যাওয়া-আসার মিছিলে ফের টাইগার ব্যাটসম্যানেরা
প্রকাশিত : ১১:০৯, ১৪ জুলাই ২০১৮ | আপডেট: ১১:১০, ১৪ জুলাই ২০১৮
অ্যান্টিগা টেস্টে ভয়াবহ বিপর্যয়ের পর দ্বিতীয় টেস্টেও ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছে বাংলাদেশ। স্কোরবোর্ডে মাত্র ১৪৯ রান যোগ করতেই সবকটি উইকেট হারায় টাইগাররা। এর আগে ব্যাট করতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটসম্যানেরা সংগ্রহ করেন ৩৫৪ রান।
এর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটসম্যানেরা দারুণ শুরু করলেও মেহেদী হাসান মিরাজের ঘূর্ণিতে ৩৫৪ রানে থামে তাদের ইনিংস। আগের দিন ৪ উইকেটে ২৯৫ রান নিয়ে শুরু করা উইন্ডিজরা এদিনে বেশি সুবিধা করতে পারেনি।
জ্যামাইকার স্যাবাইনা সুন্দর একটি সকালই উপহার দিয়েছিলেন বাংলাদেশি বোলাররা। ৪ উইকেটে ২৯৫ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শুরু করা ওয়েস্ট ইন্ডিজ এ দিন স্কোরকার্ডে মাত্র ৫৯ রান যোগ করতেই গুটিয়ে যায়। মেহেদী হাসান মিরাজের পাঁচ উইকেট আর আবু জায়েদ রাহীর দুর্দান্ত বোলিংয়ে ক্যারিবীয়রা থামে ৩৫৪ রানে। মিরাজ নিয়েছেন ৫ উইকেট।
এমন পারফরম্যান্স নিঃসন্দেহেই হাসি ফোটায় বাংলাদেশি সমর্থকদের মনে। কিন্তু সেই হাসি টেকেনি বেশিক্ষণ। প্রথম টেস্টের পর দ্বিতীয় টেস্টেও হতশ্রী ব্যাটিং দেখা যায় মুশফিকুর রহিম-মাহমুদউল্লাহ রিয়াদদের। জ্যাসন হোল্ডার-গ্যাব্রিয়েলদের দাপুটে বোলিংয়ে ১৪৯ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ।
পড়ন্ত বিকালে অবশ্য বাংলাদেশকে ফলোঅনে পাঠায়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। নিজেরাই আবার ব্যাটিংয়ে নামে ক্যারিবিয়ানরা। দিন শেষ উইন্ডিজদের সংগ্রহ ১ উইকেটে ১৯ রান। ২২৪ রানে এগিয়ে স্বাগতিকরা, হাতে রয়েছে ৯ উইকেট।
অথচ দিনের আলো ছড়ানো এই বোলিংয়ের পর হতশ্রী এক ব্যাটিং পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছে বাংলাদেশ। উইকেট হারাতে থাকে জোড়ায় জোড়ায়। এ দিন বাংলাদেশ প্রথম উইকেট হারায় ২০ রানে। ফিরে যান ওপেনার লিটন দাস (১২)। দুই বল পর রানের খাতা না খুলেই সাজঘরে ফেরেন মুমিনুল হকও। এরপর সাকিব আল হাসানকে সঙ্গে নিয়ে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেন তামিম ইকবাল।
কিন্তু দলীয় ৭৯ রানে আবারও জোড়া আঘাত। ৩২ রান করা সাকিব ফেরেন উইন্ডীজ অধিনায়ক হোল্ডারের বলে বোল্ড হয়ে। দুই বল পর রানের খাতা না খুলতেই ওই হোল্ডারের বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দলীয় রান যখন ১১৭, তখন আবারও জোড়া আঘাতের শিকার হয় বাংলাদেশ। এবার শিকারি কিমু পল। একবার রিভিউ নিয়ে বেঁচে যাওয়া তামিমকে সরাসরি বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান তিনি।
আউট হওয়ার আগে তামিম করেছিলেন ৪৭ রান। পরের বলে পল ফিরিয়ে দেন প্রথম টেস্টে স্রোতের বিপরীতে দুর্দান্ত ব্যাটিং করা সোহানকেও। অন্য ব্যাটসম্যানদের মতো এদিন ব্যর্থ বাংলাদেশের সবচেয়ে অভিজ্ঞ টেস্ট ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিমও। ব্যক্তিগত ২৪ রানে হোল্ডারের শিকারে পরিণত হন তিনি। পরের ওভারে সাজঘরের পথ ধরেন মিরাজও। শেষ দিকে টানা চার চারে সংগ্রহটা একটু বাড়িয়ে তুলেছেন এই যা!
অবশ্য দলীয় ১৪৯ রানে হোল্ডারের চতুর্থ শিকারে পরিণত হন ১৮ রান করা তাইজুল। এক ওভার পর আবার ওই হোল্ডারের বলেই রাহী ফিরে গেলে থামে বাংলাদেশের ইনিংস। এড়াতে পারেনি ফলোঅনও। তবে বাংলাদেশকে ফলোওনে না পাঠিয়ে নিজেরাই আবার ব্যাটিংয়ে নামে ক্যারিবীয়রা। দিনের শেষ ওভারে দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরিকরা ব্রাথওয়েটকে ফিরিয়ে দেন সাকিব।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ৩৫৪ (ব্র্যাথওয়েট ১১০, হিট্মেয়ার ৮৬; মিরাজ ৫/৯৩, আবু জায়েদ ৩/৩৮, তাইজুল ২/৮২)।
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৪৬.১ ওভারে ১৪৯ (তামিম ৪৭, লিটন ১২, মুমিনুল ০, সাকিব ৩২, মাহমুদউল্লাহ ০, মুশফিক ২৪, সোহান ০, মিরাজ ৩, তাইজুল ১৮, কামরুল ০*, আবু জায়েদ ০; গ্যাব্রিয়েল ২/১৯, পল ২/২৫, কামিন্স ১/৩৪, হোল্ডার ৫/৪৪, চেইস ০/২২)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় ইনিংস: ৯ ওভারে ১৯/১ (ব্র্যাথওয়েট ৮, স্মিথ ৮*, পল ০*; আবু জায়েদ ০/৮, মিরাজ ০/৮, রাব্বি ০/৩, সাকিব ১/০)।
এমজে/