ঢাকা, সোমবার   ১০ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

মার্চে নতুন রেকর্ড গড়তে পারে রেমিট্যান্স

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:১০, ১০ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স প্রবাহে ইতিবাচক গতি দেখা যাচ্ছে। চলতি (২০২৪-২৫) অর্থবছরের ডিসেম্বরে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২৬৪ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। এর পরের অবস্থানে রয়েছে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস, যেখানে এসেছে ২৫৩ কোটি ডলার। তবে মার্চ মাসে এই রেকর্ড ভাঙার সম্ভাবনা রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মার্চের প্রথম ৮ দিনে প্রবাসীরা ৮১ কোটি ৪২ লাখ ৯০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৯,৯৩৪ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে)। প্রতিদিন গড়ে আসছে ১০ কোটি ডলারের বেশি। এ ধারা অব্যাহত থাকলে মার্চ মাসে রেমিট্যান্স ৩ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি পৌঁছাতে পারে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর অর্থপাচার কমেছে এবং হুন্ডি ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য হ্রাস পেয়েছে। পাশাপাশি, ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানোর আকর্ষণও বেড়েছে। আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষেও রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ছে।

তথ্য বলছে, আলোচিত সময়ে (মার্চের প্রথম ৮ দিন) রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ২৩ কোটি ১৩ লাখ ডলারের বেশি, বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের মধ্যে এক ব্যাংকের (কৃষি ব্যাংক) মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৬ কোটি ৮৪ লাখ ৫০ হাজার ডলার। বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৫১ কোটি ২৯ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৫ লাখ ৪০ হাজার ডলার।

এসময়ে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি এমন ব্যাংকের সংখ্যা ৯টি। এসব ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বা বিডিবিএল, বিশেষায়িত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক। বেসরকারি ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে সিটিজেনস ব্যাংক, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক ও পদ্মা ব্যাংক। এছাড়া বিদেশি ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া এবং উরি ব্যাংক।

চলতি অর্থবছরের আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) রেমিট্যান্স এসেছে এক হাজার ৮৪৯ কোটি ডলার। যেখানে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে এসেছিল এক হাজার ৪৯৪ কোটি ডলার। সে হিসাবে গত অর্থবছরের প্রথম আট মাসের চেয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে রেমিট্যান্স বেড়েছে ৩৫৫ কোটি ডলার।

এর আগে গত ডিসেম্বরে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স আসে দেশে। এ নিয়ে অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস আগস্ট থেকে টানা সাত মাস দুই বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করবে।

অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার, আগস্টে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ ডলার, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ ডলার, নভেম্বরে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে রেকর্ড ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি ডলার এবং ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।

গত ডিসেম্বরে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে, একক মাস হিসেবে আগে কখনোই এত পরিমাণ রেমিট্যান্স আসেনি। এর আগে করোনাকালীন ২০২০ সালের জুলাইয়ে ২ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। এবার সেই রেকর্ড ভাঙলো ২০২৪ সালের বিজয়ের মাস ডিসেম্বর।

২০২৪ সালের শেষ মাস ডিসেম্বরের পুরো সময়ে রেমিট্যান্স এসেছে প্রায় ২৬৪ কোটি ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৬৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার বেশি। গত বছরের ডিসেম্বরে এসেছিল ১৯৯ কোটি ১০ লাখ ডলার। ২০২৪ সালের জুলাই মাস বাদে বাকি ১১ মাসই দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে।

রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়ের ইতিবাচক ধারায় বেড়েছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ। সবশেষ তথ্য বলছে, দেশের রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ দশমিক ৯০ বিলিয়ন ডলার। দেশের গ্রস রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক ১৩ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৬১৩ কোটি ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২০ দশমিক ৯০ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৯০ কোটি ডলার।

তবে এ দুই হিসাবের বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের আরও একটি হিসাব রয়েছে, সেটি ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ। এ তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে শুধু আইএমএফকে প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ হিসাবে আইএমএফের এসডিআর খাতে থাকা ডলার, ব্যাংকগুলোর বৈদেশিক মুদ্রা ক্লিয়ারিং হিসাবে থাকা বৈদেশিক মুদ্রা এবং আকুর বিল বাদ দিয়ে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের হিসাব করা হয়।

সে হিসাবে দেশের ব্যয়যোগ্য প্রকৃত রিজার্ভ এখন ১৫ বিলিয়ন ডলারের কিছুটা উপরে। সাধারণত একটি দেশের ন্যূনতম তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমান রিজার্ভ থাকতে হয়। আমাদের দেশে সে পরিমাণ রিজার্ভ রয়েছে। আর নিট রিজার্ভ গণনা করা হয় আইএমএফের ‘বিপিএম-৬’ পরিমাপ অনুসারে। মোট রিজার্ভ থেকে স্বল্পমেয়াদি দায় বাদ দিলে নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের পরিমাণ পাওয়া যায়। নিউজ আকারে সাজিয়ে দাও

এমবি//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি