যৌন নিপীড়ন ঠেকাবে জ্যাকেট!
প্রকাশিত : ১৩:০৪, ২০ আগস্ট ২০১৮
নারীর ওপর যৌন নিপীড়ন থেকে সুরক্ষায় তৈরি হয়েছে অভিনব জ্যাকেট। মেক্সিকোর চার শিক্ষার্থী মিলে জ্যাকেটটি উদ্ভাবন করেছেন।
বলা হচ্ছে, এই জ্যাকেট পরাবস্থায় থাকলে কেউ যখন কোনো নারীর ওপর হামলে পড়তে চাইবে তখন জ্যাকেটের হাতা থেকে হামলাকারীর গায়ে বৈদ্যুতিক শক লাগবে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, তারা যে শহরে আছেন, সেখানে ধর্ষণের মতো যৌন হামলার ঘটনা বেড়ে যাওয়ার কারণে তারা এরকম একটি জ্যাকেট তৈরি করতে উৎসাহিত হয়েছেন।
তারা বলছেন, এই বৈদ্যুতিক শকের তীব্রতা এতোটাই কম যে এর ফলে জ্যাকেটটিকে কোনো ধরনের অস্ত্র হিসেবে গণ্য করা যাবে না। তবে এর মাধ্যমে যে কোন ধরনের যৌন হামলা ঠেকানো সম্ভব হবে।
পরীক্ষামূলকভাবে তৈরি এই জ্যাকেটের নাম দেওয়া হয়েছেন ওমেন ওয়েরাবেল।
প্রকৌশল, আইন ও রোবটিক্স বিভাগের চারজন শিক্ষার্থী মিলে এই জামাটি তৈরি করেছেন। তারা সবাই পুয়েবলা শহরে মন্টেরি ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজিতে পড়েন।
নতুন নতুন পণ্যের বানিজ্য নিয়ে ক্লাসে পরীক্ষামূলক কাজের অংশ হিসেবেই তারা এটি উদ্ভাবন করেছেন।
শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, আমাদের অনেক বান্ধবী ও পরিচিতদের কাছে শুনেছি যে তাদের উপর নানা ধরনের যৌন হামলা চালানো হয়েছে। এধরনের সহিংসতার ওপর কিছু গবেষণার পর আমরা এই জ্যাকেটের ধারণাটি নিয়ে এসেছি।
যেভাবে কাজ করে এই জ্যাকেট
শিক্ষার্থীরা প্রথমে সুতার তৈরি একটি ট্র্যাক সুট কিনে আনেন। তারপর তার লাইানিং-এর ভেতরে ৯ ভোল্টের একটি ব্যাটারি, একটি ট্রান্সফরমার এবং কিছু তার ঢুকিয়ে দেন। এগুলো এমনভাবে পেঁচানো অবস্থায় থাকে যে যিনি এই জ্যাকেট পরবেন তার গায়ে বিদ্যুতের শক লাগবে না।
বিদ্যুৎ চালু ও বন্ধ করার জন্যে সেখানে একটি সুইচ বা বোতাম লাগানো আছে। আছে একটি এলইডি বাতিও।
রোবটিক্সের শিক্ষার্থী গিওয়ান পার্ক সার্কিটের নকশা তৈরি করেন। তিনি বলেন, জ্যাকেটের একটি বোতামের মাধ্যমে এর ভেতরে বিদ্যুৎ চালু করা হয়। লাইট জ্বলে উঠতে বুঝতে হবে যে নিজেকে রক্ষা করার জন্যে জামাটি তৈরি হয়ে গেছে।
এরকম অবস্থায় যখন কেউ জ্যাকেটের হাতার ইলেকট্রোডকে স্পর্শ করবে তখন সার্কিটটি বন্ধ হয়ে যাবে এবং যিনি স্পর্শ করবেন তার গায়ে বিদ্যুতের শক লাগবে।
তখন নিপীড়নকারী হতভম্ব হয়ে যাবেন এবং তখনই নির্যাতিত নারী দৌড়ে পালাতে পারবেন এবং তিনি যে হামলার শিকার হয়েছেন সেটা তিনি আশপাশের লোকজনকে জানানোর সুযোগ পাবেন।
উদ্ভাবক শিক্ষার্থীরা বলেছেন, তারা এটিকে আরো কিছুটা উন্নত করতে চান। এতে সেন্সর লাগাতে চান। চান জ্যাকেটের হাতা ছাড়াও অন্যান্য জায়গাতেও ইলেকট্রোড বসাতে।
তারা বলছেন, এই প্রযুক্তি হয়তো পরে ব্লাউজ, স্কার্ট এবং ট্রাউজারের মতো পোশাকেও লাগানো যেতে পারে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, তারা প্রায় ৫০ ডলার দামে তাদের তৈরি এই জ্যাকেট বিক্রি করবেন।
সূত্র : বিবিসি।
/ এআর /