ঢাকা, শুক্রবার   ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

রাজীব হত্যায় গান্ধী পরিবারের হাত রয়েছে : বিজেপি নেতা সোয়ামী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৭:৫৬, ১২ মার্চ ২০১৮

সম্প্রতি কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী তার পিতা রাজীব গান্ধীর খুনিদের ‘মাফ’ করে দিয়েছেন বলে বক্তব্য দিয়েছেন। তার এমন বক্তব্যে ‘রহস্যে’র গন্ধ পাচ্ছেন বিজেপী নেতা সুবরামনিয়ান সোয়ামী। তিনি মনে করেন, রাজীব গান্ধী হত্যাকাণ্ডে গান্ধী পরিবারের হাত থাকতে পারে।

১৯৯১ সালে তামিল বিদ্রোহীদের হাতে খুন হন ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী। এ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তিও দেয়া হয়। এদের মধ্যে অন্যতম নলিনী শ্রীহরনকে প্রথমে মৃত্যুদন্ড পরে সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেওয়া হয়।

সম্প্রতি বোন প্রিয়াংকা দেবীকে সাথে নিয়ে এক অনুষ্ঠানে রাজীব পুত্র রাহুল গান্ধী বলেন যে, তারা তাদের বাবার খুনীদের মাফ করে দিয়েছেন। তারা এ বিষয়টি নিয়ে আর ভাবছেন এবং খুনীদের বিরুদ্ধে কোন ধরনের কর্মকান্ডেও জড়াতে চান না।

তবে গান্ধী ভাইবোনদের এমন বক্তব্যকে মোটেও সহজভাবে নেয়নি ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টি বিজেপি’র নেতা সুবরামনিয়ান।

রাজীব গান্ধীর খুনের পেছনে গান্ধী পরিবারের ‘জীবিত সদস্য’দের আতাত রয়েছে বলে সন্দেহ করেন এই নেতা।

এক টুইট বার্তায় তিনি বলেন, “রাজীবের এলটিটিই (তামিল সংগঠন) খুনীদের তার ছেলের (রাহুল গান্ধী) মাফ করে দেওয়ার বিষয়ে এটা একটি ‘সুপারি’ হত্যাকান্ড বলেই মনে হচ্ছে”।

ভারতে ‘সুপারি কিলিং’ বলতে ভাড়াটে খুনী দিয়ে হত্যাকান্ডকে বোঝায়।

তার এমন সন্দেহের যুক্তিতে সোয়ামী প্রশ্ন রেখে বলেন, “যদি এখানে সন্দেহজনকক কিছু না থাকত তাহলে প্রিয়াংকা (রাজিব গান্ধীর মেয়ে এবং রাহুল গান্ধীর বোন) কেন জেলহাজতে গিয়ে সাজা পাওয়া আসামীদের সাথে দেখা করেন? আর কেনই বা সোনিয়া গান্ধী (রাজীব গান্ধীর স্ত্রী) লন্ডনে থাকা নলিনির মেয়ের পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছেন?”

সুবরামনিয়ানের সন্দেহ যে, রাজীব গান্ধীর খুনিদের সাথে গান্ধী পরিবারের কোন না কোন ধরনের ‘সমঝোতা’ আছে।

ভারতীয় গণমাধ্যম এএনআই’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই জ্যেষ্ঠ্য রাজনীতিবীদ আরও বলেন, ‘এলটিটিই বলেছে যে, তারা রাজীবকে এই কারণে খুন করেছে যে, রাজীব শ্রীলংকায় তামিল বিদ্রোহীদের দমনে ভারতীয় বাহিনী পাঠিয়েছে। তবে রাজীব গান্ধী শুধু ভারতের সংসদের আদেশই পালন করছিলেন।’

‘রাজীব একজন সত্যিকার দেশপ্রেমিক ছিলেন। আর তার খুনিদের কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া উচিত নয়। আমি বুঝতে পারি না যে, সেইসব খুনীদের প্রতি কেন আমরা নমনীয় হচ্ছি’-যোগ করেন সুবরামনিয়ান।

এসময় রাহুলের বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, রাহুলের বক্তব্যে কোন দেশপ্রেম ছিল না। তাকে বুঝতে হবে যে, যাদেরকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে তারা শুধু তার বাবার খুনি না। বরং ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রীরও খুনি।

সোনিয়া আর প্রিয়াংকার দিকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে তিনি বলেন, “জেল হাজতে কয়েদিদের শুধু তাদের স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সুযোগ আছে। তাহলে প্রিয়াংকা কেন জেল হাজতে তাদের দেখতে যান? তিনি তো তাদের আত্মীয় বা স্বজন না!

“আর সোনিয়াই বা কেন নলিনীর মেয়ের পড়াশুনার দায়িত্ব নিয়েছেন? নলিনীকে কেন ইন্দিরা গান্ধী বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞানে বৃত্তি দেওয়া হয়েছিল? আমি বুঝিনা খুনীদের প্রতি তাদের এত দয়া-মায়া কেন? আমার মনে হয় কোথাও কিছু একটা গলদ আছে”।

রাহুল গান্ধীর খুনের ঘটনার পুনঃতদন্তেরও দাবি জানান সোয়ামি।

নিজের পিতার খুনীদের মাফ করার সেই বক্তব্যে রাহুল গান্ধীর অন্য আরেকটি বক্তব্য নিয়েও বেশ বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।

এলটিটিই নেতা ভিলুপিল্লাই প্রভাকরণের মৃত্যুর বিষয়ে তিনি বলেন, “যখন আমি প্রভাকরণের মৃতদেহ আমি মাটিতে পরে থাকতে দেখলাম তখন দুইটি অনুভূতি আমার মধ্যে কাজ করেছে। এক, কেন তারা এই মানুষটিকে এভাবে অত্যাচার করছিল? আর দুই, তার প্রতি এবং তার সন্তানদের প্রতি আমার সত্যিই অনেক দুঃখ হচ্ছিল”।

সূত্রঃ জি নিউজ

//এস এইচ এস// এআর  


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি