যৌনকর্মী মিতা হত্যার রহস্য উদঘাটন, খদ্দের ৩ যুবক গ্রেপ্তার
প্রকাশিত : ১২:১৭, ২৩ অক্টোবর ২০২৪ | আপডেট: ১২:২৩, ২৩ অক্টোবর ২০২৪
দেশের বৃহত্তর পতিতাপল্লী রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ায় যৌনকর্মী সুমি ওরফে মিতা (২৫) হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে জেলা পুলিশ। সেইসঙ্গে ঘটনার সাথে জড়িত খদ্দের সেজে আসা ৩ যুবককে গ্রেপ্তার ও নিহত যৌনকর্মীর লুণ্ঠিত মালামালও উদ্ধার করা হয়েছে।
ওই হাত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত জানিয়ে মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে প্রেস ব্রিফিং করেছেন রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার মোছাঃ শামিমা পারভীন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর উপজেলার পাইকশা মাঝাইল গ্রামের আমদ সরদারের ছেলে আব্দুল কাদের (২৪), একই উপজেলার নিচুনপুর গ্রামের মোঃ জয়নাল শেখের ছেলে রাসেল শেখ (২০) ও পাইকশা মাঝাইল গ্রামের মাজহারুল শেখের ছেলে মোঃ মুরাদ শেখ (২২)।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে আব্দুল কাদেরকে ঢাকা মেট্রোর সূত্রাপুর থেকে এবং রাসেল ও মুরাদকে ঢাকা জেলার আশুলিয়া বিশমাইল হতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ব্রিফিং-এ পুলিশ সুপার মোছাঃ শামিমা পারভীন বলেন, ঢাকা জেলার দোহার থানার নারিশা চৈতাবাতর গ্রামের মৃত কাদের ফকিরের মেয়ে নিহত সুমি ওরফে মিতা। সে গত পাঁচ মাস যাবত রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে তিনটি রুম ভাড়া নিয়ে যৌন ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন। গত ৭ অক্টোবর রাত দেড়টার দিকে মিতা প্রতিদিনের ন্যায় অজ্ঞাতনামা তিন পুরুষকে রাত্রি যাপনের জন্য মদের বোতলসহ তার রুমে নিয়ে যায়।
পরের দিন সকালে গোয়ালন্দ থানা পুলিশ মিতার হাত-পা বাঁধা মরদেহ তার রুম থেকে উদ্ধার করে। তাকে মূলত দুর্বৃত্তরা হাত-পা বেধে গামছা পেঁচিয়ে শ্বাস রোধে হত্যা করে। এ ঘটনায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে গোয়ালন্দঘাট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
ক্লুলেস ওই হত্যা মামলাটি মাত্র ১৪ দিনের মধ্যে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে রহস্য উদঘাটন করা হয়। সেই সাথে তিন হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে গ্রেপ্তারকৃত আসামি মুরাদের কাছ থেকে মিতা’র ব্যবহৃত হাতের ব্রেসলেট ও ১টি টিকলি, আসামি কাদেরের কাছ থেকে মিতার ব্যবহৃত হাতের আরেকটি ব্রেসলেট এবং লুন্ঠিত ১৪ হাজার ২শ’ টাকার মধ্যে ১ হাজার ৬৫৫ টাকা এবং আসামিদের ব্যবহৃত মোবাইল উদ্ধারপূর্বক জব্দ করা হয়েছে।
তবে মিতার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি তারা ফিরে যাবার সময় যমুনা নদীতে ফেলে দিয়ে যায় বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের মঙ্গলবার বিকালে রাজবাড়ীর আদালতে সোপর্দ করা হয়। তারা এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিজেদের জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেছে।
ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোঃ শরীফ আল রাজীব, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) মুকিত সরকার, সহকারী পুলিশ সুপার (পাংশা সার্কেল) দেবব্রত সরকার, গোয়ালন্দ ঘাট থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) উত্তম কুমার ঘোষসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এএইচ
আরও পড়ুন