যৌন সম্পর্ক : নারীদের চেয়ে পুরুষদের হৃদরোগের ঝুঁকি বেশি
প্রকাশিত : ১৪:১৬, ১৪ নভেম্বর ২০১৭
যৌন সম্পর্ক আমাদের জীবনেরই একটি অংশ। গবেষণা মতে, যৌন সম্পর্ক স্থাপন শরীর ও মনের জন্য একটি উত্তম ব্যায়াম। তবে সম্প্রতি এই যৌন সম্পর্ক নিয়েই জানা যায় হৃদরোগের ঝুঁকির কথা। আর এতে নারীদের থেকে বেশি ঝুঁকিতে আছে পুরুষেরা।
সম্প্রতি কার্ডিয়াক এরেস্টের ওপর পরিচালিত এক গবেষণায় এমন তথ্য পাওয়া গেছে। গবেষণা বলছে, যৌন সম্পর্কের কারণে নারীদের থেকে পুরুষের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি। তবে যৌন সম্পর্কের কারণে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়া কিংবা হৃদযন্ত্র বন্ধ হয়ে যাবার ঘটনা খুব কমই ঘটে থাকে।
গবেষণায় ৪৫৫৭টি কার্ডিয়াক এরেস্টের ওপর গবেষণা চালিয়ে দেখা যায়, ৩৪টি ঘটনায় যৌন সম্পর্কে মিলনের সময় কিংবা এর পরবর্তী ১ ঘন্টার মধ্যে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হতে দেখা যায়। এর মধ্যে ৩২টি ঘটনাই ঘটে পুরুষের ক্ষেত্রে।
গবেষণাটি পরিচালনা করেন সিডার্স-সিনাই হার্ট ইন্সটিটিউটের সুমিত চঘ। তিনি বলেন, সেক্স বা যৌন সম্পর্কের সঙ্গে কার্ডিয়াক এরেস্ট বা হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হওয়ার সম্পর্কের ওপর পরিচালিত এটিই প্রথম কোনো গবেষণা। সম্প্রতি আমেরিকান হার্ট এসোসিয়েশনের এক সভায় গবেষণাপত্রটি তুলে ধরা হয়।
চিকিৎসকদের মতে, হার্ট এটাক এবং কার্ডিয়াক এরেস্টের মধ্যে কিছুটা পার্থক্য আছে। হৃদযন্ত্র যখন ঠিকমত কাজ করতে পারে না এবং হঠাত করে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায় তখনই কার্ডিয়াক এরেস্টের ঘটনা ঘটে। অন্যদিকে হৃদযন্ত্রে যখন রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায় তখনই হার্ট এটাক হয়। তারা বলছেন, কার্ডিয়াক এরেস্টের কারণে আক্রান্ত ব্যক্তি অচেতন হয়ে যেতে পারেন এবং তাঁর শ্বাস-প্রশ্বাস প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যতে পারে। এ অবস্থায় দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা না হলে রোগীর মৃত্যুও হতে পারে। তবে যৌন সম্পর্কের কারণে হৃদরোগে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা ১ শতাংশের কম। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে মধ্যবয়সী পুরষই বেশি।
ড. চঘ এবং তার দল ২০০২ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত প্রাপ্ত বয়স্কদের সঙ্গে কার্ডিয়াক এরেস্টের ঘটনার ফাইল পরীক্ষা করেন। যৌন সম্পর্কের ফলে হার্ট এটাকের কথা জানা থাকলেও এ গবেষণার আগ পর্যন্ত যৌন সম্পর্কের কারণে কার্ডিয়াক এরেস্টের বিষয়টি চিকিৎসকদের কাছে অজানাই ছিল।
কার্ডিয়াক এরেস্টের বিষয়ে জরুরী কিছু তথ্যঃ
- হাসপাতালের বাইরে যাদের কার্ডিয়াক এরেস্ট হয় তাদের ৯০ শতাংশেরই মৃত্যু হয়।
- জরুরী ভিত্তিতে সিপিআর সেবা দেয়া সম্ভব না হলে আক্রান্ত রোগীর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ১০ শতাংশ।
- কার্ডিয়াক এরেস্টের প্রথম ৫ মিনিটের মধ্যে সিপিআর সেবা দেয়া হলে রোগীর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা দ্বিগুণ থেকে তিন গুণ বেড়ে যায়।
সূত্র : বিবিসি।
//এস এইচ// এআর