মহামারির মতো বাড়ছে অসংক্রামক রোগ, সতর্ক বার্তা
প্রকাশিত : ১২:০৩, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | আপডেট: ১২:০৬, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
২০৫০ সালের মধ্যে ক্যান্সারে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়বে ৭৭ শতাংশ। অসংক্রামক রোগের নতুন মাপকাঠিতে প্রায় ৭০ শতাংশ ছুঁই ছুই বাংলাদেশ। একদিকে গড় আয়ুর বাড়লেও অন্যদিকে মহামারির মতো বাড়ছে ক্যান্সার, হৃদরোগ, কিডনী, ডায়াবেটিস ও মানসিক রোগ। পাল্লা দিয়ে প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। নীরব এই মহামারি ছাপ ফেলছে পারিবারিক, সামাজিক ও অর্থনীতিক কাঠমোতে।
ক্যান্সার এক মারণব্যাধি। বিশ্বজুড়ে সাম্প্রতিক পরিসংখানে প্রায় ৩ কোটি আক্রান্ত এবং ১ কোটি মৃত্যুর হিসেব রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সতর্ক বার্তা- ২০৫০ সালে ৭৭ শতাংশ বাড়বে।
ফুসফুস, স্তন এবং কোলোরেক্টাল ক্যান্সারে আক্রান্ত প্রায় ১ কোটি মানুষ প্রতিবছর এগিয়ে চলে মৃত্যুর মিছিলে।
ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডা. মুকিতুল হুদা বলেন, “৮৬ শতাংশ মানুষ ৭০ বছর বয়স পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেনা তার আগেই অকাল মৃত্যু ঘটে। অসংক্রামক রোগগুলো যখন শরীরে বাসা বাঁধে তখন খুব একটা উপসর্গ হয় না কিন্তু আস্তে আস্তে এরা অনেক ক্ষতিসাধন করে। এক পর্যায়ে গিয়ে এটাকে আর নিয়ন্ত্রণ করা যায়না। ফলে রোগীরা অকালেই মারা যায়। এর জন্য দরকার সচেতনতা।”
৫৫ মিলিয়ন বৈশ্বিক মৃত্যুর ৪১ শতাংশের জন্যই দায়ী অসংক্রামক রোগ। নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে ৪৭ শতাংশ আক্রান্ত ব্যক্তিরই মৃত্যু হয় বিনা চিকিৎসায় কিংবা অর্থাভাবে। আর ৮০ শতাংশ থাকে ঝুঁকির মধ্যে। আর প্রতিবছর প্রায় ৬২ লাখ পরিবার চলে যায় দারিদ্র্যসীমার নিচে। প্রায় ১৬ শতাংশ পরিবার হাল ছেড়ে চিকিৎসা থেকে বিরত থাকে।
বিশ্বজুড়ে হৃদরোগেই প্রতি ২ সেকেন্ডে ১ জনের মৃত্যুতে প্রকাশ পায় মহামারির ভয়ঙ্কর রূপ।
২৫০ শয্যাবিশিষ্ট টিবি হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আয়শা আক্তার বলেন, “সারাবিশ্বেই এই ব্যাধিটা বাড়ছে। এটা যেহেতু কোনো ছোঁয়াছে বা সংক্রামক রোগ নয়। একজনের কাছ থেকে আরেকজনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েনা। কিন্তু এই ব্যাধিটা হলো দীর্ঘস্থায়ী অর্থাৎ অনেক দিন ঘরে এই রোগটা মানুষের শরীরে বাসা বাঁধছে। যেহেতু এটা ছোঁয়াছে না এজন্য কোনো ভ্যাকসিন বা টিকার মাধ্যমে প্রতিরোধ করা যাচ্ছেনা। এ রোগের জন্য মানুষই বেশি দায়ী।”
৭০ শতাংশের এই নীরব ঘাতকের কাছে ৩০ শতাংশের সংক্রামক রোগ যেন নস্যি। একের সঙ্গে অন্য রোগের নিবিঢ় সম্পর্ক বিবেচনায় ঝুঁকি এবং আশঙ্কা উড়িয়ে দেবার সুযোগ নেই।
হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. প্রদীপ কুমার কর্মকার বলেন, “৪টি গুরুত্বপূর্ণ ডিজিজকে আমরা বলি মারা যাওয়ার কারণ। তা হলো- কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ, ক্যান্সার, নেফরোলজি এবং নিউরোলজি। এই চারটা রোগেই মৃত্যুর হার বেশি। এই চারটি সেক্টরকে যদি গুরুত্ব দেই তাহলে ওয়েস্টার্ন দেশগুলোর মতো আমরা আরও বেশি এগিয়ে যেতে পারবো বলে আমি মনে করি।”
রোগের ধরণ পরিবর্তন হয়েছে। মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও হ্রাস পেয়েছে। দীর্ঘমেয়াদী অসংক্রামক রোগ এই সুযোগে নীরবেই ছোঁবল মারছে প্রতিনিয়ত।
এএইচ