যাত্রা উৎসবের পর্দা নামলো জাবিতে
প্রকাশিত : ০৮:৪১, ৩১ মার্চ ২০২২ | আপডেট: ০৮:৪৫, ৩১ মার্চ ২০২২
‘নিঃসঙ্গ লড়াই’ যাত্রাপালার দৃশ্য
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশে শিল্পকলা একাডেমীর উদ্যোগে দেশব্যাপী ১০০ নতুন যাত্রাপালার মঞ্চায়নের মধ্য দিয়ে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ যাত্রা উৎসব-২০২২’ এর সমাপ্তি হয়েছে।
বুধবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন কলা ভবনের সামনে মৃৎমঞ্চে ‘নিঃসঙ্গ লড়াই’ মঞ্চায়নের মধ্য দিয়ে মাসব্যাপী এই উৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠিত হয়।
সমাপনী আয়োজনের ব্যবস্থাপনায় ছিল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লায়ালপুর জেলখানার বন্দি জীবনভিত্তিক কাহিনী নিয়ে রচিত যাত্রাপালা ‘নিঃসঙ্গ লড়াই’। শিল্পকলা একাডেমি রেপার্টরি যাত্রাদল পরিবেশিত যাত্রাটি লিখেছেন পালাকার মাসুম রেজা এবং নির্দেশনা দিয়েছেন নাট্য গবেষক ও শিক্ষক সাইদুর রহমান লিপন।
স্বাগত বক্তব্যে অধ্যাপক ড. ইস্রাফিল আহমেদ বলেন, “দেশে যখন গণহত্যা হয়েছিল তখন সারাদেশ জুড়ে যাত্রাপালা হয়েছিল। বাংলাদেশে যাত্রাপালার চর্চা প্রায় হারিয়েই গিয়েছিল তবে শিল্পকলা একাডেমীর মাধ্যমে আবারও ফিরে এসেছে। বিশ্ব রঙ্গমঞ্চে আমরা যেন আমাদের যাত্রাপালা তুলে ধরতে পারি এটাই প্রত্যাশা থাকবে।”
শিল্পকলা একাডেমীর উপপরিচালক ড. তপন বাগচী বলেন, “যতদিন পর্যন্ত মানুষ থাকবে ততদিন যাত্রাপালা থাকবে। যেখানে যাত্রাপালা হারিয়ে যেতে বসেছিল, আজ শিল্পকলা একাডেমীর হাত ধরে আবারও প্রাণ ফিরতে শুরু করেছে। যাত্রাপালার উন্নয়নকল্পে পার্লামেন্টে অ্যাক্ট পাস হয়েছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে যাত্রামঞ্চ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।”
অধ্যাপক ড. রশীদ হারুন বলেন, ‘এটি শুধুমাত্র একটি উৎসব অনুষ্ঠান তা নয়, এটি যাত্রাশিল্পের নবযাত্রা। বাংলাদেশে স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে মঞ্চনাটক শুরু করার জন্য লিয়াকত আলীর কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। এদেশের পুতুলনাট্য শিল্প লিয়াকত আলী লাকীর কাছে ঋণী থাকবে। আমি আশা রাখছি, দর্শকমণ্ডলী যাত্রার এই নবযাত্রাকে বাংলাদেশের গ্রাম পর্যায়ে ছড়িয়ে দিবেন।”
সমাপনী বক্তব্যে শিল্পকলা একাডেমীর মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী বলেন, “যাত্রা হলো বাঙালি সংস্কৃতির মূল। আমরা যদি গর্ব করতে চাই তাহলে এই যাত্রাপালা নিয়েই করতে হবে। কারণ, বিশ্বের আর কোথাও নেই এই যাত্রাপালা। জয়নুল আবেদীন খুব কষ্ট নিয়ে বলেছিলেন, ‘আমি ছবি আঁকলাম যাতে দুর্ভিক্ষ দূর হয়, তবে এদেশের রুচির দুর্ভিক্ষ কিভাবে দূর করবো সেটা জানি না।’ উন্নত দেশ হওয়ার জন্যে রুচির দুর্ভিক্ষ দূর করতে হবে। যার জন্য সংস্কৃতির চর্চা খুবই জরুরি।”
তিনি আরও বলেন, “আমি কৃতজ্ঞতা জানাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রতি, তিনি শিল্পকলা একাডেমী প্রতিষ্ঠা না করলে আমরা এখানে থাকতাম না। আমি কৃতজ্ঞতা জানাই মানবতার মা, জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি। তার পৃষ্ঠপোষকতা না থাকলে পুতুলনাট্য নীতিমালা বা যাত্রাপালা নীতিমালা প্রণয়ন করা সম্ভব ছিল না।’
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিকী অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. মোজাম্মেল হক, বিশিষ্ট যাত্রা ব্যক্তিত্ব তাপস সরকার প্রমুখ।
এএইচ/
আরও পড়ুন