ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র (ভিডিও)

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৪৭, ২৭ মার্চ ২০২১ | আপডেট: ১১:৫১, ২৭ মার্চ ২০২১

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে বড় একটি জায়গা জুড়ে আছে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র। শুরুর নাম স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র। প্রতিষ্ঠার দিনই বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা প্রচার হয় ছয়বার। ‘আজ হইতে বাংলাদেশ স্বাধীন’- জাতির পিতার এই ঘোষণা বাঙালির কাছে পৌঁছে দেয় এই বেতার কেন্দ্রটি। নির্মাতা কাওসার মাহমুদের ‘শব্দ সেনা, যুদ্ধ দিনের মুক্তির বার্তা’ তথ্যচিত্রে এমন অনেক অজানা তথ্য আর স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের দুঃসাহসী অভিযানের গল্প উঠে আসছে। 

২৬ মার্চ, ১৯৭১। দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা এম এ হান্নান চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন। তবে কারিগরী সীমাবদ্ধতার কারণে ঘোষণা পাঠ খুব বেশি মানুষের কাছে পৌঁছায়নি। 

ওইদিনই তৎকালীন রেডিও পাকিস্তানের চট্টগ্রাম কেন্দ্রের একদল নিবেদিত কর্মী ও কলাকুশলীদের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠা পায় স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র। সন্ধ্যায় শুরু হয় সম্প্রচার। বেলাল মোহাম্মদ, আবদুল্লাহ আল ফারুক, আবুল কাশেম সন্দ্বীপ, এম এ হান্নানসহ অনেকেই ছিলেন দুঃসাহসী এই অভিযাত্রায়। 

স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র গঠনের পর বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা প্রথম পাঠ করেন চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি কলেজের সহ-অধ্যক্ষ আবুল কাশেম সন্দ্বীপ। 

স্বাধীনতার ঘোষণা আরও যারা পাঠ করেছিলেন তাদের মধ্যে আছেন বেলাল মোহাম্মদও। তিনি জানান, আমি, আবুল কালাম সন্দ্বিপ এবং আবদুল্লাহ আল ফারুক প্রচার করেছি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।

জার্মান প্রবাসী আবদুল্লাহ আল ফারুকও বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন। তিনি জানান, এভাবে স্বাধীনতার কথাটা চারিদিকে চাউর হয়ে গিয়েছিল।

আওয়ামী লীগ নেতা এম এ হান্নানের কন্ঠে আবারও বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ শোনা যায়। 

‘শব্দ সেনা, যুদ্ধ দিনের মুক্তির বার্তা’ তথ্যচিত্রে কালুরঘাটের স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠা, কর্মীদের অদম্য মনোবল আর দুঃসাহসী যাত্রার অজানা গল্প তুলে আনছেন নির্মাতা কাওসার মাহমুদ। প্রায় এক যুগ ধরে ঐতিহাসিক তথ্য, নথি, দলিল, অডিও ও ভিডিও ক্লিপ সংগ্রহ আর ইতিহাসের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার নেয়ার পর তথ্যচিত্রটির নির্মাণ কাজে হাত দিয়েছেন তিনি। 

তথ্যচিত্রের তথ্য বলছে, ২৬ মার্চ সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে কালুরঘাটে বিপ্লবী বেতার কেন্দ্রের সম্প্রচার শুরু হয়। সম্প্রচার চলে ৪০ মিনিট ধরে। ওই সময়ের মধ্যেই ছয়জন বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন। 

শব্দ সেনা-যুদ্ধ দিনের মুক্তির বার্তা নির্মাতা কাওসার মাহমুদ বলেন, সন্ধ্যা বেলায় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের যে অনুষ্ঠানগুলো হয়েছিল সেগুলোর বিস্তার ঘটেছিল অনেক বেশি। অনেকে আগরতলা থেকে ধরে এটাকে আবার বুস্টাব করেছে। আগ্রাবাদের বেশ কয়েকটি জাহাজে এটা রিসিপ করতে পেরেছে। তৎকালীন সময়ে আর্মীরা যে রিসিপ করতে পেরেছে সেটি থেকেই আমরা কিছু রেফারেন্স পাই। 

২৮ মার্চ স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্রের নামে পরিবর্তন আসে। নতুন নাম হয় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র। ৩০ মার্চ পাকিস্তানী বাহিনী বোমা বর্ষণ করলে বন্ধ হয়ে যায় কেন্দ্রটি। 

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের দ্বিতীয় পর্ব ছিল ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের বাগাফা জঙ্গল ও আগরতলায়। তৃতীয় পর্ব শুরু হয় ২৫ মে কলকাতায়। এই পর্বে রচিত হয় কালজয়ী সব গান, নাটক আর কথিকা। 

শব্দ সৈনিকদের বিপ্লবী চেতনা আর দুর্ধর্ষ সাহসের গল্প ‘শব্দ সেনা’ মুক্তি পাবে এ বছরই, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর বছরে।

ভিডিও-

এএইচ/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি