপতি দীপক হালদারকে সালাম না দেওয়ায় গত ৫ আগষ্ট গভীর রাত পর্যন্ত হলের কক্ষে আটকে রাখা হয় মাকসুদুল হক ইমু নামের এক শিক্ষার্থীকে। হল ছাত্রলীগ সভাপতির নির্দেশক্রমে হলের অন্য নেতারাও তার উপর চড়াও হয়। এ সময় তাকে স্টাম্প দিয়ে মারধর করেন হল ছাত্রলীগের নেতারা।
এ ঘটনা ঘটার পরে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। সেটি উল্লেখ করে এ ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কি ব্যবস্থা নিয়েছে তা জানতে চায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় গত ২১ অক্টোবর আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে তাদের কাছে একটি প্রতিবেদন দিতে বললেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোন দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) সাইফুল বলেন, আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলাম। তদন্ত কমিটি কর্তৃক সুপারিশ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জানা গেছে, মাকসুদুল হক ইমু বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুপালন অনুষদের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। হল ছাত্রলীগের সহসভাপতি আবদুল্লাহ্ হিশ শাফি, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক শাহাদাত হোসেন শাওন এবং পাঠাগার সম্পাদক মো. রাহাত হোসেন রাত ১টার দিকে ওই শিক্ষার্থীকে হলের পূর্ব ব্লকের ৫ নম্বর কক্ষে ডেকে নিয়ে যান। পরে তারা হল সভাপতিকে সালাম না দেওয়ার কারণ জানতে চান এবং তাকে স্টাম্প দিয়ে পেটান। নির্যাতনের ঘটনার পরের দিন (৬ আগষ্ট ২০১৯) তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. ছাইফুল ইসলামের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক মো. আজহারুল ইসলাম, ফসল উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. জাকির হোসেন এবং সহকারী প্রক্টর চয়ন গোস্বামীকে সদস্য করে কমিটি গঠন করা হয়। তবে কত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে হবে, বিজ্ঞপ্তিতে সে বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেওয়া ছিল না।
বর্তমানে ইমু নামের ওই শিক্ষার্থী হলে থাকেন না। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নির্যাতনের ভয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ¦বর্তী কেওয়াটখালিতে একটি মেসে থেকে ক্লাস-পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছেন।
এ বিষয়েু জানতে চাইলে বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান বলেন, বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন অবস্থায় আইন উপদেষ্টার কাছে রয়েছে। আমরা এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবো বলে আশা করছি।
আরকে/
আরও পড়ুন