মুন্সিগঞ্জে মোটরসাইকেল কারখানা করছে জাপানের হোন্ডা
প্রকাশিত : ১৩:৫৬, ৫ নভেম্বর ২০১৭
বাংলাদেশে বিনিয়োগ করছে জাপানের মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হোন্ডা মোটর করপোরেশন। এ লক্ষে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় প্রতিষ্ঠিত আবদুল মোনেম ইকোনমিক জোনে জমি ইজারা নিয়েছে কোম্পানিটি। সেখানে ইতিমধ্যে মোটরসাইকেল উৎপাদন কারখানার নির্মাণকাজ শুরু করেছে।
আজ রোববার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর উপস্থিতিতে কারখানার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে।
আগামী বছরের মধ্যে (২০১৮) মোটরসাইকেল উৎপাদন করতে চায় হোন্ডা। পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রথম বছর তারা ১ লাখ মোটরসাইকেল উৎপাদন করবে। পঞ্চম বছরে উৎপাদনের পরিমাণ ৩ লাখ ইউনিটে উন্নীত করতে চায় তারা। শুরুতে নতুন কারখানায় প্রায় ৩০০ লোকের কর্মসংস্থান হবে। পরে এ সংখ্যা দাঁড়াবে ৫০০ জনে।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হোন্ডা মোটর করপোরেশন। এটি মোটরসাইকেল ছাড়াও গাড়ি, রোবট, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের যন্ত্র এবং উড়োজাহাজ পণ্য উৎপাদন করে।
সর্বশেষ আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (১ এপ্রিল থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর) কোম্পানিটি ৬৬ লাখ ৯১ হাজার ইউনিট মোটরসাইকেল উৎপাদন করে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১৪ শতাংশ বেশি।
বাংলাদেশে ২০১৩ সালে বাংলাদেশ হোন্ডা প্রাইভেট লিমিটেড নামের একটি কোম্পানি খুলে প্রতিষ্ঠানটি গাজীপুরে একটি মোটরসাইকেল সংযোজন কারখানা করে। এতে ৩০ শতাংশ মালিকানা ছিল রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের (বিএসইসি)। নতুন এ প্রকল্পেও একই হারে অংশীদারত্ব থাকছে বিএসইসির।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, নতুন কারখানায় হোন্ডা তাদের উৎপাদনের পরিমাণ বাড়াবে। এতে মোটরসাইকেলের বিভিন্ন অংশ উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। এতে এ দেশে মূল্য সংযোজন বাড়বে এবং মোটরসাইকেলের দাম কমবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
হোন্ডা তাদের নতুন কারখানায় প্রায় ৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার বিনিয়োগ করবে, বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা। জমির ইজারা, কারখানার ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ, যন্ত্রপাতি আমদানি ও অন্যান্য ব্যয় এর অন্তর্ভুক্ত। সম্প্রতি হোন্ডার সঙ্গে আবদুল মোনেম ইকোনমিক জোনের জমি ইজারার চুক্তি হয়। আবদুল মোনেম ইকোনমিক জোনে কারখানা নির্মাণ শুরু করা প্রথম প্রতিষ্ঠান হবে হোন্ডা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আবদুল মোনেম ইকোনমিক জোনের পরিচালক এ গফুর গণমাধ্যমকে বলেন, তাদের সঙ্গে প্রায় ২৫ একর জমি ইজারার চুক্তি হয়েছে।
বাংলাদেশে মোটরসাইকেলের বাজার ধরতে হোন্ডা নতুন বিনিয়োগে আসছে। মোটরসাইকেল সংযোজনকারীদের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালে এ দেশে প্রায় ২ লাখ মোটরসাইকেল বিক্রি হয়েছে। বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর বিক্রির পরিমাণ বেড়েছে গড়ে ৩০ শতাংশ হারে। চলতি বছর মোটরসাইকেল বিক্রির পরিমাণ আরও বেশি হারে বাড়বে বলে ধারণা কোম্পানিগুলোর।
জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশনের (জেট্রো) তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ২৪৫টি জাপানি কোম্পানি বিনিয়োগ করেছে। জাপানিদের বেশির ভাগ বিনিয়োগ এসেছে টেলিযোগাযোগ, সার, তৈরি পোশাক, বিদ্যুৎ ও রাসায়নিক খাতে। এসব বেশ ভালো ব্যবসা করছে বলেও তথ্য উঠে এসেছে জেট্রোর সাম্প্রতিক এক জরিপে। এতে বলা হয়, বাংলাদেশে কর্মরত ৬৭ শতাংশ জাপানি কোম্পানি ধারণা করে এ বছর তাদের মুনাফা পরিস্থিতির উন্নতি হবে। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় ১৯টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে শীর্ষে আছে।
ডব্লিউএন
আরও পড়ুন