রং ছাড়াই কালো হবে পাকা চুল!
প্রকাশিত : ১৪:০৩, ২৯ ডিসেম্বর ২০২১
চামড়ার রং যতই ফর্সা হোক না কেন, চুল চাই কুচকুচে কালো। কিন্তু বয়স হলে চুল সাদা হবে এটা স্বাভাবিক। তবে চারপাশের মানুষের মধ্যে খেয়াল করলে দেখতে পাবেন, তরুণ বয়সেও অনেকের মাথাভর্তি পাকা চুল। মাথার কালো চুল পেকে সাদা হয়ে যাচ্ছে, এ চিন্তায় যখন রাতের ঘুম হারাম, তখনো অনেকেরই হয়তো অজানা, ঘরোয়া পদ্ধতিতে প্রাকৃতিক উপায়ে চাইলেই চুল পাকার সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
নানা কারণেই আমাদের চুল পাকে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, আমাদের ৩০ বছর বয়সের পর থেকে প্রতি দশকেই ১০ থেকে ২০ শতাংশ চুল পেকে যায়। তবে চুল পাকার প্রধান কারণ হচ্ছে আমদের শরীরের ত্বকের রং নির্ধারণ করে যে পিগমেন্ট সেল, তা থেকে মেলানিন নামের একধরনের রঞ্জক কণিকা উৎপাদিত হয়। সেই মেলানিনের কারণেই চুলের রং কালো হয়। কিন্তু আমাদের শরীরে যখন মেলানিন উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়, তখনই চুল পেকে যায়।
এ ছাড়া জিনগত কারণ তথা পারিবারিক কারণেও অনেকের দ্রুত চুল পাকে। পাশাপাশি অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, অপরিমিত খাদ্যাভ্যাস, ভিটামিন এ, ই ও ডি–এর অভাব, চুলের যত্ন না নেওয়া, অতিরিক্ত মানসিক চাপ, অতিমাত্রায় ধূমপানসহ বিভিন্ন কারণেই অল্প বয়সে চুল পাকতে পারে।
চুল পাকা রোধে ঘরোয়া সমাধান
> প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে মাথায় চুলের গোড়ায় নারকেল তেল ম্যাসাজ করুন। সকালে ঘুম থেকে জেগে উঠে স্বাভাবিকভাবে ধুয়ে ফেলুন। অল্প দিনেই চুল পাকার সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। নারকেল তেলের সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে মাখলেও উপকার পাওয়া যায়।
> আদার রস ও মধু একত্রে খেলেও মুক্তি পাবেন সাদা চুল থেকে। এক চামচ আদার রসের সঙ্গে এক চামচ মধু নিয়মিত খেলেও অসময়ে চুল পাকা রোধ হবে।
> চুল অকালে পেকে যাওয়া ঠেকাতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে পেঁয়াজবাটা। প্রতিদিন নিয়মিত পেঁয়াজবাটা চুলের গোড়ায় মালিশ করুন। ৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। চুল পাকার সমস্যা অল্প দিনেই কমে আসবে।
> আমলকী হতে পারে আপনার অকালে চুল পাকা রোধের অন্যতম উপাদান। আমলকীর গুঁড়া বা তেল-এ দুটির যেকোনওটি ব্যবহার করতে পারেন। আমলকীর তেল চুলের মেলানিন প্রবাহ ঠিক রাখতে সহায়তা করে। ফলে চুল হবে কালো। এ ছাড়া আমলকীর গুঁড়া ও লেবুর রসের মিশ্রণ চুলের গোড়ায় মালিশ করুন ২০ মিনিট, এরপর চুল ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে পাকা চুলের সমস্যায় উপকার পাবেন।
> চুলের সুরক্ষায় মেহেদির ব্যবহার বেশ প্রাচীন। চুল সাদা হয়ে যাওয়া রোধে মেহেদিপাতার বাটার সঙ্গে সরিষার তেল মিশিয়ে চুলে মাখলে তা কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
> চুল কালো রাখতে কালো তিল বেশ উপকারী। সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন এক টেবিল চামচ পরিমাণ কালো তিল খেলে চুল পাকা তো কমবেই, পাশাপাশি চুল থাকবে কালো।
> স্বাস্থ্যকর চুল পেতে চাইলে বাদাম হতে পারে কার্যকর সমাধান। পাশাপাশি চুল পাকা রোধে রাখবে ভূমিকা। তাই নিয়মিত বাদাম খাওয়ার পাশাপাশি বাদামের তেল চুলে মাখলেও উপকার পাবেন।
> গাজরে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, কে ও বি৬; পটাশিয়াম, বিটা ক্যারোটিন, যা চুলের সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে বেশ কার্যকর। প্রতিদিন অর্ধেক গ্লাস পরিমাণ গাজরের জুস খেলে অকালে চুল পাকার সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
> ছোলায় আছে বি১২ ও ফলিক অ্যাসিড। সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে ছোলা খেলে স্বাস্থ্য যেমন ভালো থাকবে, পাশাপাশি চুল হবে কালো।
> কচি গমগাছের পাতার জুস চুল পাকা রোধে রাখতে পারে দারুণ ভূমিকা। কচি গমগাছের পাতায় আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ ও সি, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও অ্যামিনো অ্যাসিড। প্রতিদিন ১০০ গ্রাম পরিমাণে কচি গমপাতার জুস খেলে চুল পাকা কমবে, পাশাপাশি সাদা চুলও হয়ে উঠবে কালো।
সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া, আনন্দবাজার পত্রিকা
এমএম/এসবি