ঢাকা, সোমবার   ২১ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

যেসব কারণে ক্রমাগত বন্ধু হারাচ্ছে ভারত

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২২:১৩, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪

Ekushey Television Ltd.

বিশ্বের সুপারপাওয়ারদের মধ্যে অন্যতম এবং বিশ্বমঞ্চে সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ভারত। কিন্তু দেশটির সাম্প্রদায়িক নরেন্দ্র মোদি সরকারের উগ্র হিন্দুত্ববাদী নীতির কারণে দক্ষিণ এশিয়ায় একের পর এক বন্ধু হারাচ্ছে তারা। শত্রুতে পরিণত হচ্ছে প্রতিবেশী দেশগুলো। প্রতিবেশী প্রথম নীতি অবলম্বন করলেও একটি প্রতিবেশী দেশের সঙ্গেও ভালো সম্পর্ক নেই ভারতের।

পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক চিরবৈরী। ২০১৯ সালের ১৪ই ফেব্রুয়ারি তখনকার জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সন্ত্রাসী হামলার পর সেই শত্রুতা ভয়াবহ রূপ নেয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বন্ধ হয়ে যায় ইসলামাবাদে দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা বিষয়ক সার্কের সম্মেলন। এরপর সম্পর্ক উন্নয়নের অনেক উদ্যোগ নিলেও কোনটিই সফল হয়নি।

ভারত তার চারপাশে যেসব প্রতিবেশী আছে তাদের সঙ্গে ক্রমশ সম্পর্ক হারাচ্ছে। একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ হলো মালদ্বীপ। সেখানে গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ‘ইন্ডিয়া আউট’ ইস্যুতে প্রচারণা চালিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন মোহাম্মদ মুইজু। নির্বাচিত হওয়ার পর তার দেশ থেকে ভারতীয় সেনাদের প্রত্যাহার করে নেয়ার আল্টিমেটাম দেন। সে অনুযায়ী ভারত সেনাদের প্রত্যাহার করে নেয়। মালদ্বীপের সঙ্গে ভারত বা ভারতের সঙ্গে মালদ্বীপ এখনো সম্পর্ক ধরে রাখলেও মালদ্বীপের এই নির্বাচন আঞ্চলিক ক্ষেত্রে ভারতের ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানকেই তুলে ধরে।

মালদ্বীপের মতো একই কথা প্রযোজ্য শ্রীলঙ্কার ক্ষেত্রে। দীর্ঘদিন ধরে পক প্রণালীতে অবস্থিত কাটচাথিভু দ্বীপ ভারত ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে বিরোধের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। ১৯৭০-এর দশকে এই দ্বীপটি শ্রীলঙ্কার কাছে হস্তান্তর করা হলেও এখন পর্যন্ত তা উত্তেজনার একটি ইস্যু হয়ে আছে। শুধু এটাই নয়, শ্রীলঙ্কায় চীনের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি তাদের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ককে আরও জটিল করে তুলেছে। এ দু’টি ইস্যুই দিল্লিকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। 

ভারতের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে দেখা হয় নেপালকে। নেপালে যে পরিমাণ পণ্য আমদানি হয় তার মধ্যে তিনভাগের দুই ভাগই যায় ভারত থেকে। কিন্তু ধারাবাহিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ভুল পদক্ষেপ নেয়ার কারণে ভারতের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। 

ওদিকে প্রতিবেশী মিয়ানমার ও ভারত সীমান্ত, মিজোরাম সহ সেভেন সিস্টার্সে যে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো আছে- তাদেরকে নিয়ে ভারতের যথেষ্ট মাথাব্যথার কারণ রয়েছে। চীনের বলয়ে চলে গেছে নেপাল। ভুটানও অনেকটা সেই পথে। পাকিস্তান, আফগানিস্তানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ভালো নয়। এমন প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সাম্প্রতিক উত্তেজনা চরম আকার ধারণ করেছে।

সর্বশেষ গণহত্যাকারী খুনী হাসিনাকে আশ্রয় ও পুনর্বাসন ষড়যন্ত্রে নেমে বাংলাদেশের সাথে চরম বৈরী আচরণ শুরু করেছে দেশটি। এরপর থেকেই বাংলাদেশ কথিত সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে ব্যাপক অপপ্রচার চালাচ্ছে ভারতের সংবাদমাধ্যম ও রাজনীতিকরাও । 

এ নিয়ে ঘরে বাইরে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে মোদি সরকার। সচেতন ভারতীয়দের মধ্যেও এনিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, পৃথিবীতে একমাত্র রাষ্ট্র ভারত, যার কোনও একটি প্রতিবেশী দেশের সাথেও ভালো সম্পর্ক নেই। দাদাগিরি, অসম্মান ও প্রতিবেশী রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নগ্ন হস্তক্ষেপের মধ্য দিয়ে একে একে সকল প্রতিবেশীকে খেপিয়ে তুলেছে দেশটি। ফলে সবাই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে ভারত থেকে। 

এমবি


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি