ঢাকা, বুধবার   ০২ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

অ্যাপোলো হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদের পরামর্শ

রমজানে ডায়াবেটিস আছে এমন অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের করণীয়

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৮:২৪, ৮ মে ২০১৮ | আপডেট: ১৪:১০, ১৭ মে ২০১৮

Ekushey Television Ltd.

যারা মা হতে যাচ্ছেন বা সন্তান সম্ভাবা তাদের অনেকের গর্ভকালীন অবস্থায় ডায়াবেটিস ধরা পড়ে বা ডায়াবেটিস থাকে। এদেরকে আমরা বলি জিডিএম। এই ডায়াবেটিস থাকলে সেই মা রোজা রাখতে পারবেন কিনা তা সর্বপ্রথম তার গাইনোকোলজিস্ট- এর কাছ থেকে অনুমুতি নিতে হবে। কারণ, এখানে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ ছাড়াও বড় বিষয় যেটি থাকে, তা হলো তার গর্ভস্থ শিশুর সঠিক বেড়ে উঠা বা বিকাশ।

এখানে একটা আশঙ্কা থেকে যায়, গর্ভকালীন অবস্থায় কোনো কারণে যদি মা খাবার কমিয়ে দেয় বা কম খায় বা সঠিক খাবারটা না খায় তখন দেখা যায়, গর্ভস্থ শিশুর স্বাভাবিক বেড়ে উঠা ঠিক মতো হয় না। আবার অনেকে আছেন গর্ভকালীন অবস্থায় ইনুসলিন নিচ্ছেন বা ওষুধ খাচ্ছেন। রোজা রাখার ফলে তাদের সুগার কমে যাচ্ছে কি না বা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না তা নির্ধারণের জন্য গাইনোকোলজিস্টের পাশাপাশি একজন ডায়াবেটিসের ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে তাকে একটা রুটিন এর মধ্যে আসতে হবে।

রোজা রাখা অবস্থায় সাধারণত তিনটি খাবারের মাধ্যমে আমাদের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করতে হয়। ইফতার, রাতের খাবার ও সেহরী। গর্ভকালীন অবস্থায় যদি ডায়াবেটিস থাকে তাহলে সেই মা সতর্কতার সাথে তার ক্যালরি গ্রহণ করবে। কোনোভাবে হাইপো যাতে না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবে। খাবারে কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার রাখবে। যেমন ইফতারিতে একটা ফল বা খেজুর খেতে পারে। ঘরে তৈরী ফলের জুস একটু পানি মিশিয়ে খেতে পারে। টক দইয়ের লাচ্ছি তারা খেতে পারে। ভাজা পোড়া খাবারকে উচিত ব্যালেন্স করা। গর্ভকালীন ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সবচেয়ে উত্তম হচ্ছে একটা রুটি, সব্জি, ডিম, দই, যা আমরা অন্য সময় সকালের নাস্তা হিসেবে খাই, তা খেলে সুবিধা হচ্ছে তার এ্যাসিডিটি হবেনা।

গর্ভকালীন অন্য সমস্যা যেমন কোষ্ঠকাঠিন্য হবে না। সে ভালো মতো রোজা রাখতে পারবে এবং গর্ভস্থ শিশুরও পুষ্টির কোনো ঘাটতি হবে না। যদি সেই মা ইনুসলিন নিয়ে থাকেন তাহলে তার ডিনার একরকম হবে। আর যদি ইনুসলিন না নেন তাহলে তার ডিনার আরেক রকম হবে। যদি ইনুসলিন না থাকে তাহলে একটু দুধ, চিড়া, ওটস অথবা রুটি দিয়ে সবজি ইত্যাদি খেতে হবে। তবে পরিমিত পরিমাণ ভাতও খেতে হবে। তবে সেক্ষেত্রে প্রোটিন থাকতে হবে। কারণ গর্ভাবস্থায় রোজা রাখলে ডায়াবেটিস রোগীদের মাছ, মাংস ও ডিম নিশ্চিত করতে হবে। আর সেহেরিতে ভাত এবং সবজি অর্থাৎ সহজপাচ্য খাবার ও প্রোটিন থাকবে। সেহরীতে আযানের আগ মুহূর্তে এক কাপ দুধ খেতে পারলে অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের ক্যালশিয়ামের চাহিদা পূরণে সহায়ক হয়। সুতরাং সতর্কতার সঙ্গে ডাক্তার ও ডায়াটেসিয়ানের পরামর্শ অনুযায়ী রোজা রাখলে একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য ও তার আগত শিশুর জন্য ভালো।

লেখক পরিচিতি: তামান্না চৌধুরী এ্যাপোলো হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ ও বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অফ নিউট্রিশনিষ্টস ও ডায়টিশিয়ানস এর ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি