মাসিক দেরীতে হওয়া কী স্বাভাবিক?
প্রকাশিত : ১৯:০৯, ২৫ অক্টোবর ২০১৮
নারীদের সময়মতো মাসিক না হওয়াটা বর্তমান সময়ের একটি কমন সমস্যা। সময়মতো মাসিক না হলে নারীরা বেশ চিন্তায় পড়ে যান। মাসিক কিছুটা লেট হওয়া কী স্বাভাবিক?
সাধারণত প্রতি ২৮ থেকে ৩৫ দিন পর পর একজন নারীর পিরিয়ড হয়ে থাকে। ১২ বছর থেকে ৫৫ বছর বয়সী নারীদের ক্ষেত্রে এমনটিই হয়ে থাকে।
প্রাপ্তবয়স্ক একজন নারীর নিয়মিত ও সময়মতো পিরিয়ড হওয়াটা সুস্বাস্থ্যের লক্ষণ। তা যদি অনিয়মিত হয়ে পড়ে, তার মানে হয়তো তার শরীরে কোনো সমস্যা আছে। এক্ষেত্রে কোনো অসুস্থতা শরীরে ভর করেছে কিনা বা জীবনচর্চায় কোনো ক্ষতিকর অভ্যাস যুক্ত হয়েছে কিনা তার দিকে নজর দেওয়া উচিত। পিরিয়ড লেট হবার পেছনে সাধারণত যে বিষয়গুলো দায়ী তা জেনে রাখুন।
কতোটা দেরি হলে তাকে ‘লেট’ বলা যায়?
বেশিরভাগ নারীর মাসিকের চক্র একই থাকে। তবে এক সপ্তাহ দেরি হওয়াটা স্বাভাবিক বলেই ধরা যায়। যেমন একজন নারীর মাসিক হয় ২৫ দিন পর পর। কোনো এক মাসে ৩০ দিন বা ৩১ দিন পর তার মাসিক হতেই পারে। আটদিন বা তার বেশিদিন দেরি হলে তাকে ‘লেট’ বলে গণ্য করতে পারেন।
দেরী হওয়ার কারণ
বেশকিছু কারণে পিরিয়ড সাময়ীকভাবে বন্ধ থাকতে পারে বা দেরি হতে পারে। যেমন-
গর্ভাবস্থা: পিরিয়ড লেট হলে প্রথমেই নিশ্চিত করুন আপনি গর্ভবতী কিনা।
বয়স: টিনেজ বয়সী ও মধ্যবয়সী নারীদের মাঝে অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর পেছনে কারণটা হলো হরমোন।
স্ট্রেস: লম্বা সময় স্ট্রেসে থাকলে অনেকেরই পিরিয়ড লেট হতে পারে।
আর্লি প্রেগনেন্সি লস: একজন নারী গর্ভবতী হয়ে পড়েছিলেন, কিন্তু তা জানতেন না, এরপর নিজে থেকেই তার মিসক্যারিজ বা গর্ভপাত হয়ে যেতে পারে। এ ঘটনায় সাধারণ পিরিয়ডের তুলনায় কিছুদিন পর ভারী রক্তপাত হতে পারে, যাকে অনেকেই লেট পিরিয়ড বলে ধরে নেন।
কম ওজন: ওজন কম হলে সময়মতো পিরিয়ড নাও হতে পারে। এমনকি কিছুদিন বন্ধও থাকতে পারে।
ফাইব্রয়েডস: জরায়ুতে টিউমার ধরণের এক ধরণের বৃদ্ধি হলো ফাইব্রয়েডস। এগুলো পিরিয়ডের স্বাভাবিক চক্রকে বাঁধা দিতে পারে।
হরমোনাল বার্থ কন্ট্রোল: জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করা, যেমন পিল, প্যাচ, ইনজেকশন, আইইউডি- এগুলো ব্যবহার করলে পিরিয়ড লেট হওয়া বা পরিবর্তন হওয়াটা স্বাভাবিক।
স্বাস্থ্য সমস্যা: মনোনিউক্লিওসিস, ঠাণ্ডা, সর্দি, গলার ইনফেকশন- এ ধরণের সমস্যায় পিরিয়ড লেট হতে পারে। তবে বড় কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন থাইরয়েডের সমস্যা বা পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোমের কারণেও পিরিয়ড লেট হতে দেখা যায়।
নিয়মিত পিরিয়ড চাইলে যা করতে হবে
পিরিয়ড নিয়মিত রাখতে চাইলে স্বাস্থ্য ভালো রাখতে হবে। খাদ্যভ্যাস ভালো রাখুন, প্রসেসড খাবার থেকে দূরে থাকুন, রাতে নিয়মিত ৮ ঘণ্টা ঘুমান, নিয়মিত ব্যায়াম করুন ও স্ট্রেস কম রাখার পদ্ধতি ব্যবহার করুন।
যেসব নারীর মেনোপজের বয়স হয়ে এসেছে তাদের জন্য স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন আরও বেশি জরুরী। কারণ মেনোপজের পর পরই অনেক রোগের প্রকোপ বাড়তে পারে।
একবার পিরিয়ড লেট হলে চিন্তিত হবার কিছু নেই। তবে পিরিয়ডের দিকে খেয়াল রাখুন। তিন মাস টানা পিরিয়ড না হলে, বছরে নয়বারের কম পিরিয়ড হলে, বা প্রতিবার পিরিয়ড হবার মাঝে ৩৫ দিনের বেশি বিরতি থাকলে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে কথা বলুন।
সূত্র: হাফিংটন পোস্ট
/ এআর /