মায়া সভ্যতার ৬০ হাজার নিদর্শন সন্ধান
প্রকাশিত : ১০:২৫, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ | আপডেট: ১০:৩৫, ২৯ মার্চ ২০১৮
মায়া সভ্যতার ৬০ হাজার নিদর্শনের সন্ধান পেয়েছেন প্রত্নতিত্ত্ববিদেরা। গুয়েতেমালায় পাওয়া এসব নিদর্শনের মধ্যে রয়েছে সাত তলা পিরামিড, রাজপ্রাসাদ, সুউচ্চ সড়ক।
যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানার তুলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল প্রত্নতত্ত্ববিদ মায়া সভ্যতার ৬০ হাজার স্থাপনা পেয়েছেন। বৃহস্পতিবার গুয়েতেমালার প্যাকুয়াম ফাউন্ডেশন এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞান সাময়িকী ‘লাইভ সায়েন্সে’ মায়া সভ্যতার নিদর্শন পাওয়ার বিষয়ে একটি নিবন্ধ প্রকাশ করা হয়েছে।
মায়া সভ্যতার হাজার হাজার নিদর্শনের সন্ধান পেয়েছেন প্রত্নতত্ত্ববিদরা। গ্রাউন্ড-পেনেট্রেটেড লেজার প্রযুক্তি ব্যবহার করে ৯০০ খ্রিস্টাব্দের শেষ দিকে হারিয়ে যাওয়া এসব নিদর্শন পেয়েছেন তারা।
মায়া সভ্যতার অধিবাসীরা ওই অঞ্চল ছেড়ে চলে যাওয়ার পর থেকেই নিদর্শনগুলো কয়েক শতাব্দী ধরে জঙ্গলে পাতা-গুল্মের মধ্যে ঢাকা ছিল।
মেসো-আমেরিকায় বেড়ে ওঠা ওই সভ্যতা অন্যদের চেয়ে প্রযুক্তির দিক দিয়ে উন্নত ছিল। অত্যাধুনিক গণিত এবং প্রকৌশলবিদরা এগুলো চিহ্নিত করেছেন। বর্তমানে তারা মধ্য আমেরিকা ও দক্ষিণ মেক্সিকোজুড়ে আরও নিদর্শন খোঁজার কাজ করছেন।
প্রত্নতত্ত্ববিদদের দলটি পেটেন জঙ্গলের প্রায় ৮১০ বর্গমাইল (২,১০০ বর্গকিলোমিটার) এলাকায় গবেষণা চালিয়েছে। গুয়েতেমালার পর্যটন এলাকা তিকাল শহরে একটি সাত তলা পিরামিডের সন্ধান পেয়েছেন তারা। পিরামিডটি প্রায় ১০০ ফুট লম্বা (৩০ মিটার)। এতদিন একে ছোট পাহাড় ভাবা হতো। এ জন্য এটি লোকচক্ষুর আড়ালে ছিল। তিকাল একসময় মায়া সভ্যতার কেন্দ্রবিন্দু ছিল।
গবেষণা দলের প্রধান তুলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফ্রান্সিসকো এস্ত্রাদ-বেলি বলেন, ‘মায়া সভ্যতার বাসিন্দাদের তৈরি অকল্পনীয় সুদৃঢ় এবং প্রাকৃতিক ভূদৃশ্যগুলো পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন কাঠামো নির্মাণে নতুন মাত্রা এনে দেবে।’
গবেষক দল ‘লিডার’ নামের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে আকাশ থেকে তোলা ছবিতে প্রত্নতাত্ত্বিকরা ঘন জঙ্গলের গাছের আচ্ছাদন সরিয়ে ফেলতে সক্ষম হন। ‘লিডার’-এ লেজার রশ্মি ব্যবহার করে লক্ষ্যবস্তুর ত্রিমাত্রিক প্রতিচ্ছবি তৈরি করা যায়। এর ফলে তারা ঘন গাছ ও লতাগুল্মের আড়ালে ঢাকা পড়া সভ্যতার বিভিন্ন নিদর্শন আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছেন।
তুলেন ইউনিভার্সিটির প্রত্নতাত্ত্বিক ডক্টর মারসেলো ক্যানুটো বলেন, ‘আমরা পশ্চিমারা দম্ভ করতাম গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে জটিল সভ্যতার বিকাশ সম্ভব নয়। ধারণা ছিল, সেখানে সভ্যতা ধ্বংসের মুখে পতিত হয়। কিন্তু মধ্য আমেরিকা মহাদেশ ও ক্যাম্বোডিয়ার অ্যাংকর ওয়াটে নতুন আবিষ্কারের ফলে এখন মনে হচ্ছে সমৃদ্ধ সমাজ ব্যবস্থার যাত্রা শুরুই হয়েছিল ওই গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চল থেকে।’
সূত্র : এনডিটিভি
/ এআর /