যতক্ষণে জামিনের ওপর স্থগিতাদেশ, ততক্ষণে ধর্ষণের আসামি পগারপার
প্রকাশিত : ১৮:৩০, ২৩ মার্চ ২০২৫ | আপডেট: ১৯:৩৩, ২৩ মার্চ ২০২৫

দিনাজপুরের সেই ৫ বছরের শিশু ধর্ষণের মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সাইফুল ইসলামের জামিন স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। গত ৫ মার্চ আদালতের দেওয়া আদেশে আসামিকে গ্রেফতারেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে, জামিন স্থগিতের খবর পেয়ে আসামি এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন বলে ভুক্তভোগী শিশুটির পরিবার জানিয়েছে।
২০১৬ সালের ১৮ অক্টোবর দিনাজপুরের পার্বতীপুরে এক প্রতিবেশীর একই বয়সী মেয়ের সঙ্গে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় শিশুটি। পরদিন শিশুটিকে তার বাড়ির কাছে অসুস্থ অবস্থায় পাওয়া যায়। শিশুটির প্রজনন অঙ্গ, মাথা, গলা, হাত ও পায়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ছিল। ঊরুতে সিগারেটের ছ্যাঁকার ক্ষতও ছিল। শিশুটির বাবা ওই বছর ২০ অক্টোবর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। ঘটনার পরপরই প্রতিবেশী সাইফুল ইসলামকে আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বিচারে সাইফুল ইসলামের অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
৮ বছর ৪ মাস কারাদণ্ড ভোগের পর গত ১৯ ফেব্রুয়ারি জামিনে মুক্ত হন আসামি সাইফুল ইসলাম। এ নিয়ে নারী ও শিশু অধিকার কর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। মামলার বাদীপক্ষ আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে জামিন বাতিলের আবেদন করে। গত ৫ মার্চ আদালত হাইকোর্টের জামিন আদেশ স্থগিত করে আসামিকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন।
শিশুটির বাবা জানান, জামিন স্থগিতের খবর পেয়ে সাইফুল ইসলাম এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন। তিনি বলেন, "যদি জামিন না পাইতো, তাহলে তো পালাইতে পারতো না।"
পার্বতীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুস সালাম জানান, জামিন বাতিল ও গ্রেপ্তারের আদেশ তারা এখনো পাননি। আদেশ পেলে তারা আসামির খোঁজে পদক্ষেপ নেবেন।
বেসরকারি সংগঠন ‘আমরাই পারি’র প্রধান নির্বাহী জিনাত আরা হক বলেন, "জামিন বাতিলের পর আসামি ধরা কঠিন। অনেক ঘটনায় দেখা গেছে, এ ধরনের আসামিরা অন্য পরিচয়ে আবার অপরাধ করছে। পুলিশ প্রশাসনকে আসামি ধরতে অনেক তৎপর হতে হবে। থানায় থানায় আসামির ছবি টাঙিয়ে দেওয়া উচিত।"
এই মামলাটি দেশজুড়ে আলোচিত হয়েছিল এবং শিশু অধিকার ও নারী নির্যাতন বিরোধী আন্দোলনে একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছিল। শিশুটির ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে এবং আসামিকে গ্রেপ্তারে পুলিশ প্রশাসনের তৎপরতা জরুরি।
আরও পড়ুন