ঢাকা, শুক্রবার   ১৮ অক্টোবর ২০২৪

মরেই বেঁচে গেল হামিদার বুকের মানিক!

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৭:৩৯, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ | আপডেট: ২২:০৪, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭

চোখের সামনে শিশু সন্তানকে শূন্যে ছুড়ে গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। আবার কখনও ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে ধড় থেকে মস্তক আলাদা করে উল্লাস করছে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সদস্যরা। ঘর থেকে বেরিয়ে আসতেই দা’য়ের কোপে শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয় মাথা। রাতের আঁধারে ঘর-বাড়িতে আগুন দিয়ে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হচ্ছে রোহিঙ্গাদের। এমন পরিস্থিতিতে জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশ অভিমুখী হচ্ছেন রোহিঙ্গারা। কিন্তু জীবন বাঁচানোর এ লড়াইয়ে পরাজিত হয়ে বড্ড অভিমানে না ফেরার দেশে পাড়ি জমাচ্ছেন অনেকে।

আশ্রয়ের সন্ধানে বাংলাদেশ অভিমুখে ছুটে আসা এমনই এক ভুক্তভোগী হামিদা বেগম। জাতিগত নিধনযজ্ঞ থেকে বাঁচতে শিশু সন্তানদের নিয়ে স্বামীর সঙ্গে বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন হামিদা। একদিকে বেঁচে থাকার তীব্র আকাঙ্ক্ষা অন্যদিকে সীমানা পাড়াপাড়ের সীমিত সুযোগ। এ যেন জীবন বাঁচানোর আরেক সংগ্রাম। সেই সংগ্রামে হামিদা বিজয়ী হলেও হারিয়ে গেছে তারা বুকের মানিক।

ছোট্ট নৌকায় অনেক মানুষ ওঠার কারণে সেটা ডুবে যায়। পরাজিত মানবতার নির্মম পরিহাসে পরিণত হয় হামিদার বুকের মানিক এক মাস বয়সী আব্দুল মাসুদ। স্বামীসহ হামিদা জীবন নিয়ে ডাঙায় উঠলেও মাসুদ চিরতরে ঘুমিয়ে পড়ে। তারা এখন নিরাপদ স্থানে পৌঁছে গেলেও মাসুদের অভিমান ভাঙে না, সে বলেনা ‘এই পৃথিবী তারও!’

মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি’র চিত্রগ্রাহক ফ্রেমবন্দি করেছেন সদ্যজাত এই শিশুর মরদেহ, বিপন্ন মানবতার এই আর্তনাদকে। আর আন্তর্জাতিক রীতিনীতি এবং শিশুদের প্রতি সংবেদনশীলতার নিয়ম ভেঙে ছবিটি প্রকাশ করেছে সিএনএন। ছবিটি ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বজুড়ে। ছবিটি যেন সমগ্র রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মৃত্যুময় বাস্তবতাকে সামনে হাজির করেছে।

জাতিসংঘের হিসাব মতে, প্রতিদিন প্রায় ২০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অভিযান শুরু হওয়ার পর এ পর্যন্ত ৪ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে। এভাবে চলতে থাকলে রোহিঙ্গা শরণার্থীর সংখ্যা ১০ লাখে ঠেকবে।

ডব্লিউএন

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি