রিজার্ভ চুরিতে আমাকে দাবার গুটি বানানো হয়েছে : দেগিতো
প্রকাশিত : ২০:৩৩, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ | আপডেট: ১৬:৫৮, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭
বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরির একটি মামলায় ফিলিপাইনের রিজল কমার্সিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের (আরসিবিসি) সাবেক কর্মকর্তা মায়া সান্তোস দেগিতোকে একাই বিচারের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। মামলায় শুধু তাকেই বিচারের মুখোমুখি করা প্রসঙ্গে সম্প্রতি সংবাদমাধ্যম ইনকোয়ারারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে দেগিতো বলেন, এই ঘটনার হোতাদের বাদ দিয়ে তাকে দাবার গুটি বানানো হয়েছে।
তবে ইনকোয়ারারের প্রতিবেদনে মুদ্রাপাচারের এই ঘটনায় দেগিতোর সঙ্গে অভিযুক্ত বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠান ফিলরেমের তিন নির্বাহীকে বাদ দিয়ে দেশটির বিচার বিভাগ অভিযোগপত্র দিয়েছে বলেও উল্লেখ করেছে।
গত বছর ফেব্রুয়ারির শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে গচ্ছিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ থেকে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার সরিয়ে ফিলিপাইনের রিজল ব্যাংকের মাকাতি শহর শাখায় নেওয়া হয়।
বিশ্বজুড়ে আন্তঃব্যাংক মুদ্রা লেনদেনের মাধ্যম সুইফট মেসেজিং সিস্টেমে জালিয়াতির মাধ্যমে চুরি করা রিজার্ভের ওই অর্থের একাংশ ব্যাংক থেকে ছাড় হয়ে জুয়ার টেবিলে চলে যায়। সে সময় ওই শাখার ব্যবস্থাপক ছিলেন দেগিতো।
ইনকোয়ারারকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে দেগিতো বলেন, এই ঘটনায় শুধুমাত্র তাকেই ফাঁসানো হচ্ছে। ঘটনার হোতাদের বাদ দিয়ে তাকে দাবার গুটি বানানো হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমার পক্ষে কোনো প্রভাবশালী নেই। তাই এখন যা ঘটছে, এটি খুবই প্রত্যাশিত। তবে এটা আমার জন্য খুব দুঃখজনক।’
দেগিতো বলেন, মাকাতি শহরের আদালত থেকে অর্থ পাচারের মামলায় তিনি জামিন পাওয়ার চেষ্টা করছেন। বিচারের মুখোমুখি হতে সমন পাওয়ার পর আইনজীবীও নিয়োগ দিয়েছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে চুরি হওয়া অর্থের বড় অংশটি ফিলিপাইন গেলেও বাকি ২ কোটি ডলার যায় শ্রীলঙ্কায়, যা পরে উদ্ধার হয়েছে। তবে ফিলিপাইনে চলে যাওয়া অর্থের বেশিরভাগই এখনও উদ্ধার হয়নি।
ফিলিপাইনের মাকাতি শহরের আরসিবিসি শাখার মাধ্যমে ওই অর্থ ফিলিপাইনে আসার পর তা মুদ্রা লেনদেনকারী ফিলরেম নামের এক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে চলে যায় তিনটি ক্যাসিনোর কাছে।
এভাবে হাতবদল হয়ে সবশেষে ফিলরেমের মাধ্যমে ওই ৮ কোটি ডলার ফিলিপাইন থেকে আবার অন্য দেশে পাচার হয়ে যায়। এতে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ ওই ব্যাংকটির তৎকালীন শাখা ব্যবস্থাপক দেগিতোকে বরখাস্ত করা হয়। গত বছরের আগস্টে ফিলিপিন্স সরকার তাকে গ্রেপ্তারও করে।
দেগিতো বরাবরই অর্থ পাচারের ঘটনার সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে দাবি করেছেন, আরসিবিসির উঁচু পর্যায়ের নির্দেশে তাকে কিছু কাজ করতে হয়েছে। আরসিবিসির চাকরি হারানোর পর এখন তিনি বেকার।
এদিকে ফিলিপাইন থেকে অর্থ পুনরুদ্ধারের বিষয়ে আলোচনা করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের দুই সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল গত মঙ্গলবার ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলায় গেছে। প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।
আরকে/ডব্লিউএন
আরও পড়ুন