ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২১ নভেম্বর ২০২৪

‘মোবাইল না থাকলে মনে হয় পাগল হয়ে যাচ্ছি’ (ভিডিও)

দুলি মল্লিক, একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৩২, ২০ জানুয়ারি ২০২৩ | আপডেট: ১১:৩৩, ২০ জানুয়ারি ২০২৩

শিশু-কিশোরদের মোবাইলসহ ডিজিটাল ডিভাইসে আসক্তি বাড়ছে আশংকাজনক হারে। এর প্রভাব পড়ছে শিশুর মানসিক বিকাশে। বাড়ছে শারীরিক নানা সমস্যাও। গবেষকরা জানান, মোবাইলে অতিরিক্ত আসক্তির কারনে বর্তমানে দেশে ২০ শতাংশের বেশি শিশু-কিশোর অনিদ্রা, বিষন্নতা এমনকি উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের মতো রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। 

‘মোবাইল না থাকলে মনে হয় পাগল হয়ে যাচ্ছি।’  

একদিন মোবাইল না থাকলে কেমন লাগে? এমন প্রশ্নের উত্তর এভাবেই দিলো ১২ বছর বয়সী আজমাইন।

অবসরে গল্পের বই পড়ার চেয়ে মোবাইলে ভিডিও গেইম খেলাই বেশি পছন্দ তার। আজমাইন বলে, "ফ্রেন্ডদের সাথেও খেলি, তারাও আমাদের সাথে ভিডিও গেইম খেলে।"

এখনও প্রাইমারি স্কুলের গন্ডি পার করেনি দুই ভাই- আজমাইন ও আমান। তবে এরইমধ্যে তাদের প্রতিদিনের জীবনের বড় একটা সময় দখল করে নিয়েছে মোবাইল-ল্যাপটপের মতো ডিজিটাল ডিভাইস। 

অভিভাবক জানান, খেলাধূলার জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধার অভাবই শিশুদের ডিভাইসে আসক্ত করছে। 

আজমাইনের মা কাজী শবনম বলেন, "সরকারি স্কুলে যেমন মাঠ থাকে, বেসরকারি স্কুলগুলোতে যদি মাঠ থাকতো। আমার মনে হয়না কোনো বাচ্চা একটা খোলা মাঠ পেলে আর ডিজিটাল ডিভাইসে আসক্ত হত।"

পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য বলছে, বর্তমানে বাংলাদেশে ৫ থেকে ১৭ বছর বয়সী প্রায় ৫৬ শতাংশের হাতেই রয়েছে মোবাইল। আর মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের জরিপে বলা হয়, ১ থেকে পাঁচ বছর বয়সী ৯০ শতাংশই আবার মোবাইলে ইন্টারনেটে আসক্ত। সপ্তাহে ৩৮ ঘণ্টার বেশি গেইম-ইউটিউবে ডুবে থাকে তারা।

গবেষণায় দেখা যায়, আনন্দ লাগলে মস্তিকে ডোপামিন নির্গত হয়, যা শিশুটিকে একের পর এক ভিডিও দেখতে আগ্রহী করে। এক পর্যায়ে মস্তিক ক্লান্ত হয়ে বিশ্রাম নিতে বললেও তা মানতে চায় না শিশুরা। নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সিদ্ধান্তহীনতা ভুগতে শুরু করে। 

এ আসক্তির প্রভাব পড়ে বাস্তবজীবনে। স্পর্শ, গন্ধের মতো অনুভূতিগুলো কমে যেতে শুরু করে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় চোখের। 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. শরিফুদ্দিন বলেন, "আমাদের দেশের মা-বাবারা আবার এক ধাপ এগিয়ে। তারা বাচ্চাকে খাওয়ানোর সময়ও মোবাই দিয়ে রাখেন। একটু কান্না করলেই মোবাইল দিয়ে তাকে শান্ত করেন। এটা কিন্তু খুব খারাপ। মোবাই যত বেশি দেখবে তত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে শিশুর চোখ। "

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা বলছে, অতিরিক্ত ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহারে কারণে মাত্র ১৩ বছর বয়সেই অনিদ্রা, বিষন্নতা, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসের মতো রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু-কিশোররা। 

ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, "কারও কারও স্ট্রেস হচ্ছে, ইনসোমনিয়া হচ্ছে।" 

স্মার্ট ফোনের ডিজিটাল দুনিয়ায় নিজস্ব জগত গড়ে তুললেও নীরব এই মহামারি ভবিষৎ প্রজন্মের মানবিক দূরত্ব বাড়িয়ে দিচ্ছে কয়েক যোজন।
 

এসবি/ 


 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি