মহাশূন্যে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা, লক্ষ্য স্থায়ী বসতি
প্রকাশিত : ১৪:২৫, ৬ জুলাই ২০২৪
মহাকাশের অজানা রহস্যের জট খোলা বা খনিজ সম্পদ খোঁজাই শুধু নয়, চাঁদে স্থায়ী বসতি এবং জ্বালানি স্টেশন তৈরি করাই এখন লক্ষ্য। এ জন্যই যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া এবং ইউরোপের পাশাপাশি চীন ভারত জাপানের মতো দেশের মহাশূন্যে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা। একে স্বর্ণের খনি দখল বা গোল্ড রাশের সাথে তুলনা করছেন বিশ্লেষকরা।
এ পর্যন্ত প্রায় দেড়শ’ চন্দ্র অভিযানের মধ্যে শতাধিক অভিযানে এসেছে সফলতা।
এসব অভিযানের সুবাদে চাঁদের পরিবেশ, রাসায়নিক গঠন, তাপমাত্রা বিকিরণসহ ভূতাত্ত্বিক তথ্য এসেছে মানুষের সামনে। চাঁদের মাটি-পাথর পরীক্ষা করে জানা গেছে সৌর জগতের সৃষ্টি থেকে বিবর্তনের ইতিহাসও।
চন্দ্র অভিযানের সবশেষ সাফল্য হিসেবে ২০১৮ সালে চাঁদের দক্ষিণ মেরু এলাকায় জমে থাকা পানি বা বরফের সন্ধান পান বিজ্ঞানীরা। এরপর থেকেই আগ্রহ বাড়ে পরাশক্তিগুলোর।
মার্কিন জ্যোতির্বিজ্ঞানী ড. ম্যাকডোয়েল মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন ও ভারতের মতো শক্তিশালী দেশগুলোর মূল লক্ষ্য এখন অভিযাত্রীদের বসবাসের ঘাঁটি স্থাপন করা।
তবে এসব ছাপিয়ে দক্ষিণ মেরুতে সন্ধান পাওয়া পানির উৎসের দিকেই এখন সবার চোখ। বিজ্ঞানীরা চাঁদে এমন একটি স্থায়ি ঘাঁটি তৈরি করতে চান, যেখান থেকে মঙ্গলগ্রহসহ অন্যান্য উপগ্রহেও মহাকাশ যান পাঠানো যায়। মহাকাশযানের জ্বালানি সংগ্রহসহ নভোচারীদের থাকার ব্যবস্থাও করতে চায় শক্তিশালী দেশগুলো।
পৃথিবীর তুলনায় চাঁদ থেকে কোন মহাকাশযান পাঠাতে কম জ্বালানির দরকার হবে। এরই মধ্যে পানিতে হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন ভেঙ্গে মহাকাশযানের জন্য জ্বালানি তৈরির প্রযুক্তিও আবিস্কার হয়ে গেছে।
অনেক খনিজদ্রব্য ছাড়াও হিলিয়াম-৩ নামের বিরল বস্তুর সন্ধানও মিলেছে চাঁদে। যাকে অফুরান শক্তির উৎস বলছেন বিজ্ঞানীরা। পৃথিবীর বুকে এখনও এর অস্তিত্ব পাওয়া না গেলেও চাঁদে ১১ লাখ মেট্রিক টন হিলিয়াম-৩ মজুদ আছে। যা ১০ হাজার বছর মানবসভ্যতাকে চলার শক্তি দিতে পারে।
তাইতো মহাকাশ নিয়ে এই প্রতিযোগিতা। বিশেষজ্ঞরা এই প্রতিযোগিতার নাম দিয়েছেন সেকেন্ড স্পেস রেস। এরইমধ্যে নড়েচড়ে বসেছে যুক্তরাষ্ট্র। আবারও চাঁদে মানুষ পাঠাতে চায় দেশটি। পানির খোঁজে দক্ষিণ মেরুতে নারীসহ ৪ নভোচারীকে পাঠানোর পরিকল্পনা নাসার।
চাঁদে স্থায়ী নিবাস গড়তে ব্যস্ত ইউরোপ, রাশিয়া ও ভারতের মহাকাশ সংস্থাগুলো। এছাড়া ২০৩৫ সালের মধ্যে চাঁদে একটি যৌথ ঘাঁটি স্থাপনের পরিকল্পনা করছে চীন ও রাশিয়া।
এএইচ
আরও পড়ুন