‘রাষ্ট্রীয় শক্তিকে অপব্যবহার করে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছিল’
প্রকাশিত : ১৮:৫৫, ২৯ আগস্ট ২০১৮
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মো. হারুন-উর-রশিদ আসকারী বলেছেন,‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এ দেশের কিছু অতি বিপ্লবী শক্তি এবং পরাজিত পাকিস্তানের প্রতিনিধি ও সিআইএর প্রতিনিধি যারা জাতির পিতাকে স্বপরিবারে হত্যার নীলনকশা করেছিল, তারাই আবার একতাবদ্ধ হয়ে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার নীল নকশা করে। তাই ১৫ আগস্ট এবং ২১ আগস্ট একইসূত্রে গাঁথা। এটি কোন বিচ্ছিন্ন কোন ঘটনা নয়’
বুধবার (২৯ আগস্ট) ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড হামলা দিবস স্মরণে প্রশাসন ভবনের সামনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় ভাইস চ্যান্সেলর ড. মো. হারুন-উর-রশিদ আসকারী এ সব কথা বলেন।
তিনি বলেন, নীল নকশাকারীরা বুঝতে পেরেছিল বঙ্গবন্ধু পরিবারের একফোঁটা রক্ত যদি বেঁচে থাকে তাহলে বঙ্গবন্ধু আরও সহস্র শক্তিতে বলীয়ান হয়ে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবেন। আর সেটিই হয়েছে, জননেত্রী শেখ হাসিনা এ দেশের মাটিতে ফিরে এসে অতি অল্প সময়ের মধ্যে যেভাবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তিকে একত্রিত ও সংঘটিত করেছিলেন, যার মধ্য দিয়ে জনগণের রায় নিয়ে দীর্ঘ ২১ বছর পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এসেছিল। ষড়যন্ত্রকারীরা তখনই বুঝেছিল যে, একেই বলে বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি এবং বঙ্গবন্ধুর যোগ্য উত্তরসূরী। আর এজন্য তারা ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট জননেত্রীকে হত্যার নীল নকশা করে।
ভাইস চ্যান্সেলর বলেন, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার সবচেয়ে ভয়াবহ দিক হলো যে, রাষ্ট্রীয় শক্তিকে অপব্যবহার করে এই গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছিল। শুধু তাই নয়, এই গ্রেনেড হামলার ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হয়েছিল এবং জজ মিয়া নাটক সাজিয়ে বিচার ব্যবস্থাকে প্রহসনে রুপান্তরিত করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, এই ষড়যন্ত্রকারীরাই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থেকে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে জাতির পিতা হত্যার বিচার প্রক্রিয়াকে বিঘ্নিত করেছিল। এজন্য কারা এই চক্র, কারা এই অতি বিপ্লবী শক্তি তা আমাদেরকে চিনতে হবে, জানতে হবে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারে ১২ জনের মৃত্যুদন্ড হয়েছে যাদের মধ্যে এখনো ৬ জন পলাতক রয়েছে। পলাতক খুনিদের যে কোন মূল্যে বাংলার মাটিতে এনে সেই বিচারের রায় কার্যকর করতে হবে। একইসঙ্গে যারা ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা ঘটিয়েছে এবং জার্মানি থেকে গ্রেনেড কাদের পৃষ্টপোষকতায় কিভাবে বাংলাদেশে এসেছে, সেগুলোরও চুলচেরা বিশ্লেষণ করে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনতে হবে।
এছাড়াও ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার সুবিধা ভোগী কারা তাদেরকেও বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
ভাইস চ্যান্সেলর বলেন, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির মধ্যে ইস্পাত কঠিন ঐক্যের প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে। আসুন আমরা প্রাক নির্বাচনকালে আরো ঐক্যবদ্ধ হই এবং ব্যালটের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের শক্তির জয় নিশ্চিত করি।
আলোচনা সভা পরিচালনা করেন তথ্য, প্রকাশনা ও জনসংযোগ অফিসের উপ-পরিচালক রাজিবুল ইসলাম। সভার পূর্বে প্রশাসন ভবন চত্বর হতে এক প্রতিবাদ র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি ক্যাম্পাসের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে প্রশাসন ভবনের সামনে সমবেত হয়।
অনুষ্ঠানে ২১ আগস্ট নিহতদের স্মরণে ১মিনিট নিরবতা পালন এবং তাঁদের আত্মার শান্তি কামনায় দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
কেআই/এসি
আরও পড়ুন