ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪

মাসুদ রানা থেকে সোহেল রানা

সোহাগ আশরাফ

প্রকাশিত : ১৩:০৩, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৭

আমরা যারা তরুণ প্রজন্ম সোহেল রানাকে চিনি তারা হয়তো অনেকেই জানি না যে শুরুর দিকে তিনি পরিচিত ছিলেন মাসুদ রানা ও মাসুদ পারভেজ নামে। তবে সোহেল রানা যখন পর্দা কাঁপিয়েছেন তখনকার দর্শকরা সব নামেই তাঁকে চেনেন। কারণ বাংলাদেশি সিনেমার ড্যসিং হিরো খ্যাত ‘মাসুদ পারভেজ, মাসুদ রানা ও ‘সোহেল রানা’ সব নামেই দর্শকদের কাছে পরিচিত এবং জনপ্রিয় ছিলেন। তবে এই নাম গুলোর মধ্যে সাধারণ মানুষ তাঁকে অভিনেতা সোহেল রানা হিসেবেই বেশি চেনেন। কিন্তু ব্যক্তি মাসুদ রানা বা মাসুদ পারভেজ কিভাবে সোহেল রানা হয়ে উঠলেন তা হয়তো অনেকেরই অজানা।

স্বাধীনতার পর বাংলা চলচ্চিত্রে যে কজন তারকা বাংলাদেশি সিনেমাকে উজ্জল করে তুলেছিলেন তাদের মধ্যে সেহেল রানা ছিলেন অন্যতম। প্রযোজনা, পরিচালনা ও অভিনয় এই তিন ক্ষেত্রেই সফল একজন মানুষ তিনি। বাংলা চলচ্চিত্রের স্বনামধন্য প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘পারভেজ ফিল্মস’ এর কর্ণধার এই সোহেল রানা।

কিভাবে ব্যক্তি মাসুদ পারভেজ ও মাসুদ রানা হয়ে উঠলেন সোহেল রানা তা জানতে চাইলে এই খ্যাতিমান অভিনেতা, প্রযোজক, পরিচালক জানান, মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি সরাসরি যুদ্ধ করেন। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর চলচ্চিত্র নির্মাণে এগিয়ে আসেন তিনি। প্রযোজক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন চাষী নজরুল ইসলাম পরিচালিত ‘ওরা ১১ জন’ সিনেমা দিয়ে। এই সিনেমার নায়ক ছিলেন খসরু। যার আসল নাম কামরুল আলম খান। তিনিও ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা। সোহেল রানার নিকটতম বন্ধু ছিলেন খসরু। মুক্তিযুদ্ধ শেষ করে সোহেল রানা ও তার বন্ধুরা বেশ চিন্তায় পড়ে গেলেন। কী করবেন এই চিন্তা যখন তাদের মাথায় ঠিক তখনই চলচ্চিত্রের কথা মনে পড়ে যায় এই তরুণদের। তারা ভাবলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় নিজেদের জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়েই তৈরি করবেন চলচ্চিত্র। সেই ভাবনা থেকেই চলচ্চিত্রে নাম লেখালেন সোহেল রানা। শুরুটা ঠিক এভাবেই ছিল। মাসুদ রানা নামে প্রযোজক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলেন তিনি। কিন্তু পরে হয়ে গেলেন নায়ক। মজার ব্যাপার হলো ‘মাসুদ রানা’ সিনেমার প্রধান চরিত্রের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হলো। চরিত্র নির্বাচনের জন্য এসএম শফি, সুমিতা দেবী, মাসুদ পারভেজ আর আহমেদ জামান চৌধুরীকে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হলো। সারাদেশ থেকে অনেকেই ছবি তুলে পাঠালেন মাসুদ রানা চরিত্রটির জন্য। কিন্তু ঘটল এক মজার ঘটনা। এসএম শফি, সুমিতা দেবী আর আহমেদ জামান চৌধুরী হঠাৎ একদিন মাসুদ পারভেজকে বললেন, ‘তুমিই হবে মাসুদ রানা।’ আহমেদ জামান চৌধুরী তখনই নায়ক হিসেবে তার নাম বদলে দিলেন। নাম রাখলেন সোহেল রানা। সেই থেকে মাসুদ রানা ও মাসুদ পারভেজ হয়ে গেলেন সোহেল রানা। ওই সিনেমাটি মুক্তির মাধ্যমে দর্শকরা তাঁকে পর্দায় দেখতে পান ১৯৭৪ সালে।

উল্লেখ্য, মাসুদ পারভেজ জন্মগ্রহণ করেন ১৯৪৬ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি রাজধানী ঢাকাতে। তাঁর জন্ম ঢাকাতে হলেও পৈতৃক বাসস্থান বরিশাল জেলায়। তাঁর স্ত্রী ডা. জিনাত পারভেজ এবং একমাত্র পুত্র সন্তান মাশরুর পারভেজ জীবরান। তিন ভাইয়ের অন্য দুই ভাই কামাল পারভেজ ও মাসুম পারভেজ রুবেল।

এসএ/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি