ঢাকা, শনিবার   ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বিবিসি বিশ্লেষণ

রাশিয়া বিরোধী ঐক্যের নেপথ্যে

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৭:৩৯, ২৮ মার্চ ২০১৮ | আপডেট: ১৮:৩৮, ২৮ মার্চ ২০১৮

প্রথমে যুক্তরাজ্যই শুরু করেছিল। যুক্তরাজ্যে সাবেক এক রুশ গুপ্তচর ও তার মেয়েকে বিষাক্ত রাসায়নিক গ্যাস প্রয়োগে হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদে তেরেসা মে সরকার ২৩ রুশ কূটনীতিককে ব্রিটেনছাড়া করে। তার পরপরই যুক্তরাষ্ট্রসহ ২৪ট দেশ একই অভিযোগে ১৩৯ কূটনীতিককে বহিষ্কার করে।

রাশিয়ার বিরুদ্ধে ওয়াশিংটন ও ইউরোপীয় দেশগুলোর এই পদক্ষেপকে নাটকীয় ও আকস্মিক বলে মনে হলেও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রতিবেদন পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, রাশিয়াকে নিয়ে ট্রাম্পের ধোঁয়াশাপূর্ণ অবস্থান ও বন্ধুত্বপূর্ণ বাগাড়ম্বরের আড়ালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন সুদীর্ঘ পরিকল্পনামাফিক রুশবিরোধী পদক্ষেপ নিয়েছে।

রুশ আধিপত্য নিয়ে ইউরোপীয় দেশগুলোর একাংশ আগে থেকেই ক্ষুব্ধ ছিল। তবে অপর একটি অংশের রাশিয়ার সঙ্গে স্বার্থসংশ্নিষ্টতা ছিলো। কিন্তু রুশ গুপ্তচর ও তার মেয়ের হত্যাচেষ্টায় মস্কোর সংশ্নিষ্টতা দাবি করে ইউরোপীয় দেশগুলো এককাতারে চলে আসে। আর এর ফলেই ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে রাশিয়ার বিরুদ্ধে সমন্বিত এই পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হয়েছে।

কয়েকদিন আগেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বন্ধুত্বপূর্ণ কথাবার্তা সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম দখল করছিল্। ওই সময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগন ও হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে অনেকগুলো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। আফগানিস্তান থেকে উত্তর কোরিয়া থেকে সিরিয়া- বিশ্বজুড়ে রাশিয়াকে মোকাবেলায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউস ও পেন্টাগনের নীতিবিষয়ক চূড়ান্ত স্তরে নথিতে রাশিয়াকে পুনরায় যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা পরিকল্পনার কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে আসা হয়। গত সোমবার ৬০ রুশ কূটনীতিককে বহিস্কারের আগেই এসব ঘটনা ঘটেছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন দৃঢ় সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে খুব একটা আদর্শ নয়। কিন্তু গত ৪ মার্চ যুক্তরাজ্যে নার্ভ এজেন্ট হামলা সব সীমা অতিক্রম করেছে বলে মনে করছেন ইউরোপীয় নেতারা।  

গত সোমবার রুশ কূটনীতিকদের একযোগে বহিস্কারের সিদ্ধান্তটি ছিল নাটকীয় এবং ইঙ্গিতপূর্ণ। এর মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে রাশিয়ার যে কোনো আগ্রাসী পদক্ষেপের বিরুদ্ধে কঠোর ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত স্পষ্ট হয়েছে। ইইউর জন্য রাশিয়া সব সময় জটিল ইস্যু। মহাদেশটির জ্বালানি সরবরাহে রাশিয়ার ভূমিকার কারণেই এ জটিলতা।

এ ছাড়া রাশিয়াকে মোকাবেলায় বিভিন্ন দেশের নেতাদের মতের পার্থক্যও রয়েছে। নার্ভ এজেন্ট হামলার ধরনের কারণে ইইউ কর্মকর্তাদের এটিকে অবজ্ঞা করার সুযোগ ছিল না। ফলে না চাইলে সমন্বিত পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে এক ধরনের ঐক্য লক্ষ্য করা গেছে দেশগুলোর মধ্যে। ইইউ দেশগুলোর সমন্বিত পদক্ষেপের পক্ষে কাজ করে ট্রাম্প প্রশাসনও। হোয়াইট হাউসের দুই কর্মকর্তা জানিয়েছিল, রাশিয়ার বিরুদ্ধে একই ধরনের পদক্ষেপ নিতে ইউরোপীয় মিত্রদের এগিয়ে আসা নিশ্চিত করতে চাইছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

উল্লেখ্য, শীতল যুদ্ধের পর এই প্রথম এসব দেশ ন্যূনতম একজন রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কার করল।

 

একে//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি