রাজবাড়িতে পাটক্ষেতে ছাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যা চেষ্টা
প্রকাশিত : ১৮:৩০, ৮ জুন ২০১৯ | আপডেট: ১৯:১৪, ৮ জুন ২০১৯
ফেনীর মাদ্রাসা ছাত্রী নুরসাত জাহান রাফির মতই এবার এক স্কুল ছাত্রীকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। অশ্লীল ছবি তুলে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকির পর দাবিকৃত চাঁদা না পেয়ে ঐ ছাত্রীকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়। এ ঘটনায় জড়িতরা রাফি হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের মতই বোরকার অভিনব কায়দা বেছে নেয়। ঘটনাটি ঘটেছে সদর উপজেলার পাঁচুরিয়া ইউনিয়নের খোলাবাড়িয়া গ্রামে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে ওই স্কুলছাত্রীর বাবা ফজলুর রহমান বাদী হয়ে শিল্পী বেগম নামে এক নারীসহ অজ্ঞাত আরও চারজনের বিরুদ্ধে রাজবাড়ি সদর থানায় মামলা করেছেন। শিল্পী বেগম একই গ্রামের জাহাঙ্গীর মিজির স্ত্রী। পুলিশ মামলার আলামত হিসেবে ওই স্কুলছাত্রীর পুড়ে যাওয়া কামিজ ও সালোয়ার জব্দ করেছে। ভুক্তভোগী স্থানীয় খানখানাপুর তমিজ উদ্দিন খান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
মামলায় বাদী অভিযোগ করেন, গত ১২ এপ্রিল স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার সময় অজ্ঞাত কয়েকজন তার মেয়েকে জোরপূর্বক রাস্তার পাশে জঙ্গলে নিয়ে ছুরি দিয়ে ভয় দেখিয়ে অশ্লীল ছবি তোলে। সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে অভিযুক্ত শিল্পী বেগম তার মেয়ের কাছে দুই লাখ টাকা দাবি করে। ঈদের দিন বাড়ির পাশে পুকুর থেকে গোসল করে বাড়ি ফেরার পথে অজ্ঞাত এক লোক পেছন থেকে তার মেয়ের মাথায় আঘাত করে। পরে স্থানীয়ভাবে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এরপর গত ৬ জুন দুপুরে বাড়ির বারান্দা থেকে অজ্ঞাত চার বোরকা পরা লোক তার মুখ চেপে ধরে তাকে বাড়ির পেছনে একটি পাট ক্ষেতে নিয়ে যায়। সেখানে তার মেয়ের ওড়না দিয়ে হাত, পা ও মুখ বেঁধে ম্যাচের কাঠি দিয়ে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। তার মেয়ে মাটিতে গড়াগড়ি করায় আগুন বাড়তে পারেনি। পরে মেয়ের গোঙানোর শব্দ শুনে তার স্ত্রী গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। জুলিকে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
রাজবাড়ী সদর থানার ওসি স্বপন কুমার মজুমদার জানান, মামলার এজাহারে চারটি ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। পুলিশ প্রতিটি ঘটনাই গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। পুলিশ স্কুলছাত্রীর পুড়ে যাওয়া কামিজ ও সালোয়ার জব্দ করেছে। আসামি শিল্পী বেগমসহ অভিযুক্তদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে। রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার আসমা সিদ্দিকা মিলি ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউল করিম শনিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এর আগে গত ৬ এপ্রিল ফেনীর সোনাগাজীতে নুসরাত জাহান রাফি নামে এক মাদ্রসাছাত্রীর গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। পরে ১০ এপ্রিল রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নুসরাত। এ ঘটনায় সারা দেশে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে।
এমএস/আরকে
আরও পড়ুন