ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪

মাতৃত্বকালীন ছুটির পর কাজ শুরু করা কতটুকু কঠিন?

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৫:০০, ৬ জানুয়ারি ২০১৯ | আপডেট: ১৫:৩৫, ৬ জানুয়ারি ২০১৯

ছবি: প্রতীকি

ছবি: প্রতীকি

একটি বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ২০১৪ সাল থেকে গবেষক হিসেবে কাজ করতেন সাদিয়া খান। চার বছরের মাথায় অর্থাৎ ২০১৭ সালের শেষ দিকে মাতৃত্বকালীন ছুটিতে চলে যান তিনি। পরে গত বছরের জানুয়ারিতে কাজে যোগদানও করেন। কিন্তু সে চাকরি আর বেশি দিন চালিয়ে যেতে পারেননি।

কিছুদিনের মধ্যেই চাকরি ছাড়তে বাধ্য হন রাজধানী ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ থেকে অনার্স-মাস্টার্স পাশ করা সাদিয়া।

কারণ হিসেবে তিনি গণমাধ্যমকে জানান, ‘তার সন্তানের জন্য ভালো মানের চাইল্ড ডে কেয়ার ব্যবস্থা না পাওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে তাকে।’

গবেষণার ক্যারিয়ারটি ছেড়ে দেওয়ার পর হীনমন্যতায় ভুগতেছিলেন তিনি। আর তা কাটাতেই শুরু করেন অনলাইনে পণ্য বিক্রি। রাজধানীতে নিজের বাসায় ফেসবুক লাইভে বিভিন্ন পণ্যের বিস্তারিত ক্রেতাদের কাছে বর্ণনা করছেন তিনি।

এতে এখন এক দিকে যেমন সন্তানকে সময় দেন, পাশাপাশি ঘরে বসে অনলাইনে ব্যবসা করছেন।

শুধু সাদিয়া খান নয়, এমন বহু কর্মজীবী নারী সন্তান জন্মের পর তাদের ক্যারিয়ার ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। কারণ পর্যাপ্ত এবং উপযুক্ত চাইল্ড ডে কেয়ারের অভাব।

অথচ বাংলাদেশের আইনে বলা হয়েছে, কোন প্রতিষ্ঠানে ৪০ জনের বেশি নারী কর্মী থাকলে সেখানে ৬ মাস থেকে ৬ বছর বয়সী বাচ্চাদের দেখাশোনার ব্যবস্থা থাকতে হবে।

কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান এই নিয়ম মানলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তা মানা হচ্ছে না।

এ বিষয়ে নারী অধিকার নিয়ে কাজ করা খুশি কবির জানান, ‘আইন আছে, কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তা মানা হয় না। ফলে অনেক নারীকে সন্তানের জন্য তাদের ভবিষ্যত ক্যারিয়ার ছেড়ে দিতে হচ্ছে। সরকারও এসব দিকে নজর দিচ্ছে না।’

বর্তমানে বাংলাদেশে ৪৩টি সরকারি চাইল্ড ডে কেয়ার সেন্টার রয়েছে; যার ২৪টি ঢাকায়, বাকিগুলো দেশের বিভিন্ন জেলায়।

বেসরকারী ভাবেও অনেক শহরে চাইল্ড ডে কেয়ার গড়ে উঠেছে। কিন্তু এর ব্যবহারকারীরা বলছেন, বেশিরভাগেরই প্রশিক্ষিত কর্মী নেই। যার কারণে এসব কেয়ারে বাচ্চাকে রেখে যেতে সাহস পান না অনেকে।

আর যেসব কেয়ারের মান একটু সেখানে টাকা খরচ করতে হয় বেশি। যা অনেকের সাধ্যে কুলায় না বলে অভিযোগ করছেন অনেকে।

লেবার ফোর্স সার্ভে ২০১৬-১৭-র হিসেব মতে, বাংলাদেশে প্রায় ২ কোটি নারী বিভিন্ন পেশার সাথে যুক্ত।

বাংলাদেশের আইনে একজন নারী ১৬ সপ্তাহ মাতৃত্বকালীন ছুটি পান। কিন্তু এই ছুটি কাটিয়ে আসার পরে বাচ্চাকে দেখা শোনার জন্য পর্যাপ্ত এবং উপযুক্ত ডে কেয়ার না থাকায় বড় একটি অংশ মা হওয়ার কর্মক্ষেত্র থেকে ছিটকে পড়েন।

তথ্যসূত্র: বিবিসি

এমএইচ/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি