যুক্তরাষ্ট্রের কারাগারে বাংলাদেশি অধ্যাপক জামাল
প্রকাশিত : ১৭:১৩, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ | আপডেট: ১৫:২৮, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘ সময় ধরে বসবাস করা বাংলাদেশি অধ্যাপক সৈয়দ আহমেদ জামালকে কারাগারে পাঠিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। ভিসা জটিলতার কারনে বাংলাদেশে ফিরে আসার আগ মুহূর্তে তার ইমিগ্রেশনের ব্যাপারে একটি স্থগিতাদেশ আসে। বর্তমানে তিনি কানসাস সিটির প্ল্যাটে কাউন্টি জেলে বন্দি রয়েছেন।
অধ্যাপক জামালকে গ্রেফতারের সময় তিনি টেম্পোরারি ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে কানসাসের পার্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করতেন। একইসঙ্গে স্থানীয় কয়েকটি হাসপাতালে গবেষণা কাজেও সম্পৃক্ত ছিলেন তিনি।
ভিসা সংক্রান্ত নিয়ম লঙ্ঘনের কারণে দেশে ফেরার মতো পরিস্থিতির মুখে পড়েন সৈয়দ আহমেদ জামাল। সোমবার কানসাসের আদালতে এ সংক্রান্ত আপিলে হেরে যান তিনি।
আপিলে হেরে যাওয়ার পর দেশে ফিরতে মঙ্গলবার তিনি বাংলাদেশমুখী ফ্লাইটে উঠেন। তবে শেষ মুহূর্তে তিনি বোর্ড অব ইমিগ্রেশনের স্থগিতাদেশ পান। পরে তাকে তার তার বাসার সামনে থেকে ইমিগ্রেসন পুলিশ গ্রেফতার করে।
অধ্যাপক জামালের তিন সন্তানের সবাই মার্কিন নাগরিক। তাদের বয়স যথাক্রমে ৭, ১২ এবং ১৪। শারীরিক অসুস্থতার কারণে তার স্ত্রী চলৎশক্তিহীন। ফলে অধ্যাপক জামালই তার পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি।
অধ্যাপক সৈয়দ আহমেদ জামালকে কবে নাগাদ ছেড়ে দেওয়া হবে সে ব্যাপারে এখনও কিছু জানায়নি ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট। মুক্তি পেলে কানসাসের লরেন্সে বসবাসরত নিজ পরিবারের সঙ্গে মিলিত হওয়ার সুযোগ পাবেন তিনি।
বুধবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে কথা বলেন সৈয়দ আহমেদ জামালের অ্যাটর্নি রেখা শর্মা। তিনি বলেন, ‘এক্ষেত্রে আইসিই (ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট)-এর শতভাগ বিচক্ষণতা আছে এবং আমরা আশা করি, তারা তাদের অবস্থান পুনর্বিবেচনা করবে।’
বুধবার বিকেলে তাকে হনুলুলু থেকে কানসাস নেওয়া হয়। এই অধ্যাপকের ভাই জানান, এই ঘটনায় তার স্ত্রী-সন্তানদের একটা অভিঘাত ও মানসিক যন্ত্রণায় জর্জরিত অবস্থায় দেখা গেছে।
সৈয়দ আহমেদ জামাল ১৯৮৭ সালে শিক্ষার্থী ভিসায় কানসাস বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন। তিনি মলিক্যুলার বায়োসায়েন্স ও ফার্মাসিউটিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি অত্যন্ত দক্ষ কর্মীদের জন্য প্রযোজ্য এইচ১বি ভিসায় চিলড্রেন্স মার্সি হাসপাতালে কাজ করেন। পরে পিএইচডি করার জন্য তিনি আবার শিক্ষার্থী ভিসা গ্রহণ করেন।
অধ্যাপক জামালের প্রত্যাবাসনের আদেশ স্থগিত চেয়ে পিটিশন দায়ের করা অভিবাসন আইনজীবী জেফরি ওয়াই বেনেট বলেন, ২০১১ সালের দিকে অধ্যাপক জামাল তার ভিসার বৈধতা হারান। ওই সময় আদালত তাকে ‘স্বেচ্ছায় দেশে ফেরত যাওয়ার’আদেশ দেন। তবে ওবামা সরকারের নেওয়া ‘প্রসিকিউটোরিয়াল ডিসক্রিশন’নীতির অধীনে তাকে যুক্তরাষ্ট্রে থেকে কাজ করার অস্থায়ী অনুমতি (টেম্পোরারি ওয়ার্ক পারমিট) দেওয়া হয়। তবে এ ক্ষেত্রে শর্ত ছিল, প্রতি বছর তাকে অভিবাসন কর্মকর্তাদের কাছে হাজিরা দিতে হবে।
এসি/
আরও পড়ুন