ঢাকা, সোমবার   ০২ ডিসেম্বর ২০২৪

যে শহরের সবাই অফিসে যান ব্যক্তিগত বিমানে!

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৫১, ২৭ জুলাই ২০২২ | আপডেট: ১০:৫৮, ২৭ জুলাই ২০২২

ব্যক্তিগত বিমান থাকে হলিউডের তারকাদের। রোনাল্ডো-মেসিদের মতো কোটি কোটি টাকার খেলোয়াড়দের। এছাড়া এলন মাস্ক কিংবা বিল গেটসদের মতো ধনকুবেরদের পক্ষেই সম্ভব এতখানি স্বচ্ছলতা। কিন্তু এমন যদি হয়, একটি শহরের সকলেরই রয়েছে ব্যক্তিগত বিমান, দু’চাকা বা চার চাকার ধার ধারেন না কেউ! শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছে তো? কিন্তু এই ঘটনা বাস্তব। আমেরিকার ক্যামেরন পার্ক শহরের সকলেই ব্যক্তিগত বিমানের মালিক।

শুনতে উদ্ভট লাগবে বটে, তবে ক্যালিফোর্নিয়ার এই ছোট্ট শহরে লোকে অফিস যান বিমানে চড়ে, সপ্তাহ শেষে ছুটি কাটাতে কাছাকাছি কোথাও যেতে হলেও বিমানেই উড়ান দেন। এই এলাকার বিশেষত্ব রয়েছে, ঐতিহাসিক বিশেষত্ব। সরকারি নথিতে সে শহর নয়, বরং ফ্লাই ইন রেসিডেন্সিয়াল কমিউনিটি। সেটা কী?

সে এক ইতিহাস! আসলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আমেরিকার বহু বিমানবন্দর অচল হয়ে পড়ে। আসলে যুদ্ধের প্রয়োজনেই তা চালু হয়েছিল। একই কারণে বাড়ছিল অবসরপ্রাপ্ত বিমানচালকের সংখ্যা। যুদ্ধে অংশ নেওয়া সেই অবসরপ্রাপ্ত বিমানচালকদের কমিউনিটিই আসলে এই ফ্লাই ইন রেসিডেন্সিয়াল কমিউনিটি। প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেয়, বিমানবন্দর এলাকাতেই এক সময়ের বিমান চালাকদের থাকার ব্যবস্থা হবে। সেই ভাবনা থেকেই ১৯৬৩ সালে তৈরি হয় ক্যামেরন পার্ক। এককালে যার নাম ছিল ক্যামেরন পার্ক এয়ারপোর্ট।

ক্যামারন পার্কের প্রতিটি পরিবারের কোনও না কোনও সদস্য এক সময়ে বিমানচালক ছিলেন। তাদের সন্তানরাই পরিবর্তী নাগরিক। বিমানবন্দর যাদের পাড়া, বিমানচালক যাদের বাবারা, তাদের বিমান চালানোর ইচ্ছে হওয়াই স্বাভাবিক। তাই হয়েছে। ফলে পরবর্তী প্রজন্মও বিমান ওড়ানোয় ওস্তাদ। বিমান যে শহরের প্রাইভেট কার, সেখানকার রাস্তাঘাটের বিশেষত্ব থাকা স্বাভাবিক। ফলে এই শহরে অলিগলি কিংবা ছোট-বড় রাস্তা বলে কিছু নেই। একটিমাত্র পথ, যা আদতে রানওয়ে। শহরকে দুই ভাগে ভাগ করে সেই রানওয়ে এসে মিশেছে যে রাস্তায় সেই রাস্তাটিও ১০০ ফুট প্রশস্ত। ফলে অনায়াসে ওঠানামা করতে পারে বিমান।

আর পাঁচটা শহরে বাস-ট্যাক্সি বা ব্যক্তিগত যানবাহান যেভাবে চলে, এ শহরে বিমান চলে সেভাবেই। গাড়ির গ্যারাজের মতোই প্লেন রাখার জায়গা আছে বাড়িগুলির সামনে। পুরোনো আমলের ঐতিহ্যবাহী গাড়ির প্রদর্শনীর প্রচলন আছে বিশ্বের বহু শহরে। ক্যামেরন পার্কে প্লেনের প্রদর্শনী হয়। বছরে এক দিন রানওয়ে বরাবর সার দিয়ে দাঁড়ায় বিভিন্ন মডেলের বিমান। রানওয়ে ধরে একসঙ্গে সেই সব বিমান ওড়ার দৃশ্য দেখার মতো। হাতে গোনা ১২৪টি বাড়ির শহর সত্যি অনন্য, অবাক করা।

এসবি/ 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি