মুখের ভাষা কেড়ে নেয়ায় রক্ত দেয় বাঙালি (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১১:১৫, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২১
শুরু হলো ভাষার মাস। পাকিস্তান রাষ্ট্র সৃষ্টির এক বছরের মাথায় বাঙালির স্বপ্নভঙ্গ। মাতৃভাষার ওপর আঘাত। মায়ের ভাষা, মুখের ভাষা কেড়ে নেয়ার প্রতিবাদে রক্ত দেয় বাঙালি। একুশের চেতনা বাঙালিকে টেনে নিয়ে যায় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে। একান্ত আলাপে শোক থেকে প্রতিবাদের শক্তি ও প্রেরণার কথা বলেছেন বায়ান্নর ভাষা সংগ্রামী আহমদ রফিক।
১৯৪৮, সদ্য স্বাধীন দেশ পাকিস্তান। কার্জন হলের ছাত্রসভায় মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঘোষণা দিলেন উর্দু হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা। সাথে সাথেই ছাত্রসমাজের প্রতিবাদ। বাঙালির স্লোগান একটাই-‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’।
১৯৫০ সালে ওই স্লোগানের সঙ্গে যুক্ত হয়- ‘রাজবন্দীর মুক্তি চাই’। পূর্বসূরি গভর্ণর জিন্নাহ আর লিয়াকত আলী খানের তত্ত্বে বাঙালির মায়ের ভাষা কেড়ে নেয়ার ষড়যন্ত্রে প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমউদ্দিন।
বায়ান্নর একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা ঘোষণার দাবিতে ধর্মঘট। ১৪৪ ধারা ভেঙে ছাত্রদের মিছিল। গুলিতে রঞ্জিত হয় রাজপথ। রফিক, জব্বার, বরকত, সালামের রক্তে বিপ্লবের সূচনা।
রক্তের বিনিময়ে দাবি আদায় হলো। একুশের চেতনায় ’৫৪তে ভাসানী-সোহরাওয়ার্দীর যুক্তফ্রন্ট গঠন, প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। ’৬৬ সালে বঙ্গবন্ধুর ছয়দফা। একাত্তরের ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ।
বায়ান্নর চেতনায় মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতা।
ভাষা সংগ্রামী আহমদ রফিক বলেন, মূল স্লোগান ছিল ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ ‘রাজবন্দিদের মুক্তি চাই’ ‘সর্বস্তরে বাংলা চালু করো’। এটি ছিল জাতীয়তাবাদী চেতনার পুরোপুরি প্রতিফলন। আর শহীদ মিনারও একইভাবে সেই শোক, সেই প্রতিবাদ এবং সেই আন্দোলনের প্রেরণা।
তবে উচ্চ আদালত, উচ্চশিক্ষা কিংবা বেসরকারি স্তরে বাংলা পায়নি জীবিকার স্বীকৃতি- এটি এখনও একুশের মূল দাবির অপ্রাপ্তি।
আহমদ রফিক আরও বলেন, মানচিত্র পেয়েছি, একটি পতাকা পেয়েছি, একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছি। কিন্তু জীবিকার ভাষা হিসেবে মাতৃভাষা পাইনি। ইউরোপের দিকে তাকান, তাহলে দেখবেন ওদের মাতৃভাষাই ওদের রাষ্ট্রভাষা, ওদের রাষ্ট্রভাষাই ওদের জাতীয় ভাষা, জাতীয় ভাষা ওদের জীবিকার ভাষা। এটা নিয়েই ওদের জাতিরাষ্ট্র। এখানেই আমাদের খামতি-ঘাটতি রয়ে গেছে।
একটি মাতৃভাষা ভিত্তিক জাতিরাষ্ট্রের ভীত তৈরি হয়েছিলো বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে।
ভিডিও-
এএইচ/