যে বাংলাদেশীকে নিয়ে গর্ব করেন খোদ আমেরিকানরাও (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১৫:৪২, ২৩ জুলাই ২০২৩
জঞ্জালে পরিণত হওয়া কোটি কোটি টাকার আসবাবপত্র প্রতিবছর মার্কিনীরা ফেলে দেয় সমুদ্রে। সেসব পুরনো আসবাব সংগ্রহ করে গরিবের বাড়িতে পৌঁছে দেয় ফার্নিচার্স ব্যাংক। ব্যতিক্রমী এই মানবসেবায় দৃষ্টান্ত গড়েছেন বাংলাদেশের অলি মোহাম্মদ। যাঁকে নিয়ে গর্ব করেন খোদ আমেরিকানরাও।
প্রচণ্ড ঠাণ্ডা উপেক্ষা করে যুক্তরাষ্ট্রর লাখ লাখ মানুষ এখনও ঘরের মেঝেতে ঘুমান। পড়ালেখার জন্য চেয়ার-টেবিল কিংবা শোবার জন্য খাট ব্যবহারের সুযোগ পায় না প্রায় ৮ মিলিয়ন শিশু।
এসকল অসহায়দের সহায় হয়েছেন বাংলাদেশের অলি মোহাম্মদ। মানিকগঞ্জে জন্ম নেয়া অলি মোহাম্মদের গড়ে তোলা প্রতিষ্ঠান ফার্নিচার ব্যাংক পুরনো এসব আসবাব গার্বেজ হওয়ার আগে চেয়ে নেন মধ্যবিত্ত আর ধনীদের কাছ থেকে। পরে কারখানায় ফেলে তা ঠিকঠাক করে ঘর সাজিয়ে দেন গরিবদের।
হিউস্টোর বাংলাদেশ এসোসিয়েশনের বিদায়ী চেয়ারম্যান খালেদ জুলফিকার খান বলেন, “এই অর্গানাইজেশনের মাধ্যমে ওনারা বিভিন্ন কোম্পানির দেয়া ডোনেশন, ফার্নিসার্স, ক্যাবলস, কম্পিউটার্স বিতরণ করছেন গরীব মানুষদের মধ্যে।”
অলি মোহাম্মদ বলেন, “ফার্নিসার্স কোম্পানি হোক সেটা ফার্নিসার্স ম্যানুফেকসার্সরাই হোক কিংবা কেউ টাকা দিয়ে সহায়তা করছে আমাদেরকে এই কাজটা করার জন্য।”
চিরকুমার অলি মোহাম্মদের দাতব্য এই কর্মকাণ্ড ইতোমধ্যে সাড়া ফেলেছে আমেরিকাজুড়ে। সিটি মেয়র, ধনিক শ্রেণি কিংবা কাউন্টির নেতারা অলিকে ডাকেন দেবদূত বলে।
অলি মোহাম্মদ বলেন, “আমি যদি ট্রাক ড্রাইভার হিসেবে ধরা পরি তাহলে হয়তো ৪০ ঘণ্টা বা ৮০ ঘণ্টা কমিউনিটি সার্ভিস করতে হবে। এর মানে ২ সপ্তাহ একজন ফুলটাইম একজন এ্যাম্বলয়ীর কাজ করছে। ওই রকম প্রতিমাসে ২ থেকে ৩ হাজার ঘণ্টা এইসব কমিউনিটি সার্ভিস ওয়ার্কার থেকে আমরা পাই।”
ফার্নিচার ব্যাংকের কাজ পরিচালনার জন্য ৭৫ হাজার বর্গফুটের একটি গুদাম রয়েছে টেক্সাস হিউস্টোনের হবি এয়ারপোর্টের কাছে। যেখানে পুরোনো আসবাব সংগ্রহের পর তা বদলে ফেলা হয়। দেয়া হয় নতুন রূপ।
অলি মোহাম্মদ বলেন, “হিউস্টোন কাউন্টিংয়ের ২১ শতাংশ মানুষ দারিদ্রসীমার নীচে বসবাস করে। ৭০ লাখ মানুষের মধ্যে আনুমানিক ৩ লাখ শিশুর প্রতি রাতে বিছানায় ঘুমানোর আসবাব নেই।”
পরোপকারী অলির স্বেচ্ছাশ্রম বাংলাদেশীদের উজ্জ্বল করেছে যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে। কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ইতোমধ্যে অনেকগুলো পুরস্কারও পেয়েছে আমেরিকায় গরিবদের কাঙ্ক্ষিত প্রতিষ্ঠান ফার্নিচার ব্যাংক আর অলি মোহাম্মদ।
অলি মোহাম্মদ বলেন, “অনেক বেশি ম্যাটট্রেস পাঠাতে পারবো, যত বেশি ম্যাটট্রেস রিসাইকেল করতে পারবো ততো বেশি মানুষকে সহায়তা করতে পারবো।”
যুক্তরাষ্ট্র মানেই যে শুধু ধনীরা সেখানে বসবাস করেন তা কিন্তু নয়। এখানে আছে অসংখ্য গরীব মানুষ। তাদের বাড়ি থাকলেও সেই বাড়িতে নেই প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র। শীতপ্রধান দেশের শিশুদের কথা চিন্তা করে আর গরীবের কথা বিবেচনা করে ধনীর কাছ থেকে ফেলে দেয়া আসবাবপত্র ভিক্ষা করে বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে দিচ্ছেন বাংলাদেশের অলি মোহাম্মদ। প্রথম দিকে অলির এই কাজটি বোনের মোষ তাড়ানোর কথা বললেও এখন তারাই দিচ্ছেন সাধুবাদ।
এএইচ