ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪

রাবিতে ছিনতাই আতঙ্কের শেষ কোথায়?

রাবি সংবাদদাতা

প্রকাশিত : ১৪:৩৮, ২৫ অক্টোবর ২০১৯

ক্যাম্পাসে একা -একা হাটলেও ভয় লাগে, কখন জানি আমাকেও ছুরি মেরে সব ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পর্যাপ্ত  নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও আমরা ক্যাম্পাসে অনিরাপদ। কিন্তু কেন?  একের পর এক ঘটনা ঘটেই যাচ্ছে।  আর প্রশাসন দিচ্ছে আশ্বাসের বাণী। আমরা এই অনিরাপদ পথচলার অবসান চাই। বহিরাগত মুক্ত ক্যাম্পাস চাই। নিরাপদ ও বহিরাগতমুক্ত ক্যাম্পাস দাবি জানিয়ে কথাগুলো বলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী। 

সম্প্রতি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ধারাবাহিকভাবে একের পর এক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেই চলছে। বিগত কয়েকটি মাসের ঘটনার পর্যবেক্ষণ করলে আমরা বুঝতে পারি ক্যাম্পাসের কতটা অনিরাপদ। গত এক সপ্তাহে বিভিন্ন জায়গায় এমন ৪টি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। 

সন্ধ্যা নামলেই শুরু হয় দুর্বৃত্তদের দৌরাত্ম। ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করেও নতুন পরিকল্পনার ফাঁদ পেতেছিল এসব দুর্বৃত্তরা। এ সময় ছিনতাইয়ের কবলে পড়তে হয়েছে ভর্তিচ্ছুদের।

এসব ঘটনাগুলো ঘটে যাওয়ার পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন বেশির ভাগ ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করতে না পারায় ক্যাম্পাসজুড়ে বিরাজ করছে আতঙ্ক। আতঙ্কে বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে শিক্ষার্থীদের মাঝে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

সর্বশেষ গত বুধবার (২৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুন্নুজান হলের সামনে ছিনতাই করতে ব্যর্থ হয় স্থানীয় দুই যুবক। পরে তাদের চিহ্নিত করে পুলিশের হাতে তুলে দেয় ক্ষমতাশীন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার সামনে ছিনতাইয়ের শিকার হয় তিন ভর্তিচ্ছু। ছিনতাইকারীরা তাদের কাছ থেকে দুই হাজার টাকাসহ তিনটি মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় মতিহার থানায় একটি মামলা হলেও এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ প্রশাসন।

শুধু তাই নয় গত ১৮ অক্টোবর রাত সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় অর্থনীতি বিভাগের ফিরোজ আনাম নামের এক শিক্ষার্থীকে ছিনতাই চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে মাথায় ছুরিকাঘাত করে গুরুতর জখম করে রাবি ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত এক নেতা ও স্থানীয় সন্ত্রাসী।

এ ঘটনার পরপরই ক্ষোভে ও নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবি জানিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরাসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের তোপে মুখে পড়ে জড়িতদের গ্রেফতার করতে বাধ্য হয়। এ ঘটনার ১৭ অক্টোবর  সন্ধ্যায় ড. কুদরত-এ-খুদা বিজ্ঞান ভবনের সামনে আরেকটি ছিনতাইয়ের শিকার হয় রাবির এক শিক্ষার্থী।

এসব ব্যতিরেকেও অনেকের অগোচরে ১০ দিনে চুরি হয়েছে অন্তত ২০টি সাইকেল। তাছাড়া  ছিনতাইসহ নানা অপ্রীতিকর ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের। 

মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম হাফিজুর রহমান এসব বিষয়ে বলেন, যেসব ঘটনায় থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। সেগুলোতে উদ্ধার এবং অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশ অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর লুৎফর রহমান জানান, ক্যাম্পাসের নিরাপত্তায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রক্টর দফতর কাজ করে যাচ্ছে। ছিনতাই চক্রে জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারও করা হচ্ছে। আশা করছি এসব অপকর্মে জড়িতরা কেউ ছাড় পাবে না।


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি