ঢাকা, মঙ্গলবার   ২২ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

যেসব কারণে বয়স্কদের টিকা দেয়া কঠিন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:২৩, ২০ অক্টোবর ২০২০

Ekushey Television Ltd.

কোভিড-১৯ মহামারিতে সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় আছে বয়স্ক লোকেরা। কিন্তু দুঃখজনক হলো তাদেরকে টিকা দেওয়া হলে তাদের শরীরে তা ঠিক মতো কাজ করে না।

বৃদ্ধ মানুষকে টিকা দেওয়া কেন কঠিন সেটা বুঝতে হলে প্রথমে তাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থার দিকে তাকাতে হবে। অনেক সংক্রামক রোগ আছে যেগুলো বয়স্কদের জন্য বিপদজনক। কিন্তু তরুণদের জন্য এসব রোগ ততোটা ঝুঁকিপূর্ণ নয়।

এসব রোগের কাছে বৃদ্ধ লোকজনের নাজুক হওয়ার কিছু কারণ আছে। যেমন, সারাজীবন ধরে তারা নানা ধরনের কার্সিনোজেনের সংস্পর্শে আসে, বিভিন্ন সময়ে তারা কিছু সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হন ফলে তাদের দেহে নতুন কোন জীবাণুর সংক্রমণ থেকে অসুখ-বিসুখ হওয়ার ঝুঁকিও বেড়ে যায়।

একই সঙ্গে বয়স বাড়ার বাড়ার সাথে তাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থাও দুর্বল হয়ে পড়ে। একে বলা হয় ইমিওনোস্নেসেন্স। শরীরের অন্যান্য অঙ্গ প্রত্যঙ্গের মতো দেহের রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থারও বয়স বৃদ্ধি পায়। সময়ের সাথে সাথে তার বিভিন্ন লক্ষণও চোখে পড়ে। শরীরে রোগ প্রতিরোধী অনেক কোষ তাদের কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলে।

তখন টিকা দেওয়ার প্রয়োজন হয়। টিকা দেওয়ার উদ্দেশ্য হচ্ছে শরীরের রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থাকে উদ্দীপ্ত করে তোলা। যাতে তারা কোন ধরনের জীবাণু দিয়ে আক্রান্ত হওয়ার আগেই সেটি আক্রান্ত মানুষের শরীরে কার্যকর এন্টিবডি তৈরি করতে পারে। কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে থাকলে সেটা এই এন্টিবডি টেস্টের মাধ্যমে জানা সম্ভব হয়।

তবে সব এন্টিবডি যে কাজ করে তাও নয়। এছাড়াও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে সবার দেহে এন্টিবডি নাও পাওয়া যেতে পারে। আবার কোন কোন এন্টিবডির আয়ুষ্কাল হয় খুবই কম।

টিকা তৈরিতে যারা কাজ করেন তাদের সামনে চ্যালেঞ্জ হচ্ছে এই সব ধরনের কোষের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করা। এই কাজটি খুব স্পর্শকাতর। তবে বয়স্ক লোকের দেহে এই ভারসাম্য যখন বিঘ্নিত হয় তখন সেটা ফিরিয়ে আনা বিজ্ঞানীদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ।

বয়স্ক ব্যক্তির দেহে ম্যাক্রোফেজের এন্টিজেন ব্যবস্থাপনা নষ্ট হয়ে গেলে টি সেলের কার্যকারিতা কমে যায়। ফলে এটি তখন জীবাণু প্রতিরোধে বি সেলকে তেমন একটা সাহায্য করতে পারে না। একারণে শরীরে যথেষ্ট পরিমাণে এন্টিবডিও তৈরি হয় না।

তবে সবার রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থায় পরিবর্তন ঠিক একইভাবে ঘটে না। বয়স হওয়ার পরেও অনেকে সুস্থ থাকেন। হয় তারা তাদের নিজেদের শরীর ভালোভাবে দেখাশোনা করেন, অথবা তারা হয়তো ভাগ্যবান যে বয়স বাড়লেও তাদের শরীরের জিনগত গঠন ঠিক থাকে।

সে কারণে বয়স বাড়াটা যে রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থার জন্য পুরোপুরি খারাপ খবর তা কিন্তু নয়। এই প্রতিরোধী ব্যবস্থার কিছু কিছু অংশ আছে যা বয়স বাড়ার সাথে সাথে আরো উন্নত হয়।

কিন্তু করোনাভাইরাস হচ্ছে এমন একটি ভাইরাস যার দ্বারা আমরা এর আগে কখনো আক্রান্ত হইনি। ফলে সেটি মোকাবেলার কোন স্মৃতি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থার নেই।

সুতরাং বলা যায়, বয়স্ক লোকজনের দেহে যে রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থা, জীবাণু মোকাবেলায় তাদের প্রচুর স্মৃতি রয়েছে। তারা জানে কিভাবে ওই জীবাণুকে প্রতিহত করতে হয়। কিন্তু নতুন কোনো রোগে আক্রান্ত হলে সেটি মোকাবেলায় তাদের অভিজ্ঞতা সীমিত।

সূত্র: বিবিসি

এএইচ/এমবি


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি