‘রাজধানীতে খোলা জায়গা কমে ৪.৬১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে’
প্রকাশিত : ২০:১০, ৪ জানুয়ারি ২০২০
রাজধানীর বাংলামোটরস্থ নিজস্ব কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিআইপি নেতৃবৃন্দ
রাজধানীতে গত ২০ বছর আগে খোলা জায়গার পরিমাণ ছিল ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ। ২০০৯ সালে তা কমে দাঁড়ায় ৭ দশমিক ৮০ শতাংশ। আর ২০১৯ সালে এসে তা থেকে আরও কমে মাত্র ৪ দশমিক ৬১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
বিআইপি'র গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে ঢাকার ৮২ ভাগ এলাকা কংক্রিটে ঢেকে গেছে, দুই দশক আগেও যা ছিল ৬৪ দশমিক ৯৯ ভাগ।
শনিবার (০৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর বাংলামোটরস্থ বিআইপি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা শহরের সবুজ এলাকা, জলাশয়, খোলা উদ্যান ও কংক্রিট আচ্ছাদিত এলাকার বিদ্যমান অবস্থা ও বিগত ২০ বছরে পরিবর্তন’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।
গবেষণা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, রাজধানী ঢাকার বেশ কিছু অংশে প্রয়োজনের তুলনায় জলজ ভূমি ও সবুজ গাছপালার পরিমাণ শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে। পাশাপাশি ৮২ ভাগ এলাকাই কংক্রিটে ঢেকে গেছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, গত ১৯৯৯ সালে ঢাকায় জলজ ভূমি ছিল ১৪ দশমিক ২৫ শতাংশ, ২০০৯ সালে তা কমে দাঁড়ায় ৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ। আর ২০১৯ সালে তা আরও কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৪ দশমিক ৩৮ শতাংশে।
২০ বছর আগে ঢাকায় সবুজ এলাকা ছিল ৬ দশমিক ৬৯ শতাংশ, ২০০৯ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৯ দশমিক ২৯ শতাংশে। কিন্তু বর্তমানে ২০১৯ সালে তা আবার কমে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ২০ শতাংশে।
অন্যদিকে, রাজধানীতে ১৯৯৯ সালে কংক্রিট আচ্ছাদিত এলাকা ছিল ৬৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ। ২০০৯ সালে তা বেড়ে হয় ৭৭ দশমিক ১৮ শতাংশ। আর ২০১৯ সালে এসে তা আরও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮১ দশমিক ৮২ শতাংশে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ পদ্ধতি ইউএসজিএস আর্থ এক্সপ্লোরার ডেটাবেইজ সিস্টেম থেকে সংগৃহীত ল্যান্ডসেট ডেটা ব্যবহার করে এ গবেষণা প্রতিবেদন তৈরি করেছেন বলে জানান বিআইপি সাধারণ সম্পাদক আদিল মুহাম্মদ খান।
গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশের পর এই নগর পরিকল্পনাবিদ বলেন, নগরের উন্মুক্ত স্থানগুলো আমরা নগরায়নের নামে ভরাট করে ফেলছি। নগরীতে ৩০ ভাগ জলাশয় ও সবুজ এলাকা বাড়ানোর কথা থাকলেও এ বিষয়ে আমরা গুরুত্ব দেইনি। আধুনিক নগরের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে কর্তৃপক্ষ নজর দিতে ব্যর্থ হয়েছে।
এসময় রাজধানীতে ওয়ার্ডভিত্তিক জলাশয় ও সবুজ ‘পাবলিক স্পেস’ তৈরির পাশাপাশি নগরীকে ঘিরে থাকা চার নদী বুড়িগঙ্গা, বালু, শীতলক্ষ্যা ও তুরাগের তীরে সবুজ বেষ্টনী তৈরির প্রস্তাব করেন তিনি।
আদিল মুহাম্মদ বলেন, “জমি পাওয়া না গেলে ওয়ার্ডগুলোতে ছোট ছোট স্পেস তৈরি করা যেতে পারে। ঢাকাকে বাঁচাতে হলে এর কোনও বিকল্প নেই।” পাশাপাশি রাজধানীতে যাতে নতুন করে আর আবাসিক এলাকা গড়ে না ওঠে, সে ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিআইপির সাবেক সভাপতি এ কে এম আবুল কালাম ও সাবেক সহ-সভাপতি মো. ফজলে রেজা সুমন।
এনএস/আরকে
আরও পড়ুন