ঢাকা, শুক্রবার   ২১ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

মুক্তিপণ ২৫ লাখ টাকা দিয়েও পরিবার পেল লাশ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৭:৫৪, ২০ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

ঠাকুরগাঁওয়ে অপহরণের ২৫ দিন পর এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। প্রেমের প্রলোভনে ফেলে তাকে অপহরণ করা হয়েছিল। সেই যুবকের নাম মিলন হোসেন (২৩)।

অপহরণ ও হত্যার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করেছে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। তারা হলেন সেজান আলী (২৬), রত্মা আক্তার রিভা (১৯) ও মুরাদ হোসেন (২৫)।

হত্যার শিকার মিলন ঠাকুরগাঁও পীরগঞ্জ উপজেলার খনগাঁওয়ের চাপাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি দিনাজপুর সরকারি পলিটেকনিক কলেজের ছাত্র ছিলেন।

গ্রেফতার সেজান ও মুরাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) সেহরির সময় সদর উপজেলার শিবগঞ্জ মহেশপুর বিট বাজার এলাকার সেজান আলীর বাড়ির পরিত্যক্ত টয়লেট থেকে মিলনের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ভোরে রত্মাকেও নিজবাসা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

মরদেহ উদ্ধারের পর ভোরেই বিক্ষুব্ধ জনতা অপহরণকারী সেজানের বাড়ি-ঘর ভাঙচুর করে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। খবর পেয়ে ফায়ারসার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গেলেও তাদের আগুন নেভাতে বাঁধা দেয় বিক্ষুদ্ধরা। 

অন্যদিকে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জেলা প্রশাসক কার্যালয় ঘেরাও ও সড়ক অবরোধ করেন স্থানীয়রা। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা বিক্ষোভস্থলে উপস্থিত হয়ে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ ও অবরোধ সরিয়ে ফেলা হয়।

ভুক্তভোগী পরিবার ও পুলিশ সূত্র জানায়, অনলাইনে প্রেমের ফাঁদে ফেলে কলেজপড়ুয়া মিলনকে অপহরণ করে চক্রটি। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৮টায় ঠাকুরগাঁও পলিটেকনিক ইনিস্টিটিউটের পেছনে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে নিখোঁজ হন মিলন।

ঘটনার দিন রাত ১টার সময় ভুক্তভোগী পরিবারকে মুঠোফোনে অপহরণের বিষয়টি জানায় অপহরণকারীরা। প্রথমে ১২ ঘণ্টার মধ্যেই মুক্তিপণের ৩ লাখ টাকা চায় অপহরণকারীরা। পরদিন দুপুরে টাকাটা দিতে রাজি হয় মিলনের পরিবার। তবে পরে চক্রটি ৫ লাখ দাবি করে। পরদিন আরও বেড়ে ১০ লাখ হয়।

তিনদিন পরে ১৫ লাখ চায় চক্রটি। সবশেষে ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। ৯ মার্চ রোববার রাতে পুলিশকে না জানিয়ে মুক্তিপণের ২৫ লাখ টাকা অপহরণকারী চক্রের কাছে বুঝিয়ে দেয় অপহৃত মিলনের বাবা পানজাব আলী। টাকা দেবার পরও ছেলেকে না পেলে পুলিশকে সবটা জানালে পরে অনুসন্ধানে নামে পুলিশ।

পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম জানান, বুধবার রাতে মিলনকে অপহরণে ঘটনায় আমরা দুইজনকে গ্রেফতার করি। তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করলে ও তাদের দেখানো মতে আমরা লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছি। পরে বৃহস্পতিবার একটি মেয়েকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মোট তিনজন আসামিকে গ্রেফতার করেছি।

তিনি আরও জানান, এ চক্রটি এ ধরনের ঘটনা এর আগেও ঘটিয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। আর কেউ জড়িত আছে কি না সে বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ভোর রাতেই পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। গ্রেফতার আসামিদের কাছ থেকে ৪ লাখ টাকা জব্দ করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনি অন্যান্য কার্যক্রম অব্যাহত আছে।

এসএস//
 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি