ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

যেসব চাকরিতে মিথ্যা বলাকে যোগ্যতা হিসেবে ধরা হয়

প্রকাশিত : ১৭:৩৯, ২৮ জুন ২০১৯ | আপডেট: ১৭:৪০, ২৮ জুন ২০১৯

Ekushey Television Ltd.

কিছু চাকরি আছে, যেখানে একটু কম বিশ্বস্ত হওয়াটাই আপনার যোগ্যতার মাপকাঠি। মানে নির্দিষ্ট কিছু চাকরিতে আপনার মিথ্যে বলার যোগ্যতার ওপর আপনার সফলতা নির্ভর করবে।

কোন আলোচনা শুরু করা কিংবা থামানো---দুই ক্ষেত্রেই, অন্যের বা নিজের অনুভূতিকে আঘাত হওয়া থেকে বাঁচাতে, এবং সর্বোপরি সামাজিক ও পেশাগত জীবন সহজ করার জন্য দিনে হাজারো ছোটখাটো মিথ্যে বলি।

কর্মক্ষেত্রে আমাদের কোন সহকর্মী মিথ্যে বললে আমরা বুঝতে পারি।

সবার সবদিন হয়তো ভালো যায় না, কাজ নিয়ে কেউ রোজ খুশী থাকে না কিংবা সহকর্মীর পদোন্নতিতেও রোজ সন্তুষ্ট হতে পারেনা একজন মানুষ।

কিন্তু মিথ্যে বলা যদি কারো কেবল মুডের ব্যপার না হয়, এটা যদি হয় চাকরির অবশ্যম্ভাবী শর্ত?

মিথ্যুকদের ব্যপারে কর্মক্ষেত্রের দৃষ্টিভঙ্গি

কর্মক্ষেত্রে মিথ্যে বলাকে নেতিবাচক-ভাবেই দেখা হয়। কাউকে যদি মিথ্যের আশ্রয় নিতে হয় সব সময়, তাহলে তার কর্মদক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেবে।

সেই সঙ্গে বিশ্বাস ও দলগত কাজের ক্ষেত্রে সহকর্মীর মিথ্যে বলা সমস্যা তৈরি করে। কিন্তু ছোটখাটো মিথ্যে বলা যাদের পেশার অংশ, তাদের ক্ষেত্রে ব্যপারটা কেমন?

এ ধরণের পেশার ক্ষেত্রে দেখা যায়, যে যত নিপাট মুখে গুছিয়ে বিশ্বাসযোগ্যভাবে মিথ্যা বলতে পারবে, তত ভালো।

যেমন ধরুন সেলসম্যান বা এয়ারহোস্টেজ, এসব পেশার মানুষেরা হাসিমুখে নিজের পণ্যের গুন একটু বাড়িয়ে বলবে।

কিংবা প্লেনে আপনি কোন ঝড়ঝঞ্জার মধ্যে থাকলে এয়ারহোস্টেজ কখনো আপনাকে বিনা হাসিতে সে খবর দেবে না।

নতুন এক গবেষণায় পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, কোন কোন পেশায় মিথ্যে ভালো বলার কারণেই টিকে থাকা যায়।

কেননা কোন কোন পেশা আছে যেখানে কর্মীদের ছোটখাটো মিথ্যে বলা জরুরি।

বিপণন বিষয়ক জরিপে দেখা গেছে, ক্রেতাদের নিয়ে যারা কাজ করেন, তারা বলেছেন ক্রেতারা চান পণ্য কিনে না ঠকতে।

সেলস বা বিনিয়োগ বিষয়ে পড়ছেন বা কাজ করেন এমন ৫০০ জনকে বলা হয়েছিল, তাদের দৃষ্টিতে কারা মিথ্যে বলেন বেশি।

বেশিরভাগ উত্তরদাতার বিশ্বাস যারা বেশি কপটতা দেখাতে পারে বা মিথ্যে বলতে পারে তারা সফল হয়।

যেমন ধরুন, বড় কোন বিপণন কাজের জন্য মিথ্যে বলতে পারেন এমন মানুষকে বেছে নিতে চেয়েছেন ৮০ শতাংশ উত্তরদাতা।

আবার কম বা ছোট জিনিস বিক্রির জন্য তুলনামূলক সৎ ব্যক্তিকে বেছে নিতে মত দিয়েছেন ৭৫ শতাংশ মানুষ।

কর্মক্ষেত্রে কী মিথ্যে বাড়তি সুবিধা দেয়

মিথ্যে বলাকে কিছুক্ষেত্রে স্বাভাবিক বলেন মনোবিদেরা। অনেক দার্শনিক হয়তো বলবেন, প্রকৃতিতে কতকিছু লুকনো থাকে।

পেশাদার ক্যারিয়ার কোচরাও উল্লেখ করেন, চাকরির দরখাস্ত লিখতে গিয়ে কে কবে দুয়েকটি যোগ্যতা বাড়িয়ে লেখেনি!

আর নিয়োগকারীরাও সেটা ঠিকই জানেন। তবে ধরুন ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট, বারটেন্টার বা মনোবিদ, তারা কোন খারাপ খবর সরাসরি কাউকে দেন না।

গুছিয়ে যা বলেন, তার প্রধান উদ্দেশ্য প্রশ্নকারী যেন আহত না হন তা নিশ্চিত করা।

মিষ্টি মিথ্যেগুলো

কিছু মিথ্যে আছে যেগুলো আমাদের ক্ষতি করে না, কিন্তু ব্যপারটা সত্যও নয়।

জরিপে দেখা গেছে, কর্মীদের মধ্যে একটা বিশ্বাস থাকে যে যেসব প্রস্তাব তারা বাস্তবায়ন করতে পারবেন না, সহকর্মীরা তা তাদের ওপর চাপানো যাতে না হয়, তা দেখবেন।

আবার খারাপ রিপোর্ট আসলে অনকোলজিষ্ট বা টিউমার বা ক্যান্সারের চিকিৎসক আপনাকে সেটা না জানিয়ে বলবেন, ভালো এসেছে রিপোর্ট।

সামাজিক মিথ্যের কারণ কী?

এ ধরণের সামাজিক মিথ্যে বা ছলনার আশ্রয় নেবার মূল উদ্দেশ্য থাকে অন্যকে সাহায্য করা। এর পেছনে একটা বড় কারণ হচ্ছে এক ধরণের সাংস্কৃতিক প্রভাব থাকে সমাজে।

সমাজের বিভিন্ন স্তর ও জায়গা থেকে আসা মানুষ শান্তি রক্ষায় একটি স্বস্তির পরিবেশ রাখার জন্য অনেক সময় মিথ্যে বলে।

যেমন এক গবেষণায় দেখা গিয়েছিল, যে অংশগ্রহণকারীদের বড় অংশটি যারা দক্ষিণ কোরিয়া ও গ্রীস থেকে এসেছে তারা বেশি মিথ্যে বলে।

এর কারণ তারা সমষ্টিগত সমাজের মধ্য থেকে এসেছে, ফলে অনেক মানুষের সাথে মিলিয়ে চলতে হয় তাদের।

আবার একক পরিবার বেশি এমন সমাজে যেমন জার্মানি ও অস্ট্রেলিয়া থেকে আসা মানুষের মধ্যে লুকোছাপা কম।

আবার অনেক মনোবিদ বলে থাকেন যে ভিন্ন ভাবে দেখার দৃষ্টি যাদের আছে, কিংবা যাদের কল্পনাশক্তি অত্যন্ত প্রবল তাদের মধ্যেও মিথ্যে বলার অভ্যাস থাকে।

কিন্তু সে মিথ্যেও কোন গুরুতর অপরাধ নয়। বিবিসি বাংলা

এসি

 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি