মৃত্যুর পরও অব্যাহত থাকবে যে ৭টি জিনিসের সওয়াব
প্রকাশিত : ১৪:৪৭, ৮ এপ্রিল ২০১৯
ইসলাম একটি পরিপূর্ন শাশ্বত জীবন বিধান। মানুষের সার্বিক জীবনের সব সমস্যার সমাধান রয়েছে মহান রাব্বুল আলামীনের ঐশি পবিত্র মহাগ্রন্থ আল-কোর আনুল কারীমের মধ্যে। এ শাশ্বত জীবন বিধান মানব সমাজে বাস্তবে অনুসরণ ও অনুকরণের জন্য সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব, মানবতার মহান মুক্তির দিশারী হযরত মুহাম্মদকে (সা:) আল্লাহ ছোবাহানাহু তায়ালা বিশ্ববাসীর জন্য রহমত স্বরূপ এ পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেছেন- তেমাদের জন্য রাসুলের জীবনীর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ। তার প্রতিটি কথা, কাজ, অনুমোদন, নির্দেশনা, আদেশ, নিষেধ ও উপদেশ দুনিয়া- আখেরাতের কল্যাণের বার্তাবাহী। তাকে সমগ্র মানব জাতির শিক্ষক রূপে এ ধরাধমে প্রেরণ করা হয়েছে। তার সে কালজ্বয়ী আদর্শ ও অমিয়বাণী দ্যুাতি ছড়িয়ে পথপদর্শন করেছে যুগ যুগান্তরে। তার পরশে আলোকিত হয়েছে বর্বর জাহিলি সমাজ। ঘন ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত জাতি পরিণত হয়েছে গোটা বিশ্বের অনুকরণীয় আদর্শে।
সাহাবি হযরত আনাস (রা:) বর্ণনা করেন- রাসুলুল্লাহ (সা:) বলেছেন, সাতটি জিনিসের সওয়াব মানুষের মৃত্যুর পরও অব্যাহত থাকবে।
১. কেউ যদি দ্বীনের শিক্ষাদান করে থাকে, বা
২. কোনও খাল খনন করে থাকে, বা
৩. কুপ খনন করে (পানি পানের জন্য) দিয়ে থাকে, বা
৪. বাগান লাগিয়ে থাকে, বা
৫. মসজিদ নির্মাণ করে দিয়ে থাকে, বা
৬. কুরআনের উত্তরাধিকারী বানিয়ে থাকে, বা
৭. এমন নেক সন্তান রেখে গিয়ে থাকে, যারা তার মৃত্যুর পর তার পিতার জন্য দোয়া ও ইস্তেগফার করে (ক্ষমা চায়)।
যে ব্যক্তি দ্বীনের জ্ঞান ও শিক্ষা প্রচার করে মারা যাবে, তার শিখানো লোকেরা যতোদিন পর্যন্ত দুনিয়াতে নেক কাজ করতে থাকবে ততোদিন সেই নেকীর অংশ পেতে থাকবে। যদি কেউ নিজের সন্তানকে শিক্ষা-দীক্ষা দান করে থাকে, যার ফলে ওই সন্তান নেক্কার হয়; তবে ওই সন্তান যতোদিন নেক কাজ করতে থাকবে ততোদিন পর্যন্ত তার পিতা-মাতাও এ নেকীর অংশ পেতে থাকবে। এভাবে যদি কেউ কাউকে কুরআনের উত্তরাধিকারী বানিয়ে যায়, অথবা মসজিদ তৈরি করে দেয় বা মুসাফিরদেও জন্য জন্যে কোনও সরাইখানা তৈরি করে দেয় কিংবা জনকল্যাণে খাল খনন করে দেয় অথবা জীবনের অন্যকোনও নেক কাজ করে এবং তাতে নিজে অর্থ খরচ করে থাকে, তবে যতোদিন পর্যন্ত মানুষ ওই সব জিনিস থেকে উপকার লাভ করতে থাকবে ততোদিন পর্যন্ত দাতার আমলনামায় নেকী লেখা হতে থাকবে।
- (ইবনে মাজাহ, ইবনে খুযায়মাহ)
ব্যাখ্যা: মানুষ যখন মৃত্যুবরণ করে তখন তার সব আমলের খাতা বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু এমন কিছু জনকল্যাণমূলক নেক কাজ আছে, যেগুলোকে আমরা সদকায়ে জারিয়া বলে থাকি, তা শেষ হয় না। যতোদিন পর্যন্ত মানুষ তার শিখানো বা বানানো বা ওয়াকফ করা জিনিস থেকে উপকার পেতে থাকবে, ততোদিন পর্যন্ত তার আমলনামায় উক্ত জিনিসের নেকী লাগাতর লেখা থাকবে। সুতারাং মানুষের জীবদ্দশায় এমনি ধরণের নেক কাজ বেশি বেশি করা যার সওয়াবের ধারা শেষ হবে না।
(আল্লামা জলীল আহসান নদভী কতৃক রচিত ‘যাদেরাহ’ হাদিস গ্রন্থ থেকে সংকলিত)
গ্রন্থনা: আনোয়ারুল কাইয়ূম কাজল