রোজায় যেমন গরম থাকবে জানাল আবহাওয়া
প্রকাশিত : ১৭:২২, ১ মার্চ ২০২৫

রোববার (০২ মার্চ) থেকে মুসলমানদের ধর্মীয় ইবাদতের মাস মাহে রমজান শুরু হচ্ছে। এই পবিত্র মাসে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা রোজা রেখে ইবাদতের মাধ্যমে সৃষ্টিকর্তাকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করেন।
এদিকে চলতি বছরের রোজা শুরু হচ্ছে মার্চ মাসে। বাংলাদেশের আবহাওয়া আনুযায়ী মার্চ মাস থেকেই গরম শুরু হয়। তাই এবারের রোজায় সকলের আগ্রহের বিষয় রোজায় গরম কেমন হবে?
মার্চ মাস নিয়ে বেসরকারি আবহাওয়া সংস্থা বাংলাদেশ ওয়েদার অবজারভেশন টিম (বিডব্লিউওটি) জানিয়েছে, চলতি বছর মার্চ মাসে দেশের গড় তাপমাত্রা কিছুটা বেশি থাকতে পারে ও বৃষ্টির পরিমাণ স্বাভাবিক হতে কিছুটা কম থাকতে পারে। এই মাসে বঙ্গপোসাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হতে পারে। তবে তা বাংলাদেশে আঘাত হানার সম্ভাবনা নেই।
বিশেষজ্ঞরা জানান, গত কয়েক দশকের তুলনায় এখন উত্তপ্ত বৈশ্বিক তাপমাত্রা। যার প্রভাব টের পাওয়া যায় গ্রীষ্মের শুরুতেই। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাবে খরতাপে এবারও পুড়বে দেশের সমগ্র অঞ্চল। গত বছর খরতাপে বাংলাদেশে বিরাজ করেছিল টানা এক মাসের দাবদাহ। তাপমাত্রা ছাড়িয়েছিল ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কাজেই গরমের প্রথম মাসে শুরু হতে যাওয়া রমজান মাসেও আবহাওয়া নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে সবাইকে। এই মার্চ মাসে গরমের সাথে কাল বৈশাখি ঝড়, শিলা বৃষ্টি ও ঘূর্ণিঝড় হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। এপ্রিল মাস উষ্ণতম হওয়ায় মার্চ মাসের গরমটা বেশিই হয়ে থাকে বলেও জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।
বিডব্লিউওটি জানায়, মার্চ মাসের প্রথম ১০ দিনের ৪, ৬ ও ৭ মার্চ দেশের আকাশ অনেক স্থানে আংশিক মেঘলা থেকে মেঘলা থাকতে পারে। মার্চের ৪ তারিখে রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা বিভাগের কিছু কিছু এলাকায় ও দেশের অন্যত্র সামান্য কিছু এলাকায় আকস্মিকভাবে কিছুটা বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। অপরদিকে, আকস্মিকভাবে ৬ ও ৭ মার্চ খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে । ৪ মার্চ রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের পশ্চিম অঞ্চলে এবং ৬ ও ৭ মার্চ খুলনা বিভাগের কিছু এলাকায় বজ্রপাত হতে পারে। ৪ মার্চ রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কুষ্টিয়া ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এই সপ্তাহে দেশের আবহাওয়া বেশ চরমভাবাপন্ন থাকতে পারে, মানে দিনে গরম আর রাতে শীত থাকতে পারে।
রমজান মাসের আবহাওয়া প্রসঙ্গে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম বলেন, মার্চ, এপ্রিল ও মে এই তিন মাস হচ্ছে আমাদের কালবৈশাখীর সময়। মার্চ মাসের গরমটা এপ্রিলের গরমের কাছাকাছি বলা যায়। এপ্রিল যেহেতু আমাদের উষ্ণতম মাস, সেহেতু মার্চ মাসে গরমটা বেশিই হয়। তবে এপ্রিলে সবচেয়ে বেশি গরম থাকে। মার্চ থেকে গরমটা শুরু হয় বেশি। এপ্রিলে গিয়ে চূড়ায় পৌঁছায় এবং মে মাস থেকে তাপমাত্রা কমা শুরু হয়। আর জুন থেকে বর্ষাকাল শুরু হয়। মার্চ মাসে যেহেতু গরম থাকবে সুতরাং রমজানটা আমাদের সেভাবেই পালন করতে হবে।
আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম বলেন, মার্চ মাসে যা বৃষ্টিপাত হবে সেটা হবে কাল বৈশাখি ঝড়ের মধ্যে। এই সময়ে অঝোর ধারায় বৃষ্টি সম্ভবই না। এটাই হলো ক্লাইমেট। শুধু কাল বৈশাখীর ঝড়ের সময় বৃষ্টি হবে। কাল বৈশাখী ঝড়ও যে আবার প্রত্যেকদিন হবে সেটারও কোনো গ্যারান্টি নেই। হয়তো সপ্তাহে কোনো এক জায়গায় একবার হতে পারে। আবার দুই-তিনটা জোনেও হতে পারে। আবারও কিছু জায়গা ঝড়-বৃষ্টি পাবেই না। যেমন অন্য জায়গায় ঝড়-বৃষ্টি হলেও নাটোরে হবে না। এরকম গ্যাপ পড়তে পারে। কালবৈশাখী ঝড়-বৃষ্টি হলে সব জায়গায় প্রভাব পড়ে না। এই বৃষ্টি হলে সুবিধা হচ্ছে, যখনই বৃষ্টিপাত হয়, তখন বজ্রপাত হয়, বাতাস থাকে এবং যেই জায়গায় ঝড়-বৃষ্টি হবে সেখানে তাপমাত্রা কমে আসে। এ ছাড়া কাল বৈশাখী ঝড় হলে শিলা বৃষ্টি ও বজ্রপাত হয়ে থাকে। তবে সব কাল বৈশাখী ঝড়-বৃষ্টিতে শিলা বৃষ্টি হয় না।
এসএস//
আরও পড়ুন