রোজা এবাদতের দরজা ও ঢাল
প্রকাশিত : ২০:৩২, ২৯ এপ্রিল ২০১৮ | আপডেট: ১১:০২, ৩০ এপ্রিল ২০১৮
রোজা রাখার অর্থ কয়েকটি বিষয় থেকে বিরত থাকা এবং কয়েকটি বিষয় অর্জন করা। এটি অভ্যন্তরীণ কাজ। এতে এমন কোনো আমল নেই, যা চোখে দেখা যায়। অন্যান্য এবাদত মানুষের দৃষ্টিতে থাকে। কিন্তু রোযা আল্লাহ ব্যতীত কেউ দেখে না। রোযা আল্লাহ তায়ালার শত্রুর উপর চাপ সৃষ্টি করে এবং প্রবল হয়। কেননা, কামনা-বাসনা হচ্ছে শয়তানের ওসিলা বা হাতিয়ার, যা পানাহারের মাধ্যমে শক্তিশালী হয়।
এ কারণেই রসূলুল্লাহ (সা:) শয়তান মানুষের ধমনীতে (রক্ত চলার পথে) বিচরণ করে। সুতরাং ক্ষুধা তৃষ্ণা দ্বারা তার পথসমূহ সংকীর্ণ করে দেয়। এদিকে লক্ষ্য করে রসূলে পাক (সা:) হযরাত আয়েশা (রা) কে বলেছিলেন- সর্বদা জান্নাতের দরজা খটখটাও।
আরজ করা হলো- কিসের মাধ্যমে? তিনি বললেন-ক্ষুধার মাধ্যমে। যেহেতু রোযা বিশেষভাবে শয়তানের মূলোৎপাটন করে, তার চলার পথ রুদ্ধ এবং সংকীর্ণ করে, তাই রোযা বিশেষভাবে আল্লাহর সাথে সম্পর্কযুক্ত হওয়ার যোগ্য হয়েছে। কেনান, শয়তানের মূলোৎপাটনে আল্লাহ সাহায্য করেন। বান্দাকে সাহায্য করা নির্ভর করে বান্দার পক্ষে থেকে আল্লাহকে সাহায্য করার উপর।
আল্লাহ তায়ালা বলেন, যদি তোমরা আল্লাহকে সাহায্য কর, তবে আল্লাহ তোমাদেরকে সাহায্য করবেন এবং তোমাদের পদযুগল সুদৃঢ় রাখবেন।
মোট কথা, চেষ্টা শুরু করা বান্দার পক্ষ থেকে এবং বিনিময়ে হেদায়েত তথা সৎপথে প্রদর্শন আল্লাহর পক্ষ থেকে হবে।যেমন আল্লাহ বলেন, যারা আমার পথে অধ্যবসায় করে, আমি অবশ্যই তাদেরকে আমার পথ প্রদর্শন করি।
আল্লাহ তায়ালা আরোও বলেন, আল্লাহ কোনো জাতির অবস্থা পরিবর্তন করেন না যতক্ষণ তারা নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন না করে।পরিবর্তনের জন্যে কামনা-বাসনাকে চূর্ণ বিচূর্ণ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে। কেননা, কামনা বাসনা শয়তানের বিচরণ ক্ষেত্র।
যে পর্যন্ত এই বিচরণ ক্ষেত্র সবুজ শ্যামল থাকবে, শয়তানের বিচরণ বন্ধ হবে না। বিচরণ বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত আল্লাহর প্রতাপ বান্দার কাছে প্রকাশ পাবে না এবং দীদারের পথে পর্দা পড়ে থাকবে। রাসূল (সা:) বলেন, যদি মানুষের অন্তরে শয়তানের যাতায়াত না থাকত, তবে মানুষ ঊর্ধ্বজগত নিরীক্ষণ করতে সক্ষম হতো। এদিক দিয়ে রোযা এবাদতসমূহের দরজা ও ঢাল।
[ইমাম গাযযালী (রহ:) এর এহইয়াউ উলুমিদ্দীন গ্রন্থ থেকে সংগৃহীত]
এমএইচ/টিকে