মৃত্যুবার্ষিকীতে এম আর সিদ্দীকীকে শ্রদ্ধা
প্রকাশিত : ১৩:৩০, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ | আপডেট: ১৭:৫৮, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, বঙ্গবন্ধু সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী, সাবেক রাষ্ট্রদূত, স্বাধীন বাংলাদেশে শিল্প-বাণিজ্যকে এগিয়ে নেওয়ার অন্যতম উদ্যোক্তা লায়ন মোস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকীর (এম আর সিদ্দিকী) ২৬ তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৯২ সালের এই দিনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনে যারা নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম এম আর সিদ্দিকী। তিনি ১৯২৫ সালের ১ মার্চ সীতাকুণ্ড উপজেলার দক্ষিণ-রহমতনগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম মোহাম্মদ হোসেন চৌধুরী। ১৯৪৮ সালে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাণিজ্যে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন। দেশে ফিরে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন।
১৯৫১ সালে তিনি সরকারি বৃত্তি নিয়ে চাটার্ড-একাউন্টেন্সিতে (সিএ) পড়তে যুক্তরাজ্যে যান এবং লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সিএ ডিগ্রি অর্জন করেন। তার মেধা ও বিচক্ষণতা কাজে লাগাতে বঙ্গবন্ধু তাকে রাজনীতিতে নিয়ে আসেন। বঙ্গবন্ধুরি নির্দেশে এম আর সিদ্দিকী ১৯৬৪ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। এম আর সিদ্দিকী নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ নির্বাচিত হন।
১৯৬৪ থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত তিনি চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি বিশেষ অবদান রাখেন। ১৯৭০ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচনে তিনি সীতাকুণ্ড এলাকা থেকে জাতীয় সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন এবং বঙ্গবন্ধু সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পান।
মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি আগরতলায় নির্বাসিত থেকে মুজিবনগর সরকারের কার্যক্রম শুরু করেন। এসময় বরিশাল, ফরিদপুর, ঢাকাসহ চট্টগ্রামের পাঁচ জেলা নিয়ে গঠিত ইস্টার্নজোন লিবারেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। ১৯৭৩ সালে তিনি পুনরায় জাতীয় সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন।
এম আর সিদ্দিকী ১৯৭৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকোয় রাষ্ট্রদূত হিসেবে সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। এম আর সিদ্দিকী ষাটের দশকের শুরুতে একজন শিল্পোদ্যাক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। এস কে এম জুট মিলস, থেরাফিউটিক্স বাংলাদেশ লিমিটেড, সিডকো লিমিটেড ও ফেডারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড তাঁর হাতেগড়া অন্যতম শিল্পপ্রতিষ্ঠান। বেশকটি ব্যাংকও তিনি প্রতিষ্ঠা করেন। সমাজসেবায় তিনি চট্টগ্রামে লায়নিজমের জনক হিসেবে খ্যাত।
এম আর সিদ্দিকীর পৃষ্ঠপোষকতায় সীতাকুণ্ডসহ এই অঞ্চলে অসংখ্য স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়। তাঁর সহযোগিতায় ছোটকুমিরায় লতিফা সিদ্দিকী বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও লতিফা সিদ্দিকী ডিগ্রি কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রসঙ্গত অন্যতম শিল্পপতি ও এ কে খান গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা এ কে খান এম আর সিদ্দিকীর শ্বশুর।
**লেখক- সভাপতি, সীতাকুণ্ড সমিতি- চট্টগ্রাম
/ এআর /
** লেখার মতামত লেখকের। একুশে টেলিভিশনের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে।