মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মদিন আজ
প্রকাশিত : ০৮:৪৪, ২৫ জানুয়ারি ২০২১ | আপডেট: ১০:৪৮, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১
মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ১৯৭তম জন্মবার্ষিকী আজ। ১৮২৪ সালের ২৫ জানুয়ারি যশোরের কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়ী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
মধুসূদনের শৈশব ও কৈশোরের গুরুত্বপূর্ণ সময় কেটেছে সাগরদাঁড়ী গ্রাম আর পাশে বয়ে চলা কপোতাক্ষের সুধা পান করে। এ কারণেই কপোতাক্ষের বয়ে চলা ধারাকে মায়ের দুধের সঙ্গে তুলনা করে রচনা করেছেন বিখ্যাত সনেট ‘কপোতাক্ষ নদ’। তার বাবা জমিদার রাজনারায়ণ দত্ত আর মাতা জাহ্নবী দেবী।
ছেলেবেলায় নিজ গ্রামের এক পাঠশালায় মাওলানা লুৎফর রহমানের কাছে শিশু মধুসূদন তার শিক্ষাজীবন শুরু করেন। পাশাপাশি গৃহশিক্ষক হরলাল রায়ের কাছে বাংলা ও ফারসি ভাষায় শিক্ষালাভ করেন তিনি। আর জাহ্নবী দেবী শিশু মধুসূদনকে রামায়ণ, মহাভারত, পুরাণ প্রভৃতি ধর্মগ্রন্থের সঙ্গে পরিচিত করে তোলেন। সাগরদাঁড়ীতে বাল্যকাল অতিবাহিত করে ১৩ বছর বয়সে তিনি কলকাতায় যান। কৃতী ছাত্র হিসেবে তার সুনাম ছিল। কলেজে অধ্যয়নকালে তিনি নারী শিক্ষা বিষয়ে প্রবন্ধ লিখে স্বর্ণপদক লাভ করেছিলেন।
মধুসূদন দত্ত বাংলা ভাষায় মহাকাব্য রচনা এবং বাংলা কবিতায় অমিত্রাক্ষর ছন্দ প্রবর্তনের পথিকৃৎ। নাটক, প্রহসন, মহাকাব্য, পত্রকাব্য, সনেট, ট্র্যাজেডিসহ সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় তার অমর সৃষ্টি বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে উন্নত মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছে। খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করার পর তার নামের সঙ্গে ‘মাইকেল’ যুক্ত হয়।
তিনি ‘পদ্মাবতী’ নাটক, ‘তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য’, ‘একেই কি বলে সভ্যতা’ ও ‘বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ’ নামে দুটি প্রহসন, ‘মেঘনাদবধ কাব্য’, ‘ব্রজাঙ্গনা কাব্য’, ‘কৃষ্ণকুমারী’ নাটক, ‘বীরাঙ্গনা’ কাব্য ও চতুর্দশপদী কবিতা রচনা করেন। বাংলা সাহিত্যে গাম্ভীর্যপূর্ণ অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক তিনি।
১৮৪৯ সালের এপ্রিলে তার ইংরেজি কাব্যগ্রন্থ ‘দ্য ক্যাপটিভ লেডি’ প্রকাশ হয়। ১৮৫২ সালে মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের হাই স্কুল বিভাগে শিক্ষকতার চাকরি নেন। ১৮৫৪ সালে দৈনিক স্পেকটেটর পত্রিকায় সহ-সম্পাদক পদে নিযুক্ত হন। ১৮৫৭ সালে তিনি আদালতে দোভাষী হিসেবে কাজ শুরু করেন।
১৮৭৩ সালের ২৯ জুন কলকাতার একটি হাসপাতালে মাত্র ৪৯ বছর বয়সে মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
যশোরের সাগরদাঁড়ী কপোতাক্ষ নদের তীরে কবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে হাজার হাজার কবিভক্তের আগমনে মুখরিত হয়ে ওঠে সাগরদাঁড়ীর নিভৃত পল্লী।
এসএ/